সিলেটে শিশুদের জন্য আনন্দ স্কুল যেন মুহিবুর রহমান একাডেমি
নাম ডাকা, ইয়েস স্যার। এসব উঠে গেছে। উন্নত দেশের মতো ডিজিটাল পদ্ধতিতেই চলছে স্কুল ও কলেজের সব কর্মকাণ্ড। ক্লাসে ঢোকার মুখেই ডিজিটাল অ্যাটেনডেন্স। আঙুলের ছাপ দিয়ে ঢুকতে হয়। কোনো শিক্ষার্থী অনুপস্থিত থাকলে অভিভাবকের মোবাইল ফোনে পৌঁছে যাচ্ছে এসএমএস। ক্লাস হচ্ছে মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টরে। আর এগুলো হয় মুহিবুর রহমান ফাউন্ডেশনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে এ ফাউন্ডেশনের অধিনে চারটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান যথাক্রমে সিলেট কমার্স কলেজ, সিলেট বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি কলেজ মুহিবুর রহমান একাডেমি, ইডেন গার্ডেন স্কুল এন্ড কলেজ । প্রিয় পাঠক আজ মুহিবুর রহমান একাডেমির নিয়ে ক্যম্পাস প্রতিবেদক শাকিল মোস্তফা জানাচ্ছে কেস স্টাডি তিন ফরম্যাটে..
কেস স্টাডি ১:
শিশুর মনস্তত্ত্ব কাদামাটির মত ? আমরা কি পেরেছি স্কুলগুলোকে শিশুদের উপযোগী করে সাজাতে? এখনো দেশের সব শিশুর প্রাথমিক শিক্ষাই নিশ্চিত নয়, তা ছাড়া যা আছে তাতেও নেই আনন্দের স্থান, আছে শুধু বোঝা, যা শিশুদের জন্য মোটেও আকর্ষণীয় নয়। এই ব্যর্থতা সব প্রজন্মসহ বর্তমান প্রজন্ম পর্যন্ত প্রতিনিয়ত অনুভব করে। ভাবতে অবাক লাগে বর্তমান উন্নত বিশ্বে আমাদের সন্তানরা আজও সেই পেছনে পড়ে আছে মান সম্মত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অভাবে অনেক বিদ্যালয়ে আনন্দের স্থান অপ্রতুল?
কেস স্টাডি ২:
ফাহিম ও নুসরাত জাহান। দুজনেই মুহিবুর রহমান একাডেমির ছাত্র এবং ছাত্রী তারা বাংলা মিডিয়ামের ৫ম শ্রেণীর শিক্ষার্থীদ্বয় । বছরের শেষ লগ্নের একটি ক্লাস পার্টিতে দুজনেই সঞ্চালনা করছিল। কিন্তু সঞ্চালনা শুনে বুঝার উপায় নেই যে, দুজনে মাত্র ক্লাস ফাইভ এর শিক্ষার্থী । এমনই মেধাবী শিক্ষার্থী তৈরি করছে মুহিবুর রহমান একাডেমী। বছরের শেষ প্রান্তে গতকাল একটি ক্লাসে এমন চিত্র লক্ষ্য করেন সিলেট সিটি নিউজ এর প্রতিবেদক। এটি নগরীর ৪৫ পায়রা, দর্শনদেউড়ি এলাকায় অবস্থিত মুহিবুর রহমান একাডেমী। জানাযায় বিশেষ বিশেষ দিনে ইংরেজী ও বাংলা মাধ্যমের ছাত্র-ছাত্রীদের স্ব-হস্তে তৈরি করা অনেক নান্দনিক চারু ও কারুকলার প্রদর্শনীস করে, পাশাপাশি নাচ, গান ও আবৃতিতো রয়েছে, অন্যদিকে কৌতুক ও ইসলামী সংগিত যেন তাদের মুখে বেশ মানায় ভাল আর এমন সৃজিত অর্জন মুগ্ধ করে শিক্ষক শিক্ষিকাসহ অভিভাবকের । একাডেমির প্রিন্সিপাল মো. নুরুল ইসলাম জানান নগরীর পায়রা মুহিবুর রহমান একাডেমি মানসম্পন্ন ইংরেজি ও বাংলা মিডিয়াম স্কুলটি শুরু থেকেই অভিভাবকদের আস্থা বজায় রাখতে সক্ষম হয়েছে। যার ফলে বিদ্যালয়টির সুনাম ছড়িয়েছে সিলেট সীমানা ছাড়িয়ে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে । একাধিক উদ্যোমী শিক্ষক-শিক্ষিকাদের আপ্রাণ প্রচেষ্টায় বিদ্যালয়টি সকল বোর্ড ও পাবলিক পরীক্ষায় আশানুরূপ সাফল্য ধরে চেষ্টায় মৌনব্রত।
প্রথমিক শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক ড. আবু হেনা মোস্তফা কামাল অনলাইনে বলেন মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুমে শিক্ষার্থীরা তাদের শিক্ষা গ্রহনে আনন্দ পায় এবং তারা তদের পাঠ খুব সহজেই বুঝতে পারে। আইসিটি ভিত্তিক শিক্ষাকে আরো কার্যকর করতে দেশে শিক্ষার মান আরো উন্নত করা প্রয়োজন। তিনি বলেন, শিক্ষকরা যাতে শিক্ষার্থীদের লেখা পড়ার মান আরো উন্নত করতে পারেন, এ জন্য তাদেরকে দু’সপ্তাহের প্রশিক্ষন দেয়া উচিত । মুুুমহিবুর রহমান একাডেমির রেক্টর সালমা খানম বলেন আমাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রত্যেক শিক্ষকদের জন্য আলাদা প্রশিক্ষণ দেয়া হয় যাতে শিশুদের মনমানসিকতা তারা বুঝেন,এছাড়া এসব প্রশিক্ষণে ছাত্র শিক্ষহ উপকৃত হয় বলে মনে করেন তিনি।
কেস স্টাডি ৩ :
একাডেমির বাংলা মিডিয়ামের ৪র্থ শ্রেনীর ছাত্র মেহেদী হাসান দীপ্ত ওসমানী মেডিকেল স্কুলের ছাত্র ছিল। সে জানায়- আমি স্কুল পরিবর্তন করে এখানে আসার পর অনেক কিছু শিখেছি। বিশেষ করে আমাদের ক্লাসে স্টুডেন্টদের তিনটি ভাগে ভাগ করে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। তিনটি গ্রুপের নামও রাখা হয়েছে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের সাথে মিল রেখে। ৫২, ৬৯, ৭১। এটি একটি আদর্শ প্রতিষ্ঠান। আমি এখানে না পড়লে হয়তো বুঝতেই পারতাম না। তুমি কি জন্য স্কুলে আসো? প্লের স্টুডেন্ট মারিয়া’র কাছে এমন প্রশ্ন করা হলে সে জানায়, স্কুলে আসতে আমার ভালো লাগে। আমি অন্য বাবুদের সাথে খেলতে পারি। মজায় মজায় পড়ি ও আনন্দ করি। একাডেমির পরিবেশ বলছে সময়ের সঙ্গে ছাত্রছাত্রীদের জীবনযাত্রায় স্কুলে নানন্দনিকতায় এসেছে পরিবর্তন। তেমনি শিক্ষাক্ষেত্রে শিশুদের জীবনমান উন্নয়নের স্বপ্ন পূরণে মুহিবুর রহমান একাডেমিতে যোগ হয়েছে নতুনত্ব। দিনবদলের তাগিদে সচেতন সমাজের চাহিদা যেমন বাড়ছে, তেমনি আজ কালবাহিরের দেশের সাথে তাল মিলিয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বাড়ছে প্রতিযোগিতা। সিলেটের স্বনামধন্য ফাউন্ডেশন মুহিবুর রহমান ফাউন্ডেশনের শিক্ষা উদ্যোগের একটি প্রতিষ্ঠান মুহিবুর রহমান একাডেমিতে যোগ হয়েছে শিশুদের স্বপ্নপূরণের জন্য নতুনত্ব । সিলেটের তুলনামূলক স্কুলের আসবাবপত্রের তুলনায় শিক্ষার জন্য একধাপ এগিয়ে রয়েছে ।