ঈদের কেনাকাটা নজর কেড়েছে জামদানি
রাজধানীর দক্ষিণখানের হজক্যাম্পের সামনে চলছে মাসব্যাপী ‘আন্তর্জাতিক জামদানি তাঁতবস্ত্র রফতানি মেলা’। মেলায় দেশীয় বুটিকস, শাড়ি, থ্রিপিস ছাড়াও রয়েছে বিদেশি নানা পোশাক। সহনীয় মূল্যে ছেলেদের পোশাকসহ ঘর-গৃহস্থালির নানা উপকরণও মিলছে।
ক্রেতা-বিক্রেতারা বলছেন, মুসলিম সম্প্রদায়ের ধর্মীয় উৎসবকে ঘিরে এ মেলা বসলেও এখন এটি হয়ে গেছে সার্বজনীন। এখানে আনন্দের সঙ্গে পছন্দের জিনিস কেনার সুযোগ পাচ্ছেন ক্রেতারা। বাংলাদেশ উইভার্স প্রডাক্ট অ্যান্ড ম্যানু. বিজনেস অ্যাসোসিয়েশন আয়োজিত এ মেলায় দেশি পণ্যকেই প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে বলে জানান আয়োজক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। বৈরী আবহাওয়ার কারণে রোজার প্রথম দিকে বিক্রিবাট্টা কম হলেও এখন জমে উঠেছে এই ঈদ মেলা। ক্রেতা আকর্ষণে দেওয়া হচ্ছে নানা লোভনীয় অফার।
আয়োজকরা জানান, শতাধিক স্টলে বিভিন্ন রকমের পণ্যের পসরা সাজিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। এই মেলায় সকাল থেকে রাত ১২টা অবধি চলে কেনাবেচা। সকাল থেকে হরেক রকম দোকান সাজিয়ে বসলেও মেলা জমে ওঠে বিকেলের পর। এই ঈদ মেলা চলবে চাঁদ রাত পর্যন্ত।
গতকাল শনিবার সরেজমিনে দেখা যায়, মেলায় স্থান পেয়েছে টাঙ্গাইল ও সিরাজগঞ্জের তাঁতের শাড়িসহ নানা ধরনের শাড়ি। এ ছাড়া রয়েছে থ্রিপিস, পাঞ্জাবি, ফতুয়া, কুর্তি, ওড়নাসহ বাহারি সব পোশাকের সমারোহ। দেশি-বিদেশি নানা অলঙ্কারও স্থান পেয়েছে মেলায়। ধাতব অলঙ্কার, পুঁতির মালাসহ শোভা পাচ্ছে মেয়েদের সাজসজ্জার নানা প্রসাধনী।
ঈদ মেলায় শিশুদের বিভিন্ন পোশাকের পাশাপাশি রয়েছে ছেলেদের পোশাকও। দোকানিরা জানান, গ্রীষ্ফ্মকালীন ঈদের কথা মাথায় রেখে সুতি কাপড়কে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। আর সহনীয় মূল্যে এক জায়গায় পছন্দের সব পোশাক পেয়ে খুশি ক্রেতারাও। শিশুদের পোশাকের দোকান জিহাদ ফ্যাশনের বিক্রয়কর্মী মো. নাজিম আহমেদ নূর বলেন, চাহিদা অনুযায়ী শিশুদের জন্য বাহারি ডিজাইনের পোশাক রয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে, বাদশা, গোলফ্রক, সিল্ক্ক, লোন, লিনেন, বাটিক, ব্লক, প্রিন্টের পোশাক। প্রতিটি পোশাকের মূল্য ৩৫০ থেকে ৫১০০ টাকা।
গৃহসজ্জায় মেলায় পাওয়া যাচ্ছে হরেক ডিজাইনের কৃত্রিম ফুল। খাজা স্টোরের স্বত্বাধিকারী নূরে আলম জানান, এখানে ২০ থেকে এক হাজার টাকার মধ্যে ফুল ও ফুলদানি পাওয়া যাচ্ছে। হরেক রঙ ও ডিজাইনের কৃত্রিম ফুল পেতে এখানে সব সময়ই ক্রেতার ভিড় থাকে।
মেলা উপলক্ষে গোল্ডেন অফার দিয়েছে তামিমা জামদানি। এই স্টোরের বিক্রয়কর্মী শাহেদ হোসেন ও মোহাম্মদ হাবীব জানান, ‘গোল্ডেন অফার’ হিসেবে একটি টাঙ্গাইলের তাঁতের শাড়ি ৪০০ টাকা, দুটি শাড়ি ৭০০ টাকা ও তিন পিস শাড়ির দাম রাখা হচ্ছে এক হাজার টাকা। এ ছাড়াও মেলা উপলক্ষে ঢাকাইয়া জামদানি ৩ হাজার টাকা থেকে ৫০ হাজার টাকার মধ্যে পাওয়া যাচ্ছে। তুলনামূলকভাবে স্বল্প মূল্যেই এখানকার শাড়ি ক্রেতারা হাতে পাচ্ছেন।
সাত রঙ পাঞ্জাবি ঘরের বিক্রয়কর্মী আমির হোসেন বলেন, তাদের স্টলে দেশি ডিজাইনে হরেক রকমের পাঞ্জাবি পাওয়া যাচ্ছে। এর মধ্যে অন্যতম হলো সিল্ক্কের পাঞ্জাবি। এখানে ৫০০ থেকে ১২শ’ টাকার মধ্যে পাঞ্জাবি পাওয়া যাচ্ছে।
উদ্যোক্তাদের উৎসাহ দিতেই এই মেলার আয়োজন বলে জানান মেলা আয়োজক সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক ওসমান গণি। তিনি বলেন, দেশি পণ্যকে তুলে ধরতে ও উদ্যোক্তা বাড়াতে এ ধরনের মেলা নিয়মিত আয়োজন করা হয়। ক্রেতাসহ দর্শনাথীদের মেলা নিয়ে আগ্রহ রয়েছে বেশ। এবার এই মেলা থেকে অনেক পণ্য রফতানির সম্ভাবনা রয়েছে বলে তিনি জানান। মেলা প্রসঙ্গে দক্ষিণখান থানা স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি মো. আনিসুর রহমান নাঈম সমকালকে বলেন, দক্ষিণখানে পাঁচ লক্ষাধিক লোকের বসবাস। ফলে মেলায় ক্রেতার সংখ্যা বেশি। আর এ মেলাকে ঘিরে অনেক উদ্যোক্তাও তৈরি হয়। এটা দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখছে।
এদিকে এবার ঈদের কেনাকাটায় নতুন অ্যাপ নিয়ে এসেছে বিকাশ। এই অ্যাপের মাধ্যমে পেমেন্ট করলে ওকোডের নির্দিষ্ট আউটলেটে পাওয়া যাবে সর্বোচ্চ ২৫ শতাংশ পর্যন্ত ক্যাশ ব্যাক।