নবীগঞ্জে শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগ

হবিগঞ্জ সংবাদদাতা: ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের নবীগঞ্জ উপজেলায় বাস না থাকায় চরম দুভোর্গ পোহাতে হচ্ছে ৩টি ইউনিয়নের প্রায় ৪০টি গ্রামের শিক্ষার্থীসহ অর্ধলক্ষ জনসাধারণকে। গাড়ি না পেয়ে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে শিক্ষার্থীরা। গাড়ির জন্য ছাত্র-ছাত্রীদের দীর্ঘক্ষণ রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে।

ঢাকা-সিলেট মহাসড়কস্থ পাহাড়ি অঞ্চল দিনারপুর পরগণায় দিনারপুর উচ্চ বিদ্যালয়, দিনারপুর কলেজ দিনারপুর দাখিল মাদ্রাসা, পানিউমদা রাগীব-রাবেয়া স্কুল এন্ড কলেজসহ অসংখ্য প্রাইমারী-কিন্ডার গার্ডেন, কেজি স্কুল ও মাধ্যমিক বিদ্যালয় অবস্থিত। প্রতিদিন উপজেলার দেবপাড়া ইউনিয়নের, গোপলার বাজার, ভানুদেব, বিজনারপার, যিটকা, সদরঘাট, ইসলামপুর, দেবপাড়া, নলসুজা, মাঠ বনগাঁও, রুদ্রগ্রাম, আইনগাঁও, গজনাইপুর ইউনিয়নের, কায়স্থগ্রাম, লোগাঁও, মামদপুর, শিলালেরপুঞ্জি, শংঙ্করসেনা, শেখেরপাড়া, বনগাঁও, কান্দিগাঁও, টিলাপাড়া, দেওপাড়া, সাতাইহাল, কুড়াগাঁও, এবং পানিউমদা ইউনিয়নের, বরছর, রোকনপুর, বড়কান্দি, বড়গাঁও, কুর্শা, পানিউমদা, কুড়াগাঁও, সহ প্রায় ৩৫টি গ্রামের সাড়ে ৫ হাজার ছাত্র ছাত্রী মহাসড়ক দিয়ে এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আসা যাওয়া করে থাকেন। মহা সড়কে লোকাল বাস না থাকায় স্কুল কলেজে যাতায়াত করা একটি মারাত্মক সমস্যা কারণ হয়ে দাড়িঁয়েছে।

ছাত্র ছাত্রীরা অভিযোগ করে বলেন, ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে দ্রুত গতিতে অনেক বাস আসে যায়, কিন্তু স্কুল কলেজের ছাত্র-ছাত্রী দেখলে নিদিষ্ট ষ্ট্যান্ডে বাস থামে না। এ ভাবে ঘন্টা দুই এক দাড়িয়ে থেকে ও গাড়িতে উঠতে পারেনা অনেকেই। এসব সমস্যা এখন নিত্যদিনের। এতে করে সাধারণ শিক্ষার্থীসহ মহা সড়কে যাতায়াতকারী সাধারণ যাত্রীদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে প্রতিদিন। পরিবহন সমস্যার কারণে অসংখ্য শিক্ষার্থী বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রতিদিন সরকার কর্তৃক নিষিদ্ধ যানবাহন সিএনজি (অটোরিকশা) করে যাতায়াত করে থাকেন। অনেক সময় প্রাণের ভয়ে সিএজিতে উঠছে না ছাত্র ছাত্রীরা। স্কুল কলেজে যাওয়ার সময় পার করে দিচ্ছেন মহাসড়কে।

দিনারপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়ুয়া সাগর নামে এক শিক্ষার্থী বলেন, আমি বৈঠাখাল থেকে স্কুলে আসা যাওয়া করি, আমাদের বাড়ি থেকে মহাসড়কের প্রায় ১১ কিলোমিটার, আবার মহাসড়ক থেকে স্কুলের রাস্তা আরও ৮ কিলোমিটার, বাড়ি থেকে বের হয়ে পায়ে হেটে গোপলার বাজারের এসে অনেক সময়ই সিএনজি পাওয়া যায় না। যার ফলে স্কুলে যাওয়ার সময়টা রাস্তায় দাড়িয়ে থাকতে থাকতে চলে যায়।

দিনারপুর কলেজের ছাত্র সোহান আহমেদ বলেন, প্রতিদিন আমরা ঘন্টার পর ঘন্টা দাড়িয়ে থাকি কিন্তু গাড়ি মিলে না কলেজে যেতে, আইতে গাড়ির জন্য আমরা অনেক কষ্ট করতে হয়।

পানিউমদা রাগীব-রাবেয়া স্কুল এন্ড কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র কাওছার আহমেদ বলেন, আমরা কলেজে যাওয়ার লাগি গাড়ির জন্য আমরা নিয়মিত ক্লাস ধরতে পাররাম না এ সমস্যা দূর না করলে অনেক কষ্ট করতে অইবো আমরার। এ চরম অবস্থায়, মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের যাতায়াত কঠিন হয়ে পড়েছে।

রাজ্জাক আহমেদ নামে এক শিক্ষার্থী বলেন, এক কথায় খুবই কষ্টে আছি, সরকার সিএনজি নিষেধ করেছে মহাসড়কে অথচ লোকাল বাস নেই, অনকে সময় প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে সিএনজিতে করে চলাচল করে থাকি।

দিনারপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের পড়ুয়া এক খরছু আহমেদ নামে ছাত্রের অভিভাবক জানান, সড়কে বাস না থাকায় অনেক কষ্ট করে ৭-৮ কিলোমিটার হেটে আমার ছেলে স্কুলে যায়, গত বছর সিএনজিতে করে স্কুল থেকে ফেরার পথে সড়ক দুর্ঘটনার কবলে পড়ে এতে তার আরও ৪ জন সহপাঠি গুরুতর আহত হয়। সংশ্লিষ্ট সকলের কাছে অনুরোধ আগামী প্রজন্ম যাদের হাতে নির্ভরশীল তাদের কথা চিন্তা করে অতিদ্রুত লোকাল বাস চালু করা হউক।

এ বিষয়ে দিনারপুর কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ তনুজ রায় বলেন, স্কুল-কলেজে যাতায়াত অনেক বড় সমস্যার কারণ হয়ে দাড়িয়েছে, দ্রুত এ ব্যাপরে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি অনুরোধ জানাই।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তৌহিদ-বিন হাসান এর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে যদি কোনো অভিযোগ পাই তাহলে বাস মালিক সমিতির সঙ্গে কথা বলে যথাযথ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

এ বিভাগের অন্যান্য