আবরার নিহত: আজও চলছে সড়ক অবরোধ
রাজধানীর প্রগতি সরণির জেব্রাক্রসিংয়ে সড়ক দুর্ঘটনায় বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসের (বিইউপি) ছাত্র আবরার আহমেদ চৌধুরী নিহতের ঘটনায় আজও সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ প্রদর্শন করছেন শিক্ষার্থীরা।
বুধবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার মূল ফটকের সামনে জড়ো হয়ে ওই সড়কের যান চলাচল বন্ধ করে দেন বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা।
পাশাপাশি ক্লাস বর্জন করে নিজ নিজ এলাকায় অবস্থান করে আন্দোলনে শরিক হওয়ার জন্য সারা দেশের শিক্ষার্থীদের প্রতি আহ্বান জানান তারা।
এর আগে মঙ্গলবার ঘাতক বাস দুটি জব্দ করেছে পুলিশ। গ্রেফতার করা হয়েছে এক চালককে। বাসটির রেজিস্ট্রেশন সাময়িকভাবে বাতিল করেছে বিআরটিএ।
দিনভর অবরোধের ঘটনায় ওই সড়কে যান চলাচল একেবারে বন্ধ হয়ে যায়। এতে অন্য সড়কগুলোতেও তীব্র যানজট দেখা দেয়।
উত্তাল সড়কের দুপাশেই অবস্থান নেন শিক্ষার্থীরা। দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত সড়ক ছাড়বে না বলে ঘোষণা দেন তারা। আন্দোলনে আটকেপড়া সুপ্রভাত পরিবহনের একটি গাড়িতে আগুন ধরানো হলে শিক্ষার্থীরা পানি এনে আগুন নেভান। এ সময় আগুন লাগানোর অভিযোগে তারা একটি বাসের চালককে ধরে মারধর করেন।
দিনভর বিক্ষোভের পর সন্ধ্যা ৬টার দিকে আন্দোলনকারীরা রাস্তা থেকে সরে গেলে ওই এলাকার যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
গত বছরের জুলাইয়ে রাজধানীর রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের দুই শিক্ষার্থী বাসচাপায় নিহত হন। এ ঘটনায় দেশজুড়ে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করে।
নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলনে নামেন রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী। সেই আন্দোলনে সক্রিয় থেকে নিরাপদ সড়কের দাবি জানিয়েছিলেন আবরার আহমেদ চৌধুরী।
নিহত আবরার আহমেদ চৌধুরী (২০) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আরিফ আহমেদ চৌধুরীর বড় ছেলে।
আবরার বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসে (বিইউপি) আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মঙ্গলবার সকাল সোয়া ৭টার দিকে শিক্ষার্থীদের বহনকারী বিইউপির একটি বাস প্রগতি সরণিতে দাঁড়িয়েছিল। ওই বাসেই বিশ্ববিদ্যালয়ে যাওয়ার কথা ছিল আবরারের।
বাসে ওঠার জন্য নিয়ম মেনেই জেব্রাক্রসিং দিয়ে রাস্তা পার হচ্ছিলেন তিনি। ওই সময় পাল্লাপাল্লি করে আসা সুপ্রভাত পরিবহনের দুই বাসের মধ্যে চাপা পড়েন আবরার।
গুরুতর আহত আবরারকে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) নেয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
দুর্ঘটনার পর নিহত আবরারের সহপাঠীরা বাসটি আটক করেন। এ সময় চালক ও হেলপার পালানোর চেষ্টা করেন। পরে চালক সিরাজুল ইসলামকে (২৯) ধরে ফেলেন শিক্ষার্থীরা।
তারা বাসচাপায় নিহত সহপাঠীর বিচার দাবিতে নানা স্লোগান দেন। উই ওয়ান্ট জাস্টিস/জেব্রাক্রসিংয়ে মৃত্যু কেন/টনক তুমি নড়বে কবে/কয়লার রাস্তা না রক্তের রাস্তা/নিজের সিরিয়ালের অপেক্ষা করুন/আর কত প্রাণ নিবি ইত্যাদি প্ল্যাকার্ড নিয়ে তার সহপাঠীরা আন্দোলন করছেন।