নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা চক: সিলেটে ২২৯ বছর পর নতুন কারাগারে গেলেন বন্ধিরা

নগরজুড়ে কয়েক স্তরের  নিরাপত্তা ব্যবস্থা
 নারী হাজতিদের স্থানান্তরের মধ্যে দিয়ে শুরু
 বন্দীর সংখ্যা প্রায় ২ হাজার ৩০০ জন।
 কয়েদি ৫০০
 হাজতি সাজাপ্রাপ্ত ১ হাজার ৮০০ জন।

মবরুর আহমদ সাজু:
পুরাতন কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে সিলেটের শহরতলির বাদাঘাটে নবনির্মিত সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দিরা গেলেন। গতকাল শুক্রবার (১১ জানুয়ারি) সকাল বেলা নিñিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থায় নেওয়া হয়। প্রথমে নারী হাজতিদের স্থানান্তরের মধ্য দিয়ে,এই নতুন কারাগারে বন্দী স্থানান্তরের কার্যক্রম শুরু হয়।এর পর পুরুষ কয়েদিদের। জানাযায়, ২২৯ বছর পর নতুন ঠিকানা পান সিলেট কারাগারের বন্দিরা। বর্তমান শেখহাসিনা সরকার ২০১১ সালে দু’শ ২৭ কোটি টাকা ব্যয়ে এ কারাগার নির্মাণের পদক্ষেপ গ্রহণ করে। এছাড়া ওই বছর আগষ্টে ভিত্তি প্রস্থর স্থাপন করা হলেও ২০১২ সালে নির্মাণ কাজ শুরু হয়। ২০১৫ সালে কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলোর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মেয়াদ ২০১৬ সালের জুলাই পর্যন্ত বাড়ানো হয়। কারাগারের সুয়ারেজ ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট এর কাজ, পুকুর খনন ও গ্যাস সংযোগ ছাড়া বাকী সব কাজ ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে শেষ হয়ে যায়। পক্ষান্তরে সিলেটের নবনির্মিত কারাগারটি উদ্বোধনের তিন মাস পর বন্দিদের এ স্থানান্তর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে গতকাল শুক্রবার,
সকাল পৌনে সাতটার দিকে একটি প্রিজন ভ্যানে করে কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে নবনির্মিত কারাগারে নিয়ে আসা হয় মহিলা হাজতিদের। এরপর কয়েদিদের নিয়ে আসা হয়। পুরাতন কারাগার থেকে নুতন কারাগারে স্তানান্তরের বিষয়টি আসামি ও তাদের আত্মীয় স্বজনের অবগতির জন্য কারাগারের প্রধান ফটকে নোটিশ সাঁটানো হয়েছিল বলে জানাযায়। নোটিশে বলা হয়, ‘সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারে আটক বন্দিদের সাথে তাদের আত্মীয় স্বজনসহ সকলের সাক্ষাৎ কার্যক্রম আগামী ১০ জানুয়ারি থেকে ১২ জানুয়ারি পর্যন্ত বন্ধ থাকবে। এদিকে নতুন কারাগার উদ্বোধনের পর থেকে নব নির্মিত কারাগারের পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ নেয় কারা কর্তৃপক্ষ। কারারক্ষীসহ কারা কর্মকর্তা-কর্মচারীরা নতুন কারাগারে অফিস করা শুরু করেন। কারা সূত্র জানায়,বর্তমানে সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারের বন্দীর সংখ্যা প্রায় ২ হাজার ৩০০ জন। এর মধ্যে কয়েদি (সাজাপ্রাপ্ত) ৫০০ এবং হাজতি হলেন ১ হাজার ৮০০ জন। বন্দি স্থানান্তরের কার্যক্রম নির্বিঘœ করতে গতকাল শুক্রবার শহরতলীর বাদাঘাটে নতুন এবং নগরীর ও ধূপাদিঘীপারে পুরাতন কারাগারে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয় । রাস্তাঘাট ছিল ফাঁকা নগরীর পয়েন্টে পয়েন্টে। সকাল থেকে পুরাতন কারাগার পুলিশ মোতায়নে করা আইনশৃঙখলাবাহিনী ছিল ব্যস্ত, কয়েদিদের কারাগার থেকে বের করার সময় ফায়াার সার্ভিস ও পুলিশ র‌্যাবের চৌকস দলের নেতৃত্ব বন্দীদের নিয়ে যাওয়া হয় নতুন কারাগারে।
অুসন্ধানে জানাযায় ২২৯ বছর পর নতুন ঠিকানা পেয়েছে সিলেট কারাগারের বন্দিরা, ১৭৮৯ সালে আসামের কালেক্টর জন উইলিশ সিলেট শহরের কেন্দ্রস্থল ধোপাদিঘীর পাড়ে ২৪ দশমিক ৭৬ একর জমির ওপর কারাগার প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৯৭ সালের ৩ মার্চ এটি সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারে রূপান্তরিত হয়। তখন কারাগারের ধারণ ক্ষমতা দাঁড়ায় ১ হাজার ২১০ জনে। বর্তমানে সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারের অবস্থা অত্যন্ত নাজুক। জরাজীর্ণ অবস্থার পাশাপাশি কারাগারে রাখা হয়েছে ধারণ ক্ষমতার দ্বিগুণ বন্দিকে। বন্দিদের মানবেতর জীবনযাপনের বিষয়টি বিবেচনায় এনে সিলেট নগর থেকে প্রায় ১৫ কিলোমিটার দূরে সদর উপজেলার বাদাঘাটে ৩০ একর জমির উপর নতুন কারাগার নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। ২০১১ সালে দু’শ ২৭ কোটি টাকা ব্যয়ে এ কারাগার নির্মাণের পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়। তবে ওই বছর আগস্টে ভিত্তি প্রস্থর স্থাপন করা হলেও ২০১২ সালে নির্মাণ কাজ শুরু হয়। ২০১৫ সালে কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলোর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মেয়াদ ২০১৬ সালের জুলাই পর্যন্ত বাড়ানো হয়। কারাগারের সুয়ারেজ ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট এর কাজ, পুকুর খনন ও গ্যাস সংযোগ ছাড়া বাকী সব কাজ ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে শেষ হয়ে যায়।

 

এ বিভাগের অন্যান্য