সিলেটের পাঁচ প্রকল্পসহ সারাদেশে ৩২১ প্রকল্পের উদ্বোধন ও ভিত্তিস্থাপন করলেন প্রধানমন্ত্রী
সিলেটে পাঁচ উন্নয়ন প্রকল্পের তিনটির উদ্বোধন ও দুটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বৃহস্পতিবার (১ নভেম্বর) জেলা প্রশাসন সম্মেলন কক্ষে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এসব প্রকল্পের উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন তিনি।
উদ্বোধন হওয়া প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে- নবনির্মিত কেন্দ্রীয় কারাগারের উদ্বোধন, বিশ্বনাথ-বালাগঞ্জ-জৈন্তাপুর শতভাগ বিদ্যুতায়নের উদ্বোধন, সিলেটের সাতটি উপজেলার ৪৬টি ইউনিয়নের উচ্চগতি সম্পন্ন ইন্টারনেট সংযোগের উদ্বোধন এবং সিলেট সদর উপজেলার শেখ রাসেল টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ ও সিলেট টেক্সটাইল ইনস্টিটিউটের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ সকালে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ২০টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগের আওতায় দেশের ৫৬টি জেলায় এসব প্রকল্পের উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। এ সময় সারাদেশে ৩২১টি প্রকল্পের উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্থর স্থাপন করেছেন।
প্রকল্পগুলোর মধ্যে তিনি ২৯৭টি প্রকল্প উদ্বোধন এবং ২৪টি প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো.নজিবুর রহমান ভিডিও কনফারেন্স সঞ্চালন করেন।
প্রধানমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সে পিরোজপুর, মাদারীপুর, গোপালগঞ্জ, বাগের হাট, চট্টগ্রাম, ঢাকার উত্তরার ১৮ নম্বর সেক্টর এবং ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার এলাকার স্থানীয় জনগণ, প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি এবং উপকারভোগীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।
অনুষ্ঠানে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, এলজিআরডি ও সমবায় মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন, তথ্য মন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক, রেলপথ মন্ত্রী মো.মুজিবুল হক, নৌপরিবহন মন্ত্রী মো.শাজাহান খান, সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর, ডাক ও টেলি যোগাযোগ এবং তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রী মুস্তাফা জব্বার উপস্থিত ছিলেন।
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম গোপালগঞ্জ থেকে, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ডা. মোজাম্মেল হোসেন বাগেরহাট এবং সাবেক স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন উত্তরা থেকে ভিডিও কনফারেন্সে বক্তব্য রাখেন।
বাগেরহাটে সনুন্দরবনের জলদস্যুদের ৩২টি দল এদিন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর কাছে আত্মসমার্পণ করে সরকারের দেয়া সুযোগ গ্রহণ করে সমাজে পুনর্বাসিত হন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তাদের অস্ত্র গ্রহণ করে প্রত্যেকের হাতে সরকার প্রদত্ত এক লাখ করে টাকার চেক তুলে দেন।
প্রধানমন্ত্রী এ সময় সুন্দরবনকে সম্পূর্ণ জলদস্যু মুক্ত ঘোষণা করে ডাকাতি ছেড়ে দেয়া মানুষদের সমাজে পুনর্বাসনে সবরকমের সহযোগিতার আশ্বাস দেন।
প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা ড.তৌফিক-ই-এলাহী চৌধুরী ও ইকবাল সোবহান চৌধুরী এবং তথ্য প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট তারানা হালিম, স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী ডা.জাহিদ মালিক, বিদুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু, যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী ড.বীরেন সিকদার, এলজিআরডি ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী মশিউর রহমান রাঙ্গা, বস্ত্র ও পাট প্রতিমন্ত্রী মীর্জা আজম, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফসহ সংসদ সদস্যবৃন্দ, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ও সচিববৃন্দ এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
এই প্রকল্পগুলো হচ্ছে- সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন ১৭টি প্রকল্প, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের ৩১টি, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ২টি, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ৯৮টি, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের ১১টি, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের ৬টি, মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ের ৩টি, ডাক ও টেলিযোগাযোগ এবং তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের ১টি, বিদ্যুৎ, জ্বালানি এবং খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের ১১২টি, এলজিআরডি ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের ৪টি, তথ্য মন্ত্রণালয়ের ৩টি, রেলপথ মন্ত্রণালয়ের ২টি, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ৫টি, পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের ১৩টি, মৎস্য ও প্রাণি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের ২টি এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের আওতাধীন বেপজা’র ১টি প্রকল্প।
অনুষ্ঠানে বস্ত্র ও পাট প্রতিমন্ত্রী মীর্জা আজম প্রধানমন্ত্রীকে স্থানীয় তাঁতীদের বোনা একটি মসলিন শাড়ি উপহার দেন। বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় দেশের ঐতিহ্য মসলিনের হৃত গৌরব ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নিয়েছে। সূত্র : বাসস।