কাতারে তিন প্রবাসীর ৪ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ

সিলেটের সময় ডেস্ক :

 

কাতারে তিন প্রবাসী বাংলাদেশির ৪ কোটি টাকা আত্মসাৎ করে দেশে পালিয়ে আসার অভিযোগ উঠেছে তৌহিদুল ইসলাম নামের এক প্রবাসী বাংলাদেশির বিরুদ্ধে। তিনি দেশে পালিয়ে আসায় বিপদে পড়েছেন ওই তিন বাংলাদেশি। বাংলাদেশে তৌহিদুল ইসলামের বাড়ি নোয়াখালী জেলায়।

বুধবার (২ আগস্ট) স্থানীয় সময় রাতে কাতারের রাজধানী দোহার আল মানচুরা লুলু এক্সপ্রেস বিল্ডিংয়ে তৌহিদুল ইসলামের বিচার দাবি করে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ভুক্তভোগী ওই তিন প্রবাসী বাংলাদেশি ইউনুছ হোসেন রাজিব, আবু তাইয়্যেব ও আবদুল কুদ্দুস।

অর্থ আত্মসাৎ করে কাতার থেকে দেশে পালিয়ে আসায় তৌহিদুল ইসলামের কাছ থেকে টাকা উদ্ধারে কাতারের বাংলাদেশ দূতাবাস, বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় ও নোয়াখালী পুলিশ সুপারের সহযোগিতা কামনা করেছেন ভুক্তভোগী এ তিন প্রবাসী বাংলাদেশি।

সংবাদ সম্মেলনে প্রথম ভুক্তভোগী ইউনুছ হোসেন রাজিব বলেন, তৌহিদুল ইসলাম আমার একই উপজেলা নোয়াখালীর সেনবাগে বাড়ি হওয়ায় বিশ্বাস করে ২০১৮ সাল থেকে কাতারে আমাদের কোম্পানির রিয়েল এস্টেট ব্যবসার দেখভালের দায়িত্ব দিয়েছি। কোম্পানির আর্থিক লেনদেন ও আমার কোম্পানির রিয়েল এস্টেট ব্যবসার বিভিন্ন বিল্ডিংয়ের ভাড়া সংগ্রহ দায়িত্ব দিয়েছি। ২০২২ সালে কোম্পানির তিন বছরের হিসাব চাইলে তৌহিদুল বিভিন্ন কারণ দেখিয়ে হিসাব দিতে অপারগতা জানান।

এমতাবস্থায় ২০২২ সালের ১ জুলাই বৈঠকের মাধ্যমে উপস্থিত ব্যক্তিদের সম্মুখে সর্বমোট ৪ লাখ ৮৫ হাজার ৭৩৭ কাতারি রিয়াল আমি পাওনা চাই। ১০০ টাকা মূল্যের স্ট্যাম্পে তিন মাস পরে টাকা দেবে বলে অঙ্গীকার করে তৌহিদুল।

গত এক বছর পাওনা রিয়াল না দিয়ে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী সব রিয়াল পাঠিয়ে ২৩ জুলাই কাতার থেকে দেশে পালিয়ে আসেন তৌহিদুল ইসলাম।

ভুক্তভোগী ইউনুছ হোসেন রাজিব আরও জানান, তৌহিদুল ইসলাম দেশে গিয়ে আমার পরিবারকে হুমকি ও আমি দেশে গেলে আমাকেও প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে আসছে। এমতাবস্থায় আমার পরিবারের নিরাপত্তা চেয়ে আমার বাবা হুমায়ুন কবির বাদি হয়ে ২৭ জুলাই নোয়াখালীর সেনবাগ থানায় একটি জিডি (সাধারণ ডায়রি) করেন।

ভুক্তভোগী আরও জানান, কাতারি নাগরিকের কাছ থেকে মাসিক ভাড়া হিসেবে নেওয়া বিল্ডিংয়ের ভাড়া কিছুদিনের মধ্যে পরিশোধ করতে না পারলে কাতারি নাগরিকের দেওয়া মামলায় তাকে জেলে যেতে হবে। এমতাবস্থায় তৌহিদুল ইসলামের কাছ থেকে টাকা উদ্ধারে দূতাবাস ও বাংলাদেশ সরকারের সহযোগিতা চেয়েছেন তিনি।

তৌহিদুল ইসলামের প্রতারণার শিকার আরও দুই প্রবাসী। ভুক্তভোগী আবু তাইয়্যেবের পাওনা কাতারি সাড়ে ৭ লাখ রিয়াল ও আরেক ভুক্তভোগী আবদুল কুদ্দুসের পাওনা কাতারি ৫০ হাজার রিয়াল।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ব্যবসায়ী সালাউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী, নিয়াজ কবির চৌধুরী, রেজাউল করিম মজুমদার।

এ বিষয় বাংলাদেশ দূতাবাসের দ্বিতীয় সচিব ও দূতালয় প্রধান মোহাম্মদ নাছির বলেন, ‘কাতারে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. নজরুল ইসলামকে মাধ্যম করে নোয়াখালী পুলিশ সুপার বরাবর বিচার চেয়ে আবেদন করেছেন ভুক্তভোগীরা। আমরা কাতারের বাংলাদেশ দূতাবাস থেকে নোয়াখালী পুলিশ সুপারকে আসামি তৌহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য অনুরোধ জানিয়েছি।’

এ বিভাগের অন্যান্য