হাওরাঞ্চলে কাজ করছেন ৪ নারী ইউএনও
নিউজ ডেস্ক : হাওরাঞ্চল খ্যাত সুনামগঞ্জের মানুষের কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছেন চার নারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)। সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে যোগ দেয়ার প্রথম দিন থেকেই তারা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সাধারণ মানুষের উপকার করার। ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে নারীরা যে পিছিয়ে নেই তার যথার্থ উদাহরণ এই চার নারী সরকারি কর্মকর্তা।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, সুনামগঞ্জের ১১টি উপজেলার মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ চারটি উপজেলায় রয়েছেন নারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)। এর মধ্যে সুনামগঞ্জ সদর উপজেলায় ইয়ামিন নাহার রুমা, জামালগঞ্জ উপজেলায় প্রিয়াংকা পাল, দোয়ারাবাজার উপজেলায় সোনিয়া সুলতানা এবং জামালগঞ্জ উপজেলায় আবেদা আফসারী দায়িত্ব পালন করছেন।
সুনামগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইয়াসমিন নাহার রুমা ২০১৮ সালের ২২ অক্টোবর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তিনি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সদর উপজেলায় সৎভাবে তার দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়াও তিনি হাওরের বোরো ফসল তুলা থেকে শুরু করে বন্যা মোকাবিলায় সর্বাত্মকভাবে মানুষের পাশে থেকে কাজ করছেন।
বর্তমানে ইউএনও ইয়াসমিন নাহার রুমা ভারতে একটি প্রশিক্ষণে রয়েছেন। তার পরিবর্তে দায়িত্বে রয়েছেন সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) নুসরাত ফাতিমা।
জামালগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) প্রিয়াংকা পাল। হাওর এলাকার মধ্যে একটি অন্যতম উপজেলা হল জামালগঞ্জ। এখানে যেমন ধান চাষাবাদ হয় ঠিক তেমনি মাছেরও। তিনি এ উপজেলার উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছেন। বন্যায় জামালগঞ্জ উপজেলার অনেক মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তার উদ্যোগে প্রতিটি ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের কাছে ত্রাণ পৌঁছে দেয়া হয়েছে। তাছাড়া সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে কাজ করে যাচ্ছেন এই নারী ইউএনও।
জামালগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) প্রিয়াংকা পাল বলেন, আমি জামালগঞ্জে ৩১ মার্চ ২০১৯ যোগদান করেছি। যোগদানের পর থেকেই এই উপজেলার উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছি। তাছাড়া সরকারের যে সকল উন্নয়ন কার্যক্রম রয়েছে সেগুলো বাস্তবায়নে কাজ করে যাচ্ছি। জামালগঞ্জ উপজেলাকে একটি মডেল উপজেলা করার পরিকল্পনা রয়েছে। শিক্ষাক্ষেত্রে এই উপজেলায় উন্নয়ন ঘটাতে শিক্ষাখাতে জোর দেয়া হচ্ছে।
দোয়াবাজারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হিসেবে দায়িত্ব পাল করছেন সোনিয়া সুলতানা। দোয়াবাজার উপজেলার মানুষ প্রধানত মৎস্যজীবী। তবে কালের পরিবর্তনের কারণে ব্যবসার পরিবর্তন এসেছে। কৃষি কাজ, গবাদিপশু পালন, বালু সরবারহ, পাথর সরবারহ, সবজি চাষ ইত্যাদি এখানকার ব্যবসার উৎস। তাই এই সকল কাজ ছাড়াও প্রতিটি বিদ্যালয়ে মেয়েদের জন্য আলাদা টয়লেট ব্যবস্থা ও তথ্য-প্রযুক্তিতে দোয়ারাবাজারের মানুষের উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছেন তিনি।
দোয়াবাজার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সোনিয়া সুলতানা বলেন, আমি এখানে নতুন। আমার দোয়ারাবাজার উপজেলা হাওর এলাকা হিসেবে দুর্গম। এখানে বন্যায় প্রায় ৫ হাজার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আমরা তাদেরকে শুকনা খাবার, জিআর চাল ইত্যাদি দিয়েছি। বর্তমানে এই উপজেলার মানুষের উন্নয়নে আমি তথ্য-প্রযুক্তিকে গুরুত্ব দিচ্ছি। তাছাড়া সরকারের কাজের অংশ হিসেবে প্রতিটি ইউনিয়নে প্রাথমিক, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও মাদরাসাতে বঙ্গবন্ধু কর্ণার তৈরি করা হচ্ছে। অন্যদিকে বিদ্যালয় ও মাদরাসাগুলোতে মেয়েদের জন্য আলাদা টয়লেট ব্যবস্থা করার কাজও চলমান রয়েছে।
শিল্পনগরী খ্যাত ছাতক বৃহত্তর সিলেট বিভাগের মধ্যে অন্যতম একটি ব্যবসা উপযোগী উপজেলা । সিমেন্ট, বালি, পাথর, চুনাপাথর, চুন, স্টোন-ক্রাশার, ইত্যাদির ব্যবসা এখানে উল্লেখযোগ্য। এই উপজেলার নবাগত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবেদা আফসারী। তিনিও কাজ করে যাচ্ছেন এই উপজেলার উন্নয়নে। ছাতকে শিক্ষার হার ৪০ শতাংশ হওয়ায় এ ক্ষেত্রে বেশি জোর দিচ্ছেন তিনি।
ছাতক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবেদা আফসারী বলেন, ছাতক উপজেলা হল একটি শিল্প নগরী। এখানে ব্যবসা-বাণিজ্যের অপার সম্ভাবনা রয়েছে। ছাতকের বালু-পাথর বাংলাদেশের সব জায়গায় যায়। তাই আমরা শিল্পক্ষেত্রের উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছি। তাছাড়া শিক্ষার হার বৃদ্ধিতে সকল পর্যায়ে কাজ করা হচ্ছে।