জ্ঞান ফিরেছে ওবায়দুল কাদেরের
আওয়ামী লীগের দলের উপ দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া জানিয়েছেন, হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সিসিইউতে চিকিসাধীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের চেতনা পুরোপুরি ফিরেছে।
সোমবার (৪ মার্চ) সকালে তিনি এ কথা জানান।
তিনি বলেন, উনি কথা বলছেন। উনার চিকিসার জন্য গঠিত মেডিকেল বোর্ড সব বিবেচনা করে ঠিক করবেন লাইফ সাপোর্ট কখন খোলা হবে।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ সকালে চিকিসকদের বরাত দিয়ে বলেন, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের অবস্থার ‘ক্রমান্বয়ে উন্নতি’ হচ্ছে। তার সর্বশেষ পরিস্থিতি নিয়ে দুপুরে ব্রিফ করবেন চিকিসকরা।
রোববার সকালে শ্বাসকষ্ট নিয়ে বঙ্গবন্ধু মেডিকেলে ভর্তি হন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। পরে এনজিওগ্রামে তার হৃদপিণ্ডের রক্তনালীতে তিনটি ব্লক ধরা পড়ে।
এর মধ্যে একটি ব্লক স্টেন্টিংয়ের মাধ্যমে অপসারণ করার পর কাদেরের অবস্থার কিছুটা উন্নতি হলেও পরে আবার অবনতির দিকে যায়। চিকিসকরা তখন কৃত্রিমভাবে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের সিদ্ধান্ত নেন।
তখন থেকেই ৬৭ বছর বয়সী এই রাজনীতিবিদকে ক্রিটিক্যাল করোনারি কেয়ার ইউনিটে কৃত্রিমভাবে শ্বাসপ্রশ্বাস দেওয়া হচ্ছে তাকে।
উন্নত চিকিসার জন্য কাদেরকে বিদেশে পাঠানোর পরিকল্পনা করার পর সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালের একটি এয়ার অ্যাম্বুলেন্স রোববার সন্ধ্যায় ঢাকায় পৌঁছায়। সিঙ্গাপুরের তিনজন বিশেষজ্ঞ চিকিসক ওই এয়ার অ্যাম্বুলেন্সের সঙ্গে আসেন।
রাতে তাদের সঙ্গে আলোচনা করে বঙ্গবন্ধু মেডিকেলের উপাচার্য কনক কান্তি বড়ুয়া সাংবাদিকদের জানান, সার্বিক অবস্থা বিবেচনা করে আপাতত সিঙ্গাপুরে না নিয়ে দেশেই ওবায়দুল কাদেরকে চিকিসা দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
তিনি সে সময় বলেন, সকাল এবং দুপুরের চেয়ে এখনকার অবস্থার উন্নতি হয়েছে। উনি চোখ খুলে তাকান, উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করেন। উনাকে জিজ্ঞাসা করা হল পানি খাবেন কি না, উনি মাথা নেড়ে উত্তর দিয়েছেন এবং হাত পা নাড়ছেন। উনার প্রস্রাবও হচ্ছে। দুপুরের দিকে প্রস্রাব একেবারে বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। এখন প্রস্রাব হচ্ছে। ব্লাড প্রেশার অনেকটা স্টেবল হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, উনার অবস্থার উন্নতির ধারা যেহেতু অব্যাহত হয়েছে, সেহেতু সিঙ্গাপুরের টিমের সাথে আলোচনা করে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, আপাতত উনি এখানেই থাকবেন। পরবর্তীতে অবস্থার ওপর নির্ভর করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম বলেন, রোববার রাতে জানিয়েছিলেন, এয়ার এম্বুলেন্সে আইসিইউর পর্যাপ্ত সুযোগ সুবিধা নেই। তাছাড়া সিঙ্গাপুরে নিতে হলে চার ঘণ্টা ফ্লাই করতে হয়। সেই ধকল ওবায়দুল কাদের নিতে পারবেন কি না, সে বিষয়টিও চিকিৎসকরা বিবেচনা করেছেন।
এখন পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হওয়ায় তাকে দেশের বাইরে নেওয়া হবে কি না- সে সিদ্ধান্ত সোমবারই নিতে পারেন চিকিৎসকরা।
এদিকে ওবায়দুল কাদেরের চিকিসার জন্য ভারতের কয়েকজন নামকরা চিকিসকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে বলেও জানা গেছে।
কাদেরের চিকিসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ডের প্রধান বঙ্গবন্ধু মেডিকেলের কার্ডিওলজির অধ্যাপক সৈয়দ আলী আহসান রোববার বিকালে এক ব্রিফিংয়ে বলেন, অবস্থা স্থিতিশীল থাকলে তারা চিকিসার বিষয়ে দুই ধরনের সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। আমরা মেডিকেল থেরাপি দিতে পারি অথবা ব্লকড থাকা অন্য নালীগুলো খুলে দিতে বাইপাস করতে পারি। তবে সেই সিদ্ধান্ত নিতে ২৪ থেকে ৭২ ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হবে।… এখনও উনি ক্রিটিক্যাল অবস্থায় আছেন।