সরকারের আশ্বাসে নির্বাচনে এলেন বহিষ্কৃত বিএনপি নেতা একরামুজ্জামান
সরকার সুষ্ঠু ভোট করবে- এমন আশ্বাসে উদ্বুদ্ধ হয়েছেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পদ থেকে বহিষ্কৃত সৈয়দ এ কে একরামুজ্জামান। আজ মঙ্গলবার বিকেলে কালের কণ্ঠকে এমনটাই জানিয়েছেন তিনি। সৈয়দ এ কে একরামুজ্জামান ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১ (নাসিরনগর) আসন থেকে স্বতন্ত্র পদে নির্বাচনে লড়বেন।
একটি বিস্ফোরক মামলায় গতকাল সোমবার ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আদালত থেকে জামিন নেওয়ার পর তাঁর পক্ষে মনোনয়নপত্র কেনা হয়।
এদিকে দলের শীর্ষ পর্যায়ের নেতার এমন কাণ্ডে বিব্রত জেলা ও উপজেলা বিএনপি। তাঁকে সুযোগসন্ধানী হিসেবে আখ্যায়িত করে তীব্র সমালোচনা করেছেন দলের স্থানীয় নেতারা।
সৈয়দ একরামুজ্জামান কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘নির্বাচন করার বিষয়টি আমার ব্যক্তিগত অভিমত। আর দল যেটা করেছে সেটা তো করবেই। কেউ দলের সিদ্ধান্তের বাইরে গেলে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়াটাই স্বাভাবিক।
এ বিষয়ে নাসিরনগর উপজেলা বিএনপির সভাপতি মো. আব্দুল হান্নান বলেন, ‘একরামুজ্জামান একজন সুযোগসন্ধানী মানুষ। এর আগেও তিনি একবার বঙ্গবন্ধু পরিষদে যোগ দিয়েছিলেন। ওনার পক্ষে অনেক কিছু করা সম্ভব। ওনার এমন কাণ্ডে দলে কোনো প্রভাব পড়বে না।’
জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান কমিটির সদস্য মো. জহিরুল হক খোকন সাংবাদিকদের বলেন, ‘দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে তিনি প্রার্থী হয়েছেন। দল তাঁকে বহিষ্কার করেছে। দলের কোনো নেতাকর্মী তাঁর পক্ষ হয়ে কাজ করবে না।’
গত ২ নভেম্বর ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর থানায় দায়ের হওয়া বিস্ফোরক মামলায় একরামুজ্জামানকে আসামি করা হয়। সোমবার দুপুর ১২টার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে উপস্থিত হয়ে ওই মামলায় জামিন পান তিনি। তিন ঘণ্টার ব্যবধানে তিনি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১ (নাসিরনগর) আসনের জন্য নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেন।
একরামুজ্জামান নির্বাচনে অংশ নিলে নাসিরনগরের ভোটের মাঠের চিত্র বদলে যাবে বলে স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়। একরামুজ্জামান এর আগে বিএনপির মনোনয়ন নিয়ে ওই আসন থেকে নির্বাচনে লড়েন। তিনি শিল্পপতি ও বিশিষ্ট ব্যবসায়ী, এলাকায়ও তাঁর গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১ আসনে বর্তমান সংসদ সদস্য হলেন আওয়ামী লীগের বি এম ফরহাদ হোসেন। এবারও তিনি আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন পেয়েছেন। দলীয় নমনীয়তার কারণে এ আসন থেকে একাধিক আওয়ামী লীগ নেতা দলটির বিদ্রোহী হিসেবে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে লড়ার আভাস পাওয়া গেছে। এ ক্ষেত্রে একরামুজ্জামানও ভোটে লড়লে নির্বাচনী মাঠ বেশ জমে উঠবে বলে মনে করছেন স্থানীয় রাজনীতিবিদরা।
এ আসন থেকে পাঁচবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন সাবেক প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী প্রয়াত ছায়েদুল হক। তাঁর মৃত্যুর পর এ উপজেলায় আওয়ামী লীগের অবস্থান কিছুটা নড়বড়ে হয়। এবার আসনটিতে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন ১৩ জন।