সিলেটের সংস্কৃতি বিকাশে ভারত সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছে
কমলগঞ্জে ভারতীয় হাইকমিশনার
বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাই কমিশনার রীভা গাঙ্গুলী দাশ বলেছেন, বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক এখন একটা সোনালী অধ্যায়ের মধ্য দিয়ে অতিক্রম করছে। বাংলাদেশের মাঝে সিলেট বিভাগ একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান। এই সিলেটের সাথে ভারতের আসাম, মেঘালয় ও ত্রিপুরার সীমান্ত রয়েছে। এই তিন রাজ্যের সাথে সিলেটের ভাষা, সংস্কৃতি ও সামাজিকতায় সুনিবিড় সম্পর্ক রয়েছে। ফলে প্রয়োজনীতা উপলব্দি করেই সিলেটে একটি ভারতীয় ভিসা কেন্দ্র চাল করা হয়েছে। দুই দেশ আরও কাছাকাছি এসে দুই দেশের সামাজিকতা, সংস্কৃতি ও ব্যবসা বাণিজ্যের আরও উন্নয়ন সম্ভব। সিলেট বিভাগে বহু ভাষাভাষী মানুষজনের বসবাস। তাদের রয়েছে নিজস্ব ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতি। এ সংস্কৃতির সুষ্ঠু বিকাশে ভারত সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে আসছে। তার ফলশ্রুতিতে ভারতীয় হাই কমিশন কমলগঞ্জে কয়েকটি কমপ্লেক্স নির্মাণ করে দিয়েছে।
তিনি শুক্রবার (৫ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ১১টায় ভারতীয় অর্থায়নে ২ কোটি ৫৩ লক্ষ ৩৪ হাজার ৪০০ টাকা ব্যয়ে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার তিলকপুর সার্বজনীন পূজা মন্দির ও মন্ডপের দ্বিতল ভবনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপরোক্ত কথাগুলো বলেন।
তিলকপুর সার্বজনীন পূজা মন্দির ও মন্ডপ কমিটির সভাপতি, প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক ছালিয়া সিংহের সভাপতিত্বে ও মানবিকা সিনহার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন সিলেটে নিযুক্ত ভারতীয় সহকারী হাই কমিশনার এল কৃষ্ণমূর্তি, আলীনগর ইউপি চেয়ারম্যান ফজলুল হক বাদশা, কমলগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আরিফুর রহমান, মণিপুরী সমাজকল্যাণ সমিতির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আনন্দ মোহন সিন্হা।
স্বাগত বক্তব্য রাখেন তিলকপুর চাকুরীজীবি সার্বজনীন পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক প্রধান শিক্ষক স্বপন কুমার সিংহ। অনুষ্ঠান শেষে ভারতীয় হাই কমিশনার শ্রীমতী রীভা গাঙ্গুলী দাশ এর সম্মানে মণিপুরী শিল্পীদের পরিবেশনায় মনোমুগ্ধকর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠান শেষে ভারতীয় হাই কমিশনার শ্রীমতী রীভা গাঙ্গুলী দাশ ও তাঁর সফরসঙ্গীদের মণিপুরীদের ঐতিহ্যবাহী শাড়ী, গামছাসহ উপহারসমাগ্রী প্রদান করা হয়। অনুষ্ঠানে ভারতীয় হাই কমিশনার অফিসের কর্মকর্তাবৃন্দ, বিপুল সংখ্যক স্থানীয় মণিপুরী নেতৃবৃন্দসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
শুক্রবার সকাল সাড়ে ১১টায় ভারতীয় হাই কমিশনার রীভা গাঙ্গুলী দাশ তিলকপুর সার্বজনীন পূজা মন্দির ও মন্ডপে পৌঁছলে পুষ্প বৃষ্টি দিয়ে ও ফুলের তোড়া দিয়ে তাঁকে বরণ করেন মণিপুরী নারী ও মেয়েরা। এররপর ভারতীয় হাই কমিশনার ফলক উন্মোচনের মাধ্যমে তিলকপুর পূজা মন্দির ও মন্ডপ ভবনের উদ্বোধন করেন।
এর আগে রীভা গাঙ্গুলী দাশ কমলগঞ্জ উপজেলার আদমপুর ইউনিয়নের ঘোড়ামারা গ্রামে ভারতীয় হাইকমিশনের ৩৫ লাখ টাকার সহায়তায় নির্মাণাধীন আধুনিক মণিপুরী থিয়েটার স্টুডিও নটমন্ডপ এর কাজের অগ্রগতি পরিদর্শন করেন। সবশেষে মণিপুরী ঐতিহ্যবাহী মৃদঙ্গ বাজন, হলি কীর্তন লীলা, রাধা কৃষ্ণের লীলা রাখাল নৃত্য পরিবেশ করা হয়। ভারতীয় হাই কমিশনার রিভা গাঙ্গুলী দাস বলেনে তিনি ও তার সফর সঙ্গীরা এই পরিবেশনা দেখে মুগ্ধ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ভারতীয় হাই কমিশনার আরও বলেন, ভারতের উত্তর পূর্বাঞ্চলীয় কয়েকটি রাজ্যের সিলেটের সাথে ব্যবসা বাণিজ্যের সু- সম্পর্ক রয়েছে। এ ব্যবসা বাণিজ্য আরও তরান্বিত করতে দুই দেশ একযোগে কাজ করছে। প্রয়োজনীয় স্থানে সীমান্ত হাট হচ্ছে। সিলেট বিভাগ ছাড়াও বাংলাদেশের যে কোন স্থানে সার্বিক উন্নয়নে ভারত সহায়তা দিচ্ছে এবং ভবিষ্যতে আরও দিয়ে যাবে। এভাবেই দুই দেশ আরও কাছাকাছি আসতে পারবে।