সন্ত্রাস-নৈরাজ্যের বিরুদ্ধে শান্তি ও উন্নয়নের প্রতীক নৌকায় ভোট দিন:ড.মোমেন

 

সিলেট-১ আসনে মহাজোট মনোনীত প্রার্থী, জাতিসংঘে বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রদূত, বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ড. এ কে আব্দুল মোমেন আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সন্ত্রাস, বোমাবাজি, দখলবাজি তথা নৈরাজ্যের বিরুদ্ধে দেশে শান্তি, উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির প্রতীক নৌকায় ভোট দেওয়ার জন্য জনগণের প্রতি আহবান জানিয়েছেন।
মঙ্গলবার সিলেট নগরী ও সদর উপজেলার বিভিন্ন স্থানে গণসংযোগ ও নির্বাচনী সভায় তিনি এ আহবান জানান।
ড. মোমেন বলেন, বিএনপি ও তাদের জোট যখন ক্ষমতায় বসে তখন দেশে সন্ত্রাস, নৈরাজ্য, জঙ্গিবাদ, লুটপাট হয়। মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করা হয়। তাদের সন্ত্রাসী আগ্রাসন থেকে কেউ নিরাপদ ছিল না। বিএনপি-জামাত সরকারের পৃষ্টপোষকতায় বাংলাদেশে জঙ্গিবাদের উত্থান ঘটে। বিদেশ থেকে ১০ ট্রাক অবৈধ অস্ত্রের চালান দেশে আনা হয়। একই সময়ে দেশের ৬৩ জেলায় বোমা বিস্ফোরণ হয়। মসজিদ, মাজার, মন্দির, গির্জা কোনো ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান রেহাই পায়নি। সরকারের নেতৃত্বে থাকা ব্যক্তিদের অবাধ দুর্নীতি ও লুটপাটের কারণে টানা ৫ বার বাংলাদেশকে দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ান করা হয়। হরতাল-অবরোধের নামে বোমা-গ্রেনেড হামলা চালিয়ে শত শত মানুষ হত্যা করা হয়। তাদের পরিকল্পিত নৈরাজ্যকর পরিস্থিতির কারণে দেশে ব্যবসা-বাণিজ্য ও অর্থনীতিকে ধ্বংস করা হয়।
এমন ভয়াবহ পরিস্থিতি থেকে দেশ ও জাতিকে মুক্তি দেন বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা। তাঁর নেতৃত্বে সরকার গঠনের পর থেকে টানা ১০ বছরে দেশের সকল কলঙ্ক মোচন করা হয়। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, দুর্নীতিকে কঠোর হাতে দমন করা হয়েছে। দেশদ্রোহী চিহ্নিত অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনা হয়েছে। ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকল মানুষের সমঅধিকার ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে। দেশে ব্যবসা-বাণিজ্য ও বিনিয়োগের অনুকুল পরিবেশে সৃষ্টি হয়েছে। ২০০৬-০৭ সালে বিএনপি জোট সরকারের বাজেট ছিল ৬৯ হাজার ৭৪০ কোটি টাকা। ২০১৮-১৯ সালে জাতীয় বাজেট ৪ লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকা। আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারের ১০ বছরে ৭ গুণের বেশি বাজেট বৃদ্ধি পেয়েছে। বিএনপির রেখে যাওয়ায় ১৬শ’ মেগা ওয়াট থেকে এখন প্রায় ২০ হাজার মেগা ওয়াট বিদ্যুৎ দেশে উৎপাদন হচ্ছে। এখন কোনো সংকট নেই। ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দিয়েছেন শেখ হাসিনা। দেশে এখন হরতাল-অবরোধ নেই। প্রতিটি মানুষ সুখে শান্তিতে আছে। মানুষের আয় বৃদ্ধি পেয়েছে। কর্মক্ষমতা বেড়েছে। সব মিলিয়ে বাংলাদেশ এখন একটি উন্নত রাষ্ট্রের মডেল দেশ হিসেবে বিশ্বস্বীকৃতি অর্জনে সক্ষম হয়েছে।
ড. মোমেন বলেন, নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনপি তার জোটসঙ্গীরা দেশে অরাজকতা সৃষ্টি অপচেষ্টা চালাচ্ছে। বিভিন্ন স্থানে বোমাবাজি, সন্ত্রাসী কর্মকান্ড চালিয়ে নির্বাচনের শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নষ্ট করার ষড়যন্ত্র করছে। জনমনে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে।
তিনি বলেন, সিলেটসহ দেশের মানুষ এসব সন্ত্রাসী, জঙ্গিবাদী অরাজকতা সৃষ্টিকারীদের সমর্থন করে না, মানুষ শান্তি চায়, উন্নয়ন চায়, মঙ্গল চায়। এজন্য ৩০ ডিসেম্বর নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে আবারও আওয়ামী লীগকে জয়ী করবে।
ড. মোমেন সকালে বড়দিন উপলক্ষে নগরীর নয়াসড়কস্থ প্রেস বিটারিয়ান চার্চ-এ খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বীদের সাথে কুশল ও মতবিনিময় করেন। এসময় খ্রিষ্টান মিশনারীজদের মধ্যে ডিপন মিজুম চাংমা, উইলসন গ্রে, রাজীব দাস ও ফিলিপ বিভাসসহ বিপুলসংখ্যক খ্রিষ্টধর্মাবলম্বী উপস্থিত ছিলেন। এর আগে ড. মোমেন লাক্কাতুরা চা-বাগানে খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের সাথে বড়দিনের অনুষ্ঠানে যোগদান করেন এবং সেখানে উপস্থিত লোকজনের সাথে কুশল বিনিময় করেন।
দুপুরে ড. মোমেন নগরীর বন্দরবাজার, মহাজনপট্টি, কালিঘাট, লালদিঘীরপাড়সহ আশপাশ এলাকায় গণসংযোগ করেন। পরে করিম উল্লাহ মার্কেটের সামনে এক সংক্ষিপ্ত পথসভা, বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট ও স্বাধীনতা সাংস্কৃতিক পরিষদের উদ্যোগে সাংস্কৃতিকর্মীদের সঙ্গে নৌকার প্রচার কর্মসূচীতে অংশগ্রহণ করেন ড. মোমেন। বিকালে ভাতালিয়া এলাকায় গণসংযোগ, সন্ধ্যায় জিন্দাবাজার মুক্তিযোদ্ধা গলিতে বৃহত্তর জিন্দাবাজারের ব্যবসায়ী উদ্যোগে নির্বাচনী পথসভা, খাদিমনগর ইউনিয়নের সাহেববাজার পাঠানগাওয়ে নির্বাচনী সভা, হাটখোলা ইউনিয়নের উমাইরগাও পশ্চিমপাড়া মাঠে সভা, রাতে নগরীর ১০নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ আয়োজিত স্থানীয় ঘাসিটুলা মাঠে সভায় বক্তব্য রাখেন ড. মোমেন।
এসময় ড. মোমেন বলেন, বাংলাদেশ আজ বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠার দিকে অনেকদূর অগ্রসর হয়েছে। এ অগ্রযাত্রায় সবাইকে শরিক হতে হবে। বঙ্গকন্যা শেখ হাসিনা আরো একবার ক্ষমতায় এলে পুরোপুরি বদলে যাবে আমাদের এ প্রিয় মাতৃভূমি। আমরা পাবো উন্নত দেশ, একই সাথে পাবো উন্নত জীবনও।
এসময় উপস্থিত ছিলেন- আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ, কেন্দ্রীয় সদস্য ও সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বদর উদ্দিন আহমদ কামরান, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সাবেক সংসদ সদস্য শফিকুর রহমান চৌধুরী, মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদ উদ্দিন আহমদ, ডেল্টা হসপিটালের চেয়ারম্যান সমাজসেবী এ.এস.এ মুয়িজ সুজন, শিল্পপতি ফখরুল ইসলাম, জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি, সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আশফাক আহমদ, শ্রমিকলীগের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি প্রকৌশলী এজাজুল হক এজাজ, মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল খালিক, যুগ্ম সম্পাদক ফয়জুল আনোয়ার আলোয়ার, বিজিত চৌধুরী, অধ্যক্ষ সুজাত আলী রফিক, জেলা, মহানগর ও সদর উপজেলা আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবকলীগ, তাঁতিলীগ নেতৃবৃন্দের মধ্যে সৈয়দ এপতার হোসেন পিয়ার, রনজিৎ সরকার, তপন মিত্র, আব্দুল রহমান জামিল, জুবের খান, ডা. আরমান আহমদ শিপলু, অ্যাডভোকেট নুরে আলম সিরাজী, অ্যাডভোকেট আব্দুর রকিব বাবলু, সিটি কাউন্সিলার তারেক উদ্দিন তাজ, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন, সাবেক চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম, জেলা পরিষদ সদস্য মো. শাহনুর, আলম খান মুক্তি, আমির উদ্দিন আহমদ, মুশফিক জায়গীরদার, গুলাম কিবরিয়া মাসুক, ১০নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সভাপতি জালাল উদ্দিন সাবুল, আব্দুল মুক্তিত, আব্দুল আলিম, জাহাঙ্গীর আলম বাবু মিয়া, শরিফ আহমদ, সাংস্কৃতিক সংগঠন নেতৃবৃন্দের মধ্যে গৌতম চক্রবর্ত্তী, কিশোর ভট্টাচর্য জনি, আবু তাহের, অমরেন্দ্র দেব, শৈলেন কর, বিপ্লব শ্যাম পুরকায়স্থ, পার্থ প্রতিম মিত্র, কামাল আহমদ রাজু, জয়দীপ চক্রবর্ত্তী, অটোরিকশা শ্রমিক ইউনিয়ন জেলা সভাপতি জাকারিয়া আহমদ, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা আব্দুল বাছিত রুম্মান, মকবুল হোসেন খান, ইউপি সদস্য বশির আহমদ, আনসার আলী, ডা. জালাল আহমদ, তারা মিয়া, আব্দুল মালেক, এস.এম তারা মিয়া, মনির উদ্দিন, ইন্তাজ আলী, মাসুক মিয়া, শহীদ মিয়া, জুনেদ আহমদ, শাহদাত হোসেন, আব্দুল মান্নান, জাহান উদ্দিন, আল-আমিন, আব্দুল হাশিম, শাহজাহান কবির, ইসলাম উদ্দিন, ইউপি সদস্য নজরুল ইসলাম, ব্যবসায়ী নেতা বাবর বকস, মেহেদি কাবুল, সমশের বকস, রুহুল মালিক সুটন, তাঁতিলীগ নেতা আলমগীর হোসেন, নোমান আহমেদ, শেখ আবুল হাসনাত বুলবুল, স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা কামরান আহমেদ, ছাত্রলীগ নেতা এম.এ ইলিয়াস দিনার, আলী হোসেন আলম, শুকরিয়া মার্কেট ব্যবসায়ী নেতা কিবরিয়া হোসেন নিঝুম, মিলেনিয়াম মার্কেটের ইয়াসিন সুমন, মুক্তিযোদ্ধা গলির রনজিত দেবনাথ, রেজাউল হক রেজু প্রমুখ।

এ বিভাগের অন্যান্য