আ’লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী নিয়ে বিপাকে তৃণমূল নেতৃবৃন্দ।

ছাতক ইউনিয়ন পরিষদের উপনির্বাচন ২৮ ফ্রেব্রুয়ারি

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন এবং উপজেলা সংসদ নির্বাচনে আওয়ামীলীগের সভানেত্রী এবং প্রধানমন্ত্রী শেখহাসিনা যাকে মনোনয়ন দিবেন তাকে নিয়ে দলীয় সিদ্ধান্ত মোতাবেক সবাই কাজ করতে হবে এবং কেউ বিদ্রোহী হলে তার বিরুদ্ধে দলের নীতিনির্ধারকরা ব্যবস্থা নিবেন এমন কথা ঘোষণা হলে যারা সংসদ সদস্য এবং উপজেলা নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থীতার ঘোষণা দিয়েছিলেন তারা দলের সভানেত্রীর সিদ্ধান্তে কথায় প্রার্থীতা প্রত্যাহার করেছিলেন। সুতারাং এই যখন বাস্তবতাা। তখন দলের হাইকমান্ড কথা ডিঙ্গিয়ে ছাতক উপজেলার ৭ নং সিংচাপই ইউনিয়ন পরিষদের উপ নির্বাচনে আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী আশিকুল ইসলাম আশিকের সাথে টক্কর দিতে মোজাহিদ আলী বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন । জানাযায়, ২৮ ফেব্রুয়ারি ৭ নং সিংচাপই ইউনিয়ন পরিষদের উপনির্বাচনে তৃণমূলে গ্রহণযোগ্যতা থাকায় আওয়ামীলীগের দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন যুক্তরাজ্য বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের সহসভাপতি আশিকুল ইসলাম আশিক।
এবার একই ঘরে বিদ্রোহের আগুন দেখে জনসাধারণের মাঝে বইছেও নানা আলোচনা সমালোচনা ঝড় । কাকে রেখে কাকে ভোট দিবে তা নিয়ে বেশ চিন্তায় সাধারণ ভোটররা। এ সুযোগে ছাতক উপজেলার অন্যতম ই্উনিয়নটি কৌশলে দখলে মরিয়া হয়েছে উঠেছে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থীরা। এক্ষেত্রে ভোটে শক্ত অবস্থানে থাকা নৌকা প্রতীকের প্রার্থীকে,বিদ্রোহী প্রার্থী মাঠে থাকায় সতন্ত্র প্রাার্থীরা টেক্কা দিতে পারে এমন কথা জানিয়েছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। ভোটের দিন যতো এগুচ্ছে ততই উত্তপ্ত হয়ে উঠছে নির্বাচনের মাঠ। ইউনিয়নের অন্তভুক্ত জিয়াপুর কামারগাঁও এর স্থানীয়রা জানান নৌকার প্রার্থী আশিকুল ইসলাম আশিকের সাথে টক্কর দিতে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে রয়েছেন ছাতক উপজেলা আওয়ামীলীগ আহবায়ক কমিটির সদস্য মুজাহিদ আলী। অনেকে এটাকে নেতিবাচক হিসেবে দেখছেন জানিয়েছেন। এ বিষয়ে বিদ্রোহী প্রার্থী মুজাহিদ আলী জানান বিদ্রেহী নয় সতন্ত্র প্রার্থী হয়েছি। জনগনের আহবানে তিনি নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন। ভোটের নয়া মেরুকরণে আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী আশিকুল ইসলাম আশিক বলেন, আমার রাজনীতির আদর্শ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, নেত্রী শেখ হাসিনা এবং দল আওয়ামী লীগ, প্রতীক নৌকা। এর বাইরে আমার কোন পরিচয় নেই। জনগণ আমাকে পছন্দ করে সেজন্য নেত্রী আমাকে মনোনয়ন দিয়েছেন। নৌকা উন্নয়নের প্রতীক সবাই নৌকার মাঝিকে ভোট দিয়ে জয়বাংলার স্লোগান দিবে আমি গ্রামের মানুষের ভাগ্য উন্নয়নে কাজ করতে চাই। গণসংযোগকালে ভোটারদের উদ্দেশে তিনি বলেন, বিগত সময়ে ইউনিয়নবাসী দৃশ্যমান কোনো উন্নয়ন দেখতে পাননি। এই ইউনিয়ন শিক্ষা, চিকিৎসা, যোগাযোগ ব্যবস্থাসহ নানাভাবে পিছিয়ে রয়েছে। রাস্তাঘাটের উন্নয়ন, শিক্ষা, চিকিৎসা সেবাসহ নাগরিক সুবিধা নিশ্চিত করার প্রত্যয় ব্যক্ত করে আসন্ন নির্বাচনে তাকে ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করার আহবান জানান । এদিকে দিন যতো এগুচ্ছে ততই উত্তপ্ত হয়ে উঠছে নির্বাচনের মাঠ।

উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও রিটার্নিং অফিসার মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক জানান, গত ৩১ জানুয়ারি মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিনে ৯ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল করেছিলেন। ৩ ফেব্রুয়ারি যাচাই-বাচাইয়ে ৯ জন প্রার্থীর মনোনয়ন বৈধতা পায়। রবিবার প্রত্যাহারের শেষ দিনে দু’প্রার্থী মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন। বাকি সাত প্রার্থীর মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে ভোট গ্রহণ। আওয়ামী লীগের তৃণমুল নেতারাও স্বীকার করছেন, বিদ্রোহী প্রার্থীদের নিয়ে তারা কিছুটা বিপাকে পড়েছেন। তবে শেষ মুহুর্তে তাদের সরিয়ে নিতে তারা চেষ্টা করছেন।
এ উপনির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে রয়েছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী প্রবাসী আশিক ইসলাম আশিক(নৌকা) প্রতীক। বাকি ছয় জনের ১জন আওয়ামী লীগ বিদ্রোহী প্রার্থীর মধ্যে মুজাহিদ আলী (আনারস), সতন্ত্র প্রার্থী মুর্শেদ চৌধুরী (চশমা), ফারুক আহমদ (ঘোড়া), প্রবাসী আবদুল মালিক (অটোরিকশা), আফজাল হোসেন সেবুল (মোটরসাইকেল) ও মনজু আহমদ (টেলিফোন) প্রতীক পেয়েছেন। নির্বাচনের মাঠ থেকে সরে যাওয়ার জন্য তৃণমূল পর্যায়ে আলটিমেটাম এবং হুঁশিয়ারিকে আমলে নিচ্ছেন না আওয়ামী লীগের এক বিদ্রোহী প্রার্থী। স্বতন্ত্র প্রার্থিতার আড়ালে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিদ্রোহী প্রার্থী মাঠে থাকার প্রশ্নে অনড় অবস্থানে রয়েছেন বলে জানান তৃণমুল আ’লীগের নেতৃৃবন্দ। শেষ পর্যন্ত আওয়ামী লীগ ও মহাজোটের নেতাকর্মীরা নিজেদের বিভেদ দূর করে নৌকা প্রতীককে জয় করবেন, নাকি বিএনপি সমর্থিত প্রার্থীরা সে সুযোগে নিজেদের জয় তুলে নিবে তা এখন দেখার বিষয়।

এ বিভাগের অন্যান্য