গণপিটুনির ভয়ে জাতীয় পরিচয়পত্র নিয়ে ঘুরছেন ভিক্ষুকরা

নিউজ ডেস্ক: গণপিটুনির ভয়ে জাতীয় পরিচয়পত্র নিয়ে ঘুরছেন ভিক্ষুকরা গণপিটুনির ভয়ে জাতীয় পরিচয়পত্র নিয়ে ঘুরছেন ভিক্ষুকরা
‘ছেলেধরা’ ও ‘কল্লা-কাটা’ গুজবে আতঙ্কিত সারাদেশে। এমন গুজবে গণপিটুনির শিকার হয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে বেশ কয়েকজন নিরীহ নাগরিক প্রাণ হারিয়েছেন।

শনিবার রাজধানীর বাড্ডায় ছেলেধরা গুজবে তাসলিমা বেগম রেনু নামের এক নিরীহ-নিরপরাধ নারী গণপিটুনিতে মর্মান্তিক মৃত্যুর ভিডিওটি দেশব্যাপী তোলপাড় করেছে।

সেই ঘটনাসহ গণপিটুনির এসব ঘটনার প্রেক্ষিতে নড়েচড়ে বসেছে পুলিশ প্রশাসন।

মফস্বলের পুলিশরাও ইতিমধ্যে এমন নির্মম ঘটনা যেন আর না ঘটে সেজন্য নানা পদক্ষেপ হাতে নিয়েছে।

তবু জনমনে আতঙ্ক রয়েই গেছে। অনেকেই সন্তানদের স্কুলে দিতে চাইছেন না, আর দিলেও কোমলমতিদের সঙ্গে যাচ্ছেন অভিভাবকরা।

তবে সাধারণ মানুষের সঙ্গে সবচেয়ে বেশি আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন ভিক্ষুকরা। কারণ থলে নিয়ে অপরিচ্ছন্ন অবস্থায় উদ্দেশ্যহীনভাবে তারাই পথে-প্রান্তরে ঘুরে বেড়ান। ইতিমধ্যে ছেলেধরা সন্দেহে বেশ কয়েকজন ভিক্ষুক গণপিটুনির শিকার হয়েছেন বলে খবরে প্রকাশ।

এমতাবস্থায় সাতক্ষীরা শহরে ভিক্ষুকরা গ্রহণ করেছেন অনন্য এক উপায়। সেখানে জাতীয় পরিচয়পত্র নিয়ে ঘুরতে দেখা গেছে অনেক ভিক্ষুককে।

সাতক্ষীরা শহরের রাজারবাগান এলাকায় বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে নিজেদের জাতীয় পরিচয়পত্র সঙ্গে নিয়ে ভিক্ষা করছিলেন ভিক্ষুক মর্জিনা বেগম ও আয়েশা খাতুন।

এ বিষয়ে তারা জানান, শুনেছি দেশে বিভিন্ন এলাকায় ‘ছেলেধরা’ গুজব ছড়িয়ে সাধারণ মানুষকে পিটিয়ে হত্যা করা হচ্ছে। এর মধ্যে ভিক্ষুকই বেশি সমস্যায় পড়ছেন। তাই ভোটার আইডি কার্ড সঙ্গে করে বাড়ি থেকে বের হয়েছি। যাতে কেউ সন্দেহ করে নাম-পরিচয় জানতে চাইলে সঙ্গেসঙ্গে এটা বের করে দেখাতে পারি।

এদিকে অন্যান্য জেলার মতো এ বিষয়ে জনসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে সাতক্ষীরা জেলার আটটি থানা পুলিশের ওসিকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। পুলিশ প্রশাসনও জনসচেতনামূলক সভা ও মতবিনিময় সভা করেছে। মাইকিং করা হচ্ছে থানায় থানায়।

এ বিষয়ে সাতক্ষীরার ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার ইলতুৎমিশ বলেন, জেলার আটটি থানায় ‘ছেলেধরা’ গুজবে কাউকে কান না দেয়ার জন্য প্রচারাভিযান অব্যাহত রয়েছে। সব থানার ওসি ও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, মেম্বার এবং চৌকিদারদের এমন গুজবের বিষয়ে সতর্ক করা হয়েছে। এছাড়া স্কুল-কলেজে সচেতনতামূলক সভা করা হচ্ছে।

বিভিন্ন সময় যারা গণপিটুনির শিকার হয়েছেন তারা অধিকাংশই মানসিক ভারসাম্যহীন ও নিরীহ মানুষ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘ছেলেধরা’ গুজব ছড়িয়ে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটানোর চেষ্টা করলে দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এ বিভাগের অন্যান্য