সিলেটে ৬৫০ কোটি টাকায় আরেকটি ‘ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট’

নিউজ ডেস্ক: ক্রমবর্ধমান সিলেট নগরীতে পানির চাহিদাও বাড়ছে সমানতালে। কিন্তু চাহিদার সমপরিমাণ বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করতে পারছে না সিটি করপোরেশন (সিসিক)। নগরীতে প্রতিদিন প্রায় ৮ কোটি লিটার পানির চাহিদা থাকলেও সরবরাহ করা হচ্ছে সাড়ে ৪ কোটি লিটারের মতো। ফলে বিশুদ্ধ পানির তীব্র সংকট লেগেই আছে সিলেট নগরীতে। এ রকম অবস্থায় সিলেটের সারি নদীর প্রবাহ চেঙ্গেরখালে ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট বসানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সিসিক। প্ল্যান্টটির পানি শোধনের সক্ষমতা হবে ৫ কোটি লিটার। এ প্রকল্পে ব্যয় হবে সাড়ে ৬৫০ কোটি টাকা। প্রকল্পটি বর্তমানে একনেকে উপস্থাপনের অপেক্ষায় রয়েছে।

সিলেট সিটি করপোরেশনের পানি শাখা থেকে জানা গেছে, বর্তমানে নগরীতে দুটি ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট (পানি শোধনাগার) আছে। নগরীর কুশিঘাট এলাকাস্থ প্ল্যান্টটির পানি পরিশোধ সক্ষমতা দৈনিক ২ কোটি ৮০ লাখ লিটার। কিন্তু বর্তমানে এ প্ল্যান্টে ৭৭ লাখ লিটার পানি শোধন করা সম্ভব হচ্ছে। প্ল্যান্টটি অপরিকল্পিতভাবে স্থাপন করায় এ অবস্থার তৈরি হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। এদিকে নগরীর তোপখানাস্থ পানি শোধনাগারটি দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ রয়েছে। এ স্থানে ছোট পরিসরে প্রায় ২০ লাখ লিটার বিশুদ্ধ পানি উৎপাদন সক্ষমতাসম্পন্ন একটি প্ল্যান্ট বসাতে চায় সিসিক। এর বাইরে নগরীতে ৪২টি উৎপাদক নলকূপ রয়েছে; তন্মধ্যে ৩৮টি সচল।

সিসিকের পানি শাখা জানায়, বর্তমানে কুশিঘাটের পানি শোধনাগার ও উৎপাদক নলকূপ দিয়ে নগরীতে প্রায় সাড়ে ৪ কোটি লিটার পানি সরবরাহ করা সম্ভব হচ্ছে। কিন্তু ৪ কোটি লিটার পানির সংকট রয়েই যাচ্ছে। এ পরিস্থিতিতে সিলেটের জৈন্তাপুর, গোয়াইনঘাট ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা দিয়ে বয়ে যাওয়া সারি নদীর প্রবাহ চেঙ্গেরখাল থেকে নগরীতে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহের উদ্যোগ নেয় সিসিক। এ লক্ষ্যে চেঙ্গেরখালের পাশেই একটি পানি শোধনাগার স্থাপনে ‘ইন্টারন্যাশনাল ওয়াটার মডেলিং (আইডব্লিউএম)’ নামক প্রতিষ্ঠানকে দিয়ে সম্ভাব্যতা যাচাই করা হয়।

আইডব্লিউএম চেঙ্গেরখালে বছরের কোন সময় পানির গভীরতা কতোটুকু থাকে, কিভাবে সেখান থেকে পাইপের মাধ্যমে পানি নগরে আনা হবে এসব বিষয়ে সম্ভাব্যতা যাচাই করে প্রতিবেদন দেয়। পরে চেঙ্গেরখালে জায়গা নির্ধারণ করে সাড়ে ৬৫০ কোটি টাকার প্রকল্প প্রস্তাবনা (ডিপিপি) তৈরি করে মন্ত্রণালয়ে পাঠায় সিসিক। মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনের পর বর্তমানে প্রকল্পটি একনেকে উপস্থাপনের অপেক্ষায় আছে। একনেকে প্রকল্পটি পাস হলে শুরু হবে জমি অধিগ্রহণ কার্যক্রম।

এ প্রসঙ্গে সিসিকের উপসহকারী প্রকৌশলী (পানি) সুনীল মজুমদার বলেন, ‘চেঙ্গেরখালে নতুন পানি শোধনাগারের পানি শোধনের সক্ষমতা থাকবে দৈনিক ৫ কোটি লিটার।’

সিসিক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, ‘ক্রমবর্ধমান পানির চাহিদা মেটাতে চেঙ্গেরখালে পানি শোধনাগার প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। মন্ত্রণালয় প্রকল্প অনুমোদন করেছে। এখন একনেকে প্রকল্পটি পাস হলে কাজ শুরু হবে। এ শোধনাগার হয়ে গেলে বিশুদ্ধ পানির সংকট থাকবে না।

এ বিভাগের অন্যান্য