ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের অবনতির মধ্যেই যে কারণে কানাডার ওপর ভীষণ চটেছে রাশিয়া

আন্তর্জাতিক  ডেস্ক :

 

সম্প্রতি ভারতের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্কের চরম অবনতি হয়েছে উত্তর আমেরিকার দেশ কানাডার। স্বাধীন খালিস্তান আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত এক কানাডিয়ান শিখ নেতাকে হত্যাকাণ্ডে ভারত জড়িত- এমন অভিযোগ আনায় দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কের এই অবনতি হয়। বিষয়টি নিয়ে এরই মধ্যে পাল্টাপাল্টি ব্যবস্থাও নিয়েছে উভয় দেশ। আপাত দৃষ্টিতে কেউ কাউকে ছাড় দিচ্ছে না।

এর মধ্যেই আমেরিকা ঘনিষ্ঠ মিত্র কানাডার ওপর ভীষণ চটে গেল ইউক্রেনে সামরিক অভিযান চালানো রাশিয়া। মূলত কানাডার পার্লামেন্টে এক নাৎসি সৈনিককে দাঁড়িয়ে সম্মান জানানোর ঘটনায় দেশটির ওপর চটেছে রুশ কর্তৃপক্ষ।
জানা গেছে, অটোয়ায় নিযুক্ত রুশ রাষ্ট্রদূত ওলেগ স্টেপানোভ বলেছেন, এক নাৎসি সেনাকে এভাবে পার্লামেন্টে দাঁড়িয়ে অভিবাদন দেওয়ার জন্য রাশিয়া কানাডার কাছে ব্যাখ্যা চাইবে।

৯৮ বছর বয়স্ক ইয়ারোস্লাভ হুনকা নাৎসি বাহিনীর কুখ্যাত এসএস ব্রিগেডের সদস্য ছিলেন।

গত সপ্তাহে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি কানাডার সংসদে ভাষণ দেন। এ সময় সেখানে নিয়ে আসা হয় হুনকাকে। সংসদে দাঁড়িয়ে ওই নাৎসি সৈনিককে সর্বোচ্চ সম্মান দেখান কানাডার প্রেসিডেন্ট জাস্টিন ট্রুডো, স্পিকার অ্যান্থনি রোটাসহ উপস্থিত কানাডীয় সংসদ সদস্যরা।

গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এমন এক কুখ্যাত বাহিনীর সদস্যকে সম্মান জানানোর জন্য ক্ষমা চেয়েছেন কানাডার স্পিকার।

তবে ট্রুডো এখনও বিষয়টি নিয়ে নীরব।ইয়ারোস্লাভ হুনকার ইউনিটটি তাদের নৃশংসতার জন্য পরিচিত। পোলিশ, ইহুদি এবং রাশিয়ান বেসামরিক নাগরিকদের বিরুদ্ধে নৃশংসা হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছিল এই ইউনিটটি। সোমবার রুশ রাষ্ট্রদূত বলেন, রাশিয়ান দূতাবাস কানাডিয়ান সরকারের কাছে এর একটি ব্যাখ্যা দাবি করবে।

রাশিয়ার এই কূটনৈতিক বার্তা কানাডার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়েও পাঠানো হবে।

 

এদিকে নাৎসি সৈনিককে এভাবে সম্মান জানানোয় রাশিয়া ছাড়াও বিশ্বের নানা সংস্থার পক্ষ থেকে উদ্বেগ জানানো হয়েছে। ইহুদি মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলো এর তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। তারা কানাডার সংসদকে এ জন্য ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।

কানাডার হাউজ অব কমনসের স্পিকার অ্যান্থনি রোটা বলেন, সংসদে ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্টের বক্তৃতার পর গ্যালারিতে বসে থাকা ওই ব্যক্তির প্রতি সম্মান জানানো হয়। এ ভুলের দায়িত্ব আমি একাই নিচ্ছি। আমি ক্ষমা চাইছি, যা করেছি তা ঠিক হয়নি।
উল্লেখ্য, নাৎসিবাদ ইস্যুকে ঐতিহাসিকভাবেই অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে নেয় রাশিয়া। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে নাৎসি জার্মানিকে পরাজিত করতে প্রাণ দিয়েছিলেন সোভিয়েত ইউনিয়নের কোটি কোটি মানুষ। গত বছর ইউক্রেনে রাশিয়া যে সামরিক অভিযান শুরু করেছে, তার অন্যতম প্রধান উদ্দেশ্য ছিল ইউক্রেনকে ‘নাৎসিমুক্ত’ করা।

সূত্র: আরটিসিবিসি নিউজবিবিসিরয়টার্সআল জাজিরা

এ বিভাগের অন্যান্য