সাফল্যর রেকর্ডে যেভাবে সিলেট কমার্স কলেজেএগিয়ে
মবরুর আহমদ সাজু
পরীক্ষা মানেই টেনশন, বাড়তি চাপ। এ অবস্থা থাকে ফল প্রকাশের আগমুহূর্ত পর্যন্ত। গতকাল রোববার এবারের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল প্রকাশ হয়েছে। ভালো ফলধারী শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের আনন্দের শেষ নেই। কিন্তু তাদের চোখেমুখে দেখা দিয়েছে আরেক টেনশন। এবারের টেনশন ভালো কলেজে ভর্তি হওয়া নিয়ে। কারণ, যে পরিমাণ শিক্ষার্থী জিপিএ ৫ পেয়েছে, মানসম্মত কলেজগুলোতে সে পরিমাণ আসন নেই। তবে সংশ্নিষ্টরা আশ্বস্ত করেছেন, এবার কোনো আসন সংকট থাকবে না। শতভাগ মেধার ভিত্তিতে ভর্তি করা হবে। কোটায় আবেদনকারী শিক্ষার্থীরা মেধায় সুযোগ না পেলে তাদের বিশেষভাবে ভর্তি করা হবে। নিজস্ব ক্যাম্পাসে স্বপ্নের হাতছানি .আধ্যাত্মিক নগরী সিলেটের কোলাহল মিলিয়ে গিয়ে নতুন স্বপ্ন জাগানিয়া স্ব-মহিমায় উদ্ভাসিত।নিজস্ব ক্যাম্পাসে স্বপ্নের হাতছানিসিলেট কমার্স কলেজদিনে দিনে সমৃদ্ধ হয়েছে এর প্রতিটি পথ ,একাডেমিক কৃতিত্বে বর্ণিল হয়েছে এর যাত্রা । মেধার স্বীকৃতি পেয়েছে অসংখ্য শিক্ষার্থী । কর্মজীবনে সাফল্যের দ্যুতি ছড়িয়ে একই সাথে ঝলসে উঠেছে সিলেট কমার্স কলেজের নাম।বর্তমানে সিলেট কমার্স কলেজ পূর্ণাঙ্গ ডিজিটাল ক্যাম্পাস রূপান্তরের মাধ্যমে সরকার গৃহিত ডিজিটাল বাংলাদেশ বির্নিমানের পথে আর একধাপ এগিয়ে চলছে এ সম্পর্কে সিলেট কমার্স কলেজের রেক্টর শামসুর রহমান ৎ বলেন, সিলেট কমার্স কলেজ সিলেট বোর্ডে প্রথম স্থানসহ প্রতিবছরই মেধাতালিকায় স্থান পাচ্ছে। এর পেছনে রয়েছে মুহিবুর রহমান ফাউন্ডেশনের নিত্য নতুনসংযোজন ও সুষ্ঠ নজরদারি। আজকের এই বায়োম্যাট্রিক্স এটেনন্ডেন্স ডিভাইস, ও এম আর মেশিন, সিসি টিভি ও ওয়েভসাইট ফাউন্ডেশনের সেই কার্যক্রমেরই ধারাবাহিকতা।শিক্ষার্থীরা ।অত্যাধুনিক ল্যাব ,সমৃদ্ধ পাঠাগারের পাশাপাশি এ কলেজের সবচেয়ে বড় আকর্ষণ হচ্ছে ’প্রাইভেট পড়াকে না বলা’ শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে তিনি কমার্স করেজের চেয়ারম্যান শিক্ষাবিদ মুহিবুর রহমান বলেন, শিক্ষার্থীদের সব কিছুর উর্ধ্বে মানবিক মূল্যবোধ সম্পন্ন মানুষ হতে হবে। আজকের এই পদক্ষেপের ফলে শিক্ষার মান উন্নয়ন, শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত সহসার্বিক দিক দিয়ে এক অনন্য নজির স্থাপিত হলো। তিনি তথ্য প্রযুক্তির সম্মিলনে এ কলেজ কে “মডেল কলেজ” হিসাবে আখ্যায়িত করে আগামি দিনেও এ ধারা অব্যাহতো থাকবেনবীন প্রজেন্মর পছন্দের শীর্ষে কলেজমেধাতোমাদের, নির্দেশনা আমাদের, সফলতা গোটা জাতির।এই স্লোগান কে সামনে রেখে ২০০৫ সালে চালু হয়েছিলো মুহিবুর রহমান ফাউন্ডেশনের প্রথম প্রতিষ্ঠান সিলেট কমার্স কলেজ। সিলেট শহরের ঐতিহ্যবাহী এলাকা দরগা মহল্লায় প্রতিষ্টানটির ক্যাম্পাস। প্রথম ব্যাচের ১০জন শিক্ষার্থী ২০০৭ সালে অংশগ্রহন করে HSC পরীক্ষায়। শতভাগ রেজাল্ট নিয়ে চালু হওয়া কমার্স কলেজের অগ্রযাত্রার পরিপূর্নতা আসে প্রতিষ্টার ৫ম বছর ২০০৯ সালে। এ বছরে প্রতিষ্টানটি থেকে ৬৩ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশগ্রহন করে ১২ টি A+ সহ শতভাগ পাশ করেঅর্জন করে নেয় বোর্ডের শীর্ষ স্থানটি।মুহিবুর রহমান ফাউন্ডেশনের এইপ্রতিষ্টানটির সফলতা বা অগ্রযাত্রার আরেকটি চমক হল প্রায় ৯০% শিক্ষার্থীদের SSC রেজাল্টের চেয়ে HSC রেজাল্টে জিপিএ বেড়েছে। এই পরিসংখ্যানে সিলেটের যে কোন কলেজ থেকে অনেক এগিয়ে আছে সিলেট কমার্স কলেজ। প্রতিষ্টানটির ২০১১ সালের পরিসংখ্যানে দেখা যায় ওই বছর HSC পরীক্ষায় অংশ নেয় প্রতিষ্টানটির ১৮৪জন শিক্ষার্থী। ৩১ জন শিক্ষার্থী A+ সহ পাশ করে শতভাগ। মজার ব্যাপার হলো এই ব্যাচের শিক্ষার্থীদের মধ্যে SSC তে A+ ছিলো মাত্র ৬ জন শিক্ষার্থী। সফলতার অগ্রযাত্রাকে আরেক নতুন মাত্রা প্রদান করে ২০১২ সালের শিক্ষার্থীদের HSC রেজাল্ট। ওই বছর পরীক্ষায় অংশগ্রহন করে ২৯১ জন শিক্ষার্থী। শতভাগ পাশ সহ A+ আসে ১৩৩টি। ওই ব্যাচের শিক্ষার্থীদের মধ্যে SSC তে A+ ছিলো মাত্র ৩৫ জনের।সিলেট কমার্স কলেজের এমন সফলতা সম্বন্ধে জানতে চাইলে মুহিবুর রহমান ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মোঃ মুহিবুর রহমান জানান, লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যে অটুট থাকলে আর স্বদিচ্ছা থাকলে সমাজের যে কোন অবস্থান থেকেই শিক্ষিত সমাজ গঠনে শিক্ষার্থীদের যথাযত তত্ত্বাবধানের মাধ্যমে ব্যাক্তি, সমাজ ও জাতির উন্নতি করা সম্ভব। আমাদের প্রতিষ্টানের এবং শিক্ষার্থীদের সফলতার পিছনে মূলত সঠিক নিয়মানুসারে পাঠদান এবং অটুট শৃংখলাই কাজ করেছে। আমাদের প্রতিটি শিক্ষার্থিকে তার মেধার সর্বোচ্ছ প্রয়োগের জন্য আমরা নিত্য নতুন পদ্ধতি ব্যবহার করে থাকি। যার ফলে প্রায় প্রত্যেক শিক্ষার্থীই HSC তে তাদের জিপিএ এর উন্নতি ঘঠায়। কোন প্রকার ব্যবসায়ী ফায়দার কথা চিন্তা না করে প্রতিটি দুর্বল শিক্ষার্থীদের জন্যই আমরা বিশেষ ব্যবস্থা নিয়ে থাকি। আমাদের কলেজের যে কোন শিক্ষার্থী আমাদের নির্দেশনা অনুসরন করলেই আমরা তার সফলতার নিশ্চয়তা দিতে পারি। যে কোন শিক্ষার্থী সে যতই দূর্বল হোক আমরা চাই থাকে সর্বোচ্ছ সহযোগিতা করে পরীক্ষায় কৃতকার্য করাতে।প্রতিষ্টানেরজন্মলগ্নথেকেআমাদের কোন ছাত্র পরীক্ষায় অকৃতকার্য হয়নি।তিনি আরো জানান, আমাদের ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য আমরা হোস্টেলের ব্যবস্থা করেছি। আমাদের আবাসিক বা অনাবাসিক ছাত্রছাত্রীদের কোন প্রাইভেট শিক্ষা নিতে হয়না। শুরু থেকেই শীর্ষ দশ তালিকায় স্থান করে। ২০০৯ সালে বোর্ড সেরা ফলাফল কলেজের সুনাম বাড়িয়ে দেয়। সেই থেকে আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। গেলবছর ও একইভাবে শীর্ষ পাঁচে স্থান করে নিয়েছে কলেজ টি – মুহিবুর রহমান আরো বলেন, শিক্ষার পাশাপাশি সুস্থ মননশীলতা গড়তে তার প্রতিষ্টানটি বিভিন্ন জাতীয় ও আন্তরজাতিক দিবস ও নিয়মিত শিক্ষাসফর, খেলাধোলার ব্যবস্থা করে থাকে। প্রতি বছর যে কোন একটি পার্ক ভাড়া করে শিক্ষার্থীদের নিয়ে দিনব্যাপি করা হয় “সুহৃদ বন্ধন” নামে সুস্থধারার বিনোধনের অনুষ্টান।