সিলেটে বিক্ষিপ্ত ঘটনায় আহত ৩০ : গ্রেফতার ৮
উপজেলা নির্বাচন
স্টাফ রিপোর্টার
সিলেটের ১২ টি উপজেলায় ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। গতকাল সোমবার সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত চলে ভোট গ্রহণ। সিলেট সদর, দক্ষিণ সুরমা, বিশ্বনাথ, বালাগঞ্জ, ফেঞ্চুগঞ্জ, বিয়ানীবাজার, গোলাপগঞ্জ, কানাইঘাট, গোয়াইনঘাট, জৈন্তাপুর, কোম্পানীগঞ্জ ও জকিগঞ্জ উপজেলা পরিষদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। নির্বাচনে ভোটারদের উপস্থিতি কম ছিল। আর বড় ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি। তবে কয়েকটি কেন্দ্রে জাল ভোট, সংর্ঘষ, হামলা ও গুলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। এ সকল ঘটনায় ৩০ জন আহত হয়েছেন। আর গ্রেফতার হয়েছেন ৮ জন।
সূত্র জানায়, সিলেট সদর উপজেলার নিরুত্তাপ নির্বাচনে শেষ মুহুর্তে কিছুটা উত্তাপ ছড়ায়। আখালিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে দিন শেষে দুই ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটে। বিকেল ৩টার দিকে ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী পারভেজ আহমদ (বই) ও মকবুল হোসেন খানের (টিউবওয়েল) সমর্থকরা পরস্পরের বিরুদ্ধে জাল ভোট প্রদানের অভিযোগ করলে উত্তেজনা শুরু হয়। বিকেল পৌণে ৪টার দিকে উভয় পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এসময় পুলিশ কয়েক রাউন্ড রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। এসময় দুইজনকে আটকও করে পুলিশ। তবে আটককৃতদের পরিচয় জানা যায়নি। এছাড়া জৈন্তাপুর উপজেলায় জাল ভোট দিতে যাওয়া ছয় যুবককে আটক করা হয়। তাদের মধ্যে হেমু সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে ২জন ও হেমু হাউদ পাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র থেকে ৪ জনকে আটক করা হয়। সোমবার দুপুর ১২টার দিকে তাদেরকে আটক করা হয় বলে জানান প্রিজাইডিং কর্মকর্তা সুব্রত দেবনাথ। আটকরা হলেন- সায়মন আহমদ, সায়ফুদ্দিন, আল-আমিন, কুতুবউদ্দিন, পারুল আহমদ ও দেলোয়ার।
অপরদিকে, গোয়াইনঘাটের একটি কেন্দ্রে জাল ভোট দেয়াকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষে সংর্ঘষ হয়। এতে ৫ জন আহত হন। তাছাড়া বিশ্বনাথের লামাকাজি একটি কেন্দ্রে আওয়ামী লীগ সর্মথকরা জোর পূর্বক দখল করে ব্যালটে সিল মারার খবর পাওয়া গেছে। আর জকিগঞ্জের সুলতানপুর ইউনিয়নের তিরাশী গ্রামের ভোট কেন্দ্রে জাল ভোট দেয়া ও ব্যালট পেপার ছিনতাইকে কেন্দ্র করে দুই প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এসময় হামলার শিকার হয়েছেন দায়িত্বরত কর্মকর্তা ও পুলিশ সদস্যরা। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ৭ রাউন্ড পিস্তলের গুলি ও ১৩ রাউন্ড শর্টগানের গুলি ছুড়ে। এতে অন্তত পক্ষে ২০/২৫ জন আহত হয়েছেন বলে প্রাথমিকভাবে খবর পাওয়া গেছে।
জানাগেছে, বিকেল ৩টার দিকে জাল ভোট দেয়াকে কেন্দ্র করে ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী সজল কুমার সিংহ ও মাওলানা আব্দুস সবুরের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। এক পর্যায়ে দুই প্রার্থীর সমর্থকরা ভোট কেন্দ্রে দায়িত্বরতদের উপর হামলা চালিয়ে ব্যালট ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করে।
এ ব্যপারে জকিগঞ্জ থানার ওসি হাবিবুর রহমান হাওলাদার জানিয়েছেন, জাল ভোটকে কেন্দ্র করে ব্যালট ছিনতাইয়ের চেষ্টা করা হয়েছে। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ৭ রাউন্ড পিস্তলের গুলি ও ১৩ রাউন্ড শর্টগানের গুলি ছুড়ে। ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়ন করা হয়েছে।
এদিকে, সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলায় জাল ভোটে বাধা দেওয়ায় ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী আব্দুল আহাদকে লাঞ্চিত করেন যুবলীগ নেতা বাদশা। আর পৌর কাউন্সিলর রুহিন আহমদের নেতৃত্বে প্রকাশ্যে ব্যালট পেপারে সিল মারা ও সাংবাদিককে লাঞ্ছিত করার ঘটনাও ঘটেছে। সোমবার গোলাপগঞ্জের পৌরসভা কেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটে বলে জানা যায়। এসময় উপজেলা নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যান পদে বৈদ্যুতিক বাল্ব প্রতীকের প্রার্থী আব্দুল আহাদকে কেন্দ্র থেকে বের হয়ে যেতে হুমকি দেন কাউন্সিলরের সাথে থাকা যুবলীগ নেতা বাদশা। আব্দুল আহাদ বিষয়টি মৌখিকভাবে প্রিজাইডিং কর্মকর্তাকে অভিযোগ করেন।