আত্মবিশ্বাস থাকলে তিনি বিবৃতি ভিক্ষা করে বেড়াতেন না
সিলেটের সময় ডেস্ক :
নোবেলজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে হয়রানি বন্ধ এবং বাংলাদেশে সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন চেয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে খোলা চিঠি দিয়েছেন ১০০ নোবেলজয়ীসহ ১৬০ জন বিশ্বনেতা। গতকাল সোমবার চিঠিটি দেন তারা।
দক্ষিণ আফ্রিকায় জোহানেসবার্গে ব্রিকস সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সফর নিয়ে আজ মঙ্গলবার গণভবনে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এ সময় প্রধানমন্ত্রীর কাছে এক সংবাদকর্মী জানতে চান, ড. ইউনূসের বিচার স্থগিত করার কোনো এখতিয়ার তার আছে কি না। উত্তরে ড. ইউনূস প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমার অবাক লাগছে, ভদ্রলোকের (ড. ইউনূস) যদি এতই আত্মবিশ্বাস থাকত, যে তিনি কোনো অপরাধ করেননি—তাহলে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বিবৃতি ভিক্ষা করে বেড়াতেন না।’
সরকারপ্রধান বলেন, ‘আমাদের দেশের বিচার বিভাগ সম্পূর্ণ স্বাধীন। তাছাড়া দেশের সবকিছু একটা আইন মতো চলে। কেউ যদি ট্যাক্স না দেয় এবং শ্রমিকের অর্থ আত্মসাৎ করে, আর শ্রমিকের পক্ষ থেকে যদি মামলা করা হয় লেবার কোর্টে, সেখানে কি আমাদের সেই হাত আছে যে, আমরা মামলা বন্ধ করে দেব। আপনারাই বিচার করেন। একটা মামলা চলমান। আমাদের দেশে তো চলামান মামলা নিয়ে আলোচনাও করি না। কারণ এটা বিচারাধীন। সেখানে বাইরে থেকে বিবৃতি এনে মামলা প্রত্যাহার! আমি কে মামলা প্রত্যাহার করার? এখানে আমার কোনো অধিকার আছে, আপনারাই বলেন।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘জুডিসিয়ারি সম্পূর্ণ স্বাধীন। একটা দেশ যখন চলে এখানে জুডিসিয়ারি, লেজিসলেটিভ ও অ্যাক্সিকিউটিভ—এই তিনটা এক সঙ্গে চলে। এর একটাতেও আমার হস্তক্ষেপ করতে পারি না। যারা এই বিবৃতি দিয়েছেন, তাদের আমরা আহ্বান করি, তারা এক্সপার্ট পাঠাক। তাদের যদি এত দরদ থাকে তারা ল’ইয়ার পাঠাক এবং যার বিরুদ্ধে মামলা, তার সমস্ত দলিল দস্তাবেজ তার দেখুক। এরপর তারাই দেখুক, সেখানে কোনো অন্যায় আছে কি না, আমি তাদের সেই আহ্বান জানাচ্ছি। কিন্তু বিবৃতি দিয়ে কীভাবে একটি মামলা তোলে, তা আমি জানি না। তাদের এসে দেখা দরকার, এখানে কী কী অসামঞ্জস্যতা আছে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘লেবার “ল” নিয়ে আমাদের অনেক কথা শুনতে হয়। আমাদের নামে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে শুধু নালিশ আর নালিশ। যারা বিবৃতি দিয়েছে তাদের আহ্বান জানাই, ওখানে বসে বিবৃতি না দিয়ে তারা এক্সপার্ট পাঠাক, তাদের ক্লায়েন্টের জন্য ল’ইয়ার পাঠাক। এরপর তারা এসে দলিল দস্তাবেজ, কাগজ—সবকিছু ঘেটে দেখুক। সেখানে কোনো অন্যায় আছে, না অন্যায়ভাবে তাকে মামলা দেওয়া হয়েছে। মামলা তো আমরা করিনি। ট্যাক্স ফাঁকি দিয়ে যদি কেউ ধরা পড়ে, তাকে তো সেই ট্যাক্স ফেরত দিতে হবে। এনবিআর বলছে, প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকা উচ্চ আদালতের নির্দেশে তা স্থগিত হয়ে আছে। তো যেখানে যেখানে অর্থ সরকারের পাওনা, সেখান থেকে তো অর্থ আদায় করতেই হবে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ট্যাক্স দেওয়া সকল নাগরিকের দায়িত্ব। আমেরিকা বলেন, ইংল্যান্ড বলেন, ইউরোপ বলেন—সেখানে ট্যাক্স ফাঁকি দিলে তাদের কোলে তুলে নাচাত তাদের সরকার? একজনের জন্য এত বিবৃতি না দিয়ে তারা একজন এক্সপার্ট পাঠাক, সব কাগজ দেখুক। আমি মনে করি, তারা যদি একবার পাঠায়, তাহলে আরও অনেক কিছু বের হবে।’