মাধবপুরে দুই যুগ ধরে ভাঙ্গা ঘরে মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের বসবাস

সিলেটের সময় ডেস্ক :

 

হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার রসুলপুর গ্রামের প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধা শাহরাজ মিয়ার পরিবার দুই যুগ ধরে ইটাখোলা রেলস্টেশনের পরিত্যক্ত জায়গায় বাস করে আসছে। সরকারিভাবে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে আবাসন বরাদ্দের ২১ মাস পেরিয়ে গেলেও এখনও ঘর নির্মাণ করা হয়নি। এ অবস্থায় প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধা শাহরাজ মিয়ার স্ত্রী সুফিয়া খাতুন এক ছেলে ও চার নাতনিকে নিয়ে বাস করছেন রেলওয়ের জায়গায় নির্মিত একটি ভাঙা ঘরে। আট বছর আগে বীর মুক্তিযোদ্ধা শাহরাজ মিয়া মারা যান।

তিনি নিজের জন্য একটি সরকারি ঘর দেখে যেতে পারেননি। এখন ভূমি জটিলতায় নতুন ঘর নির্মাণ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। এতে তাঁর পরিবার মাথা গোঁজার ঠাঁই পাবে কিনা সেটিও অনিশ্চিত। মঙ্গলবার ইটাখোলা রেলস্টেশনের দক্ষিণ পাশে কথা হয় প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী সুফিয়া বেগমের সঙ্গে। তিনি বলেন, শাহরাজ মিয়া প্রায় ২৪ বছর ইটাখোলা রেলস্টেশনের সরকারি জায়গায় অসচ্ছল অবস্থায় জীবন কাটিয়েছেন। তাদের নিজস্ব কোনো জমি ছিল না। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় সাড়ে ১৪ লাখ টাকা ব্যয়ে তাদের নামে রসুলপুর খাস ভূমিতে একটি ঘর বরাদ্দ দিয়েছিল। কিন্তু জায়গাটি যোগাযোগবিচ্ছিন্ন ও পাহাড়ি অঞ্চল হওয়ায় ঠিকাদার ওই জায়গায় ঘর নির্মাণ করতে রাজি হননি।

এখন রেলস্টেশনের পাশে নিজেদের টাকায় তিন শতক জমি কিনেছেন। ওই জায়গায় সরকারি বরাদ্দের ঘরটি তৈরি করে দিলে পরিবার-পরিজন নিয়ে জীবনের শেষ সময়টা কাটাতে পারতেন সুফিয়া বেগম। অনুমোদন জটিলতায় নিজস্ব ওই জমিতেও ঘর নির্মাণে সমস্যা দেখা দিয়েছে। মাধবপুর প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আল মামুন নুর জানান, বীর মুক্তিযোদ্ধা শাহরাজ মিয়ার নামে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় রসুলপুর এলাকায় ঘর নির্মাণের অনুমোদন দিয়েছিল। বিভিন্ন জটিলতায় ওই জায়গায় যথাসময়ে ঘর নির্মাণ করা সম্ভব হয়নি। এখন তাদের কেনা জমিতে ঘর নির্মাণ করতে গেলে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে নতুন করে অনুমোদন নিতে হবে। এ কারণে এখনই সেখানে ঘর নির্মাণ সম্ভব হচ্ছে না। মাধবপুর মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ডেপুটি কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা এনাম খাঁ জানান, বীর মুক্তিযোদ্ধা শাহরাজ মিয়ার বীরনিবাস এখনও শুরু হয়নি। রসুলপুরের সরকারি জায়গায় তাঁর নামে ৩০ শতক জমি বরাদ্দ দেওয়া হলেও সেখানে ঘর নির্মাণ হয়নি। পরিবারটি খুব কষ্টে দিন যাপন করছে। মাধবপুর নির্বাহী কর্মকর্তা মনজুর আহসান জানান, প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধা শাহরাজ মিয়ার বীরনিবাস নির্মাণে উপজেলা প্রশাসন সহায়তা করবে।

এ বিভাগের অন্যান্য