বাবাকে ১০ টুকরো করা ছেলে গ্রেপ্তার, মাথার খোঁজে পিবিআই

সিলেটের সময় ডেস্ক :

 

চট্টগ্রামে চাঞ্চল্যকর মোহাম্মদ হাসান হত্যার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে তার ছোট ছেলে শফিকুর রহমান ওরফে জাহাঙ্গীরকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। গতকাল শুক্রবার রাতে ঢাকার হাজারীবাগ এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে আজ শনিবার চট্টগ্রামে আনার পর তার বাবার খণ্ডিত মাথা উদ্ধারে পতেঙ্গা সমুদ্রসৈকতে অভিযান পরিচালনা করে পিবিআই সদস্যারা। কিন্তু আজও মাথা খুঁজে পাওয়া যায়নি।

জানা গেছে, বেলা তিনটার দিকে তল্লাশি কার্যক্রম শেষ করে পিবিআই।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রো পরিদর্শক ইলিয়াস খান গণমাধ্যমকে বলেন, ‘নিহত হাসান আলীর ছোট ছেলে শফিকুর রহমানকে ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার করে তল্লাশি চালানো হয়েছে। তল্লাশি শেষে তাকে আদালতে সোপর্দ করা হয়।’

ইলিয়াস খান বলেন, ‘এর আগে শফিকুর রহমানের স্ত্রী আনারকলিকে নিয়ে তল্লাশি চালানো হয়। আনারকলি ঘটনার সঙ্গে সরাসরি জড়িত নন। তবে স্বামীর নির্দেশে আলামত গোপনের সঙ্গে জড়িত। ঘটনার পরদিন আনারকলি ও তার স্বামী পতেঙ্গা সৈকতে গিয়ে পাথরের ব্লকের ভেতর শ্বশুরের মাথাটি ফেলে দেন বলে রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছেন। পরে তাকে নিয়ে সেখানে তল্লাশি চালানো হয়।’

তদন্ত কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘শ্বশুরের লাশ কাটার জন্য ধামা, কাটা টুকরাগুলো মোড়ানোর জন্য প্লাস্টিকের ব্যাগ ও টেপ কিনে এনেছিলেন আনারকলি।’

২১ সেপ্টেম্বর রাতে নগরের পতেঙ্গা থানার ১২ নম্বর ঘাট এলাকায় খালের কাছ থেকে একটি লাগেজ উদ্ধার করে পুলিশ। এর ভেতরে মানুষের হাত ও পায়ের আটটি টুকরা পাওয়া যায়। উদ্ধার হওয়া আঙুলের ছাপ নিয়ে মরদেহের পরিচয় শনাক্ত করা হয়। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে পতেঙ্গা থানায় হত্যা মামলা করে।

গত ২৩ সেপ্টেম্বর সকালে নগরের ইপিজেড থানার আকমল আলী রোড এলাকার একটি ভাড়াবাসায় অভিযান চালিয়ে পুলিশ হাসান আলীর স্ত্রী ছেনোয়ারা বেগম ও বড় ছেলে মোস্তাফিজুর রহমানকে গ্রেপ্তার করে। পরে গ্রেপ্তার করা হয় শফিকুর রহমান ওরফে জাহাঙ্গীরের স্ত্রী আনারকলিকে। এ ছাড়া তাদের বাসার পাশের একটি ডোবা থেকে লাশের আরও দুটি অংশ উদ্ধার করা হয়। কিন্তু মাথা পাওয়া যায়নি। এ কারণে ২ অক্টোবর পুত্রবধূ আনারকলিকে নিয়ে পতেঙ্গা সৈকতে তল্লাশি চালানো হয়।

২৮ বছর পর বাড়িতে ফিরে আসা হাসান তার ভিটেবাড়ি বিক্রি করে দেওয়ার চেষ্টা চালানোয় ক্ষুব্ধ হয়ে দুই ছেলে তাকে গলায় গামছা পেঁচিয়ে খুন করেন। বাসায় তখন মা ও ছোট ভাইয়ের স্ত্রী ছিলেন। সেদিন বাবার লাশটি বস্তায় ভরে বাসার খাটের নিচে রেখে দেন। পরে টুকরা করে বস্তা ও লাগেজে ভরে দূরে ফেলে দেন। লাগেজটি ফেলেন পতেঙ্গা ১২ নম্বর ঘাটে আর বস্তাটি বাসার পাশে একটি ডোবায় ফেলে দেন। আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে বড় ছেলে মোস্তাফিজুর রহমান বাবাকে খুনের বর্ণনা দেন এভাবে।

এ বিভাগের অন্যান্য