এক ভোট পেয়েও সাতবারের এমপি প্রার্থী সুধীর

সিলেটের সময় ডেস্ক :

 

সত্তোরোর্ধ বয়সী সুধীর রঞ্জন বিশ্বাস ইতিপূর্বে পর পর ছয়বার এমপি প্রার্থী হয়েছেন। প্রতিটি নির্বাচনে নিজের ভোটটি ছাড়া অন্য কারো ভোট পাননি তিনি। কেবল নিজেকেই নিজের ভোটটা দেন। এলাকায় আলোচিত এ প্রার্থীর পরিচিতি ‘এক ভোটের এমপি’ ।

 

নির্বাচন পাগল এই প্রবীণের এতে কোনো খেদ নেই। লোকে তাকে পাগল সুধীর বললেও তিনি কারো কথায় কর্ণপাত করেন না। এবারও তিনি এমপি পদে দাঁড়িয়েছেন। এ নিয়ে তিনি সাতবারের এমপি প্রার্থী হলেন।
পিরোজপুর-৩ ( মঠবাড়িয়া) একক আসনে গত ছয়বার সংসদ নির্বাচনে আলোচিত প্রার্থী সুধীর রঞ্জন। সুধীর রঞ্জন মঠবাড়িয়া উপজেলার দাউখালী ইউনিয়নের গিলাবাদ গ্রামের মৃত যোগেশ চন্দ্র বিশ্বাসের ছেলে। তাঁর বাবা ১৯২৭ সালে ব্রিটিশ জমিদারদের হাওলাদার ছিলেন। তিনি এলাকায় ৬৩ নম্বর দেবত্র–গিলাবাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করেন।

তিন ছেলে এক মেয়ের জনক সুধীর রঞ্জন এখন একাই গ্রামের বাড়িতে বসবাস করেন। চার সন্তানের কেউ গ্রামের বাড়িতে থাকেন না। তাঁর স্ত্রী ৩০ বছর আগে মারা গেছেন। তিনি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য ছিলেন। এরপর থেকে সুধীর রঞ্জন নির্বাচনের প্রতি আগ্রহী হন।

এবার দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পিরোজপুর-৩ (মঠবাড়িয়া) আসনে সপ্তমবারের মতো মনোনয়ন পত্র জমা দিয়েছেন সুধীর বিশ্বাস। ছয়টি নির্বাচনে শুধু নিজের এক ভোট পেয়ে জামানত বাজেয়াপ্ত হওয়ার পরও মনোয়নয়নপত্র দাখিল করেছেন। সুধীর রঞ্জন বিশ্বাস উপজেলা সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবদুল কাউয়ূম এর কাছে মনোনয়ন পত্র জমা দেওয়ার পর থেকেই আলোচনার শুরু হয়েছে। কখনো নিজের ভোটটি ছাড়া প্রস্তাবকারী ও সমর্থনকারীদের ভোটও পাননি সুধীর বিশ্বাস।

সুধীর রঞ্জন বিশ্বাস জানান, ৩০ বছর আগে স্ত্রী অঞ্জলী রানী বিশ্বাস ইউপি সদস পদে নির্বাচনে হেরে মারা যান। সে মারা যাবার পর থেকেই তাঁর আত্মার সন্তুষ্টির জন্যই নির্বাচন করে আসছেন।

নিজেকে একজন গ্রাম্য চিকিৎসক পরিচয় দিয়ে সুধীর বলেন, রোগীদের চিকিৎসাপত্র দিয়ে জমিয়ে রাখা টাকা দিয়ে এবছর মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। মুক্তিযুদ্ধে পল্লী চিকিৎসক হিসেবে তিনি মুক্তিযোদ্ধা ও গ্রামবাসীর সেবা করেছেন।

সুধীর রঞ্জন বিশ্বাসের বড় ভাইয়ের ছেলে রতন বিশ্বাস বলেন, প্রতিটা মানুষের নির্বাচনে দাঁড়ানোর অধিকার আছে। উনি (সুধীর) ভোটে হেরে একধরনের সুখ পান। কাকার এই নির্বাচন পাগলামির বিষয়ে আমরা কিছুই বলি না। কারণ উনি সহজ মানুষ। কত দিন আর বেঁচে থাকবেন।

দাউদখালী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ফজলুল হক খান বলেন, ‘সুধীর রঞ্জন আমার ইউনিয়নের বাসিন্দা। প্রতিবার সংসদ নির্বাচনে তিনি প্রার্থী হয়ে আলোচনার সৃষ্টি করেন।’

এ বিভাগের অন্যান্য