কেমন হলো ফেবারিটদের প্রস্তুতি
দরজায় কড়া নাড়ছে বিশ্বকাপ। আর মাত্র তিনদিন, এরপর শুরু হবে ফুটবলের সবচেয়ে বড় মহারণ। রাশিয়ায় ১১টি শহরের ১২টি ভেন্যুতে চলবে এ জমজমাট লড়াই। ১৫ জুলাই শিরোপা ফয়সালার মধ্য দিয়ে ৩২ দলের এই মহাযঞ্জের পর্দা নামবে। এরই মধ্যে মূল আসরকে সামনে রেখে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি সেরে নিয়েছে টুর্নামেন্টের ফেভারিটরা। কেমন হলো তাদের বিশ্বকাপ প্রস্তুতি। চলুন দেখে নিই।
নেইমার ফেরা এবং দারুণ জয়: বিশ্বকাপের আগে নেইমার সুস্থ হয়ে উঠবেন কিনা তা নিয়ে ছিল সংশয়। কিন্তু নেইমার বিশ্বকাপের আগে ব্রাজিলের জার্সিতে দুটি প্রস্তুতি ম্যাচেই মাঠে নেমেছেন। দারুণ দুই গোল করেছেন ক্রোয়েশিয়া এবং অস্ট্রিয়া ম্যাচে।দাপট দেখিয়ে দুই ম্যাচেই জিতেছে ব্রাজিল। গোল পেয়েছেন নেইমার, কৌতিনহো, জেসুস এবং ফিরমিনো। এর থেকে ভালো প্রস্তুতি নিয়ে বোধ হয় ব্রাজিল বিশ্বকাপে যেতে পারতো না।
স্বপ্ন দেখাচ্ছেন মেসি:বিশ্বকাপ থেকে প্রায় বাদই পড়ে যেত, যদি কি-না লিওনেল মেসি না থাকতেন! মনে আছে বাছাই পরীক্ষার কথা। ইকুয়েডরের বিপক্ষে দুর্দান্ত হ্যাটট্রিক করে দলকে উপহার দেন বিশ্বকাপের টিকিট। প্রীতি ম্যাচেও সেই মেসির ঝলক। হাইতির বিপক্ষে নেমেই হ্যাটট্রিক তুলে নেন কিং লিও। আর ম্যাচটি ৪-০ ব্যবধানে জিতে হোর্হে সাম্পাওলির দল। দ্বিতীয় ম্যাচটি ইসরায়েলে খেলার কথা ছিল। কিন্তু নিরাপত্তার অভিযোগে সেটা বাতিল করে দেয় আলবিসেলেস্তেরা। সব মিলে ১৬ জুন আইসল্যান্ডের বিপক্ষে নিজেদের বিশ্বকাপ মিশন শুরু করা আর্জেন্টিনার মূল ভরসা যে মেসি, এটা বলাই যায়।
ফ্রান্সের তরুণ-ঝলক: তারুণ্যে ঠাসা স্কোয়াড নিয়েই রাশিয়ার মঞ্চে নামছে ফ্রান্স। ‘সি’ গ্রুপে থাকা দলটির প্রতিপক্ষ এবার অস্ট্রেলিয়া, পেরু আর ডেনমার্ক। ১৬ জুন অসিদের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে মূল লড়াই শুরু করবে ফরাসিরা। তার আগে প্রস্তুতিটা খুব একটা খারাপ করেনি টুর্নামেন্টের অন্যতম ফেভারিটরা। চারবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ইতালিকে উড়িয়ে নিজেদের শক্তিমত্তার জানান দিয়েছিল ফ্রান্স। অবশ্য গত শনিবার শেষ প্রস্তুতিতে যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে ১-১ ব্যবধানে ড্র করেছে গ্রিজমান-এমবাপ্পেরা। দুই ম্যাচেই ছিল তরুণ-ঝলক।
অম্ল-মধুর স্পেন: দলে তারকার শেষ নেই। তবু সবসময় সমান যায় না। ২০১০ বিশ্বকাপের শিরোপা জেতা স্পেন এবারও রয়েছে ফেভারিটের চেয়ারে। বাছাইপর্বের পাঠ চুকিয়ে রাশিয়ার টিকিট কাটা রামোস-পিকেরা এবার মুখিয়ে আছে মূল মঞ্চে আলো ছড়াতে। ইতিমধ্যে সেরে ফেলেছে প্রস্তুতি। প্রথম ম্যাচে সুইজারল্যান্ডের বিপক্ষে ১-১ গোলে ড্র করার পর শনিবার তিউনেশিয়ার সঙ্গে ১-০ ব্যবধানের কষ্টার্জিত জয় তুলে নিয়েছে স্প্যানিশরা। প্রীতি ম্যাচে এমন নাজুক ফল হয়তো চিন্তায় ফেলতে পারে সমর্থকদের। কিন্তু এই ধাপটাকে গুরুত্বের চোখে দেখছেন না স্পেনের সবচেয়ে অভিজ্ঞ খেলোয়াড় আন্দ্রেস ইনিয়েস্তা। সম্প্রতি এ নিয়ে তার অভিমত, ‘প্রীতি ম্যাচের ফল নিয়ে ভাবার কিছু নেই। আমাদের চূড়ান্ত আসরে ভালো করতে হবে।’
সৌদিবধেই সান্ত্বনা জার্মানির: বিশ্বকাপকে সামনে রেখে দুটি প্রীতি ম্যাচ খেলে ফেলল আসরের অন্যতম শক্তিশালী দল জার্মানি। কিন্তু দুটির একটিতেও সমর্থকদের মন ভরাতে পারেনি চারবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা। প্রথম ম্যাচে অপেক্ষাকৃত দুর্বল প্রতিপক্ষ অস্ট্রিয়ার কাছে ২-১ গোলে হেরে যায় ওজিলরা। সবশেষ গত শুক্রবার সৌদি আরবের বিপক্ষে কোনোমতে জিতেছিল জার্মানি। তাতেও খুব বেশি চিন্তার কারণ দেখছেন না দলের কোচ জোয়াকিম লো। বলে দিয়েছেন, সময়মতো ঠিকই আলো ছড়াবে তার দল। ১৭ জুন মেক্সিকোর বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে বিশ্বকাপের আসল লড়াই শুরু করবে জার্মানরা। এ বছর ‘এফ’ গ্রুপে থাকা তাদের বাকি দুই প্রতিপক্ষ সুইডেন ও দক্ষিণ কোরিয়া।
ইংল্যান্ডের আগাম বার্তা :প্রস্তুতিটা দারুণ হয়েছে ইংল্যান্ডের। প্রথম ম্যাচে নাইজেরিয়াকে ২-১ গোলে হারানোর পর গত শুক্রবার কোস্টারিকাকে ২-০ ব্যবধানে উড়িয়ে দেয় হ্যারি কেনরা। দুর্দান্ত দুই জয়ে প্রতিপক্ষদের মনে হয় আগাম বার্তাই দিয়ে রাখল দলটি।