এইচএসসি,পরীক্ষার হলে শিক্ষকদের আচরণে ক্ষুব্ধ পরীক্ষার্থীরা বিপাকে..

 

প্রশ্নফাঁস ঠেকানোসহ বিভিন্ন কারণে এবারের এইচএসসি পরীক্ষা কেন্দ্র, হলে সরকার থেকে দেয়া হয়েছে কড়া নির্দেশনা। সরকারের ভাবমূর্তি রক্ষায় কেন্দ্রগুলোর পক্ষ থেকেও নেয়া হয়েছে শক্ত ভূমিকা।

কিন্তু সব ঠিক থাকলেও পরীক্ষার হলে সিলেট এমসি ও সরকারী কলেজের বেশ কয়েকজন শিক্ষকের আচরণে ক্ষুব্ধ পরীক্ষার্থীরা।

ক্যাম্পাস সূত্রে জানা গেছে, একাধিকবার অভিযোগ দেয়ার পর গত সোমবারের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ের এইচএসসি পরীক্ষা শেষে এমসি কলেজ শিক্ষার্থীরা কলেজ অধ্যক্ষের কাছে এবং সরকারী কলেজের শিক্ষার্থীরা কলেজ অধ্যক্ষ ও এমসি কলেজ অধ্যক্ষের কাছে পরীক্ষার হলে শিক্ষকদের ‘আপত্তিকর মন্তব্যে’র বিষয়ে নালিশ করেন।

এসময় লিখিতাকারে নৈর্ব্যক্তিক পরীক্ষার ২৫ মিনিটে উপস্থিতি নিশ্চিত করা, বসতে সমস্যা হলে ভাঙা বেঞ্চেও সোজা হয়ে বসতে হবে নড়াচড়া করা যাবে না, পুলিশ দিয়ে রুম থেকে বের করে দেয়ার হুমকি, হল পরিদর্শকদের কর্কশ ভাষায় শাসানো ও কলেজের নাম ধরে আপত্তিকর মন্তব্যসহ সাতটি বিষয়ে এমসি কলেজ অধ্যক্ষকে অভিযোগ জানান ক্ষুব্ধ পরীক্ষার্থীরা।

ক্যাম্পাস সূত্রে জানা যায়, শিক্ষার্থীদের অভিযোগের বিষয়টি আমলে নিয়ে দুই কলেজের অধ্যক্ষ ‘আপত্তিকর মন্তব্যকারী’ এক শিক্ষককে নিয়ে বৈঠকে বসেন। এসময় বিষয়টির সুরাহা নিয়ে আলোচনা করেন শিক্ষকরা।

সবশেষ আজ বৃহস্পতিবার (১২এপ্রিল) হল পরিদর্শকের বিরুদ্ধে ‘খাতা কেড়ে’ নেয়ার অভিযোগ তুলে এমসি কলেজের প্রধান ফটকে আধঘন্টাব্যাপী সড়ক অবরোধ করে রাখে শিক্ষার্থীরা। এসময় দুই কলেজের অধ্যক্ষের মধ্যস্থতায় সড়ক অবরোধ প্রত্যাহারও করেন শিক্ষার্থীরা।

নগরীর টিলাগড়ে প্রতিবেশী দুই কলেজের শিক্ষকদের মধ্যে মনস্তাত্ত্বিক দ্বন্দ দীর্ঘদিন ধরে চলে আসছে। এরই জের ধরে অন্যান্য সময়ের চেয়ে এবারের এইচএসসি পরীক্ষার হলে ইনভিজিলেটরের দায়িত্বে থাকা শিক্ষকরা আপত্তিকর আচরণ করছেন বলে অভিযোগ শিক্ষার্থীদের।

এমসি ও সরকারী কলেজের একাধিক পরীক্ষার্থী এ প্রতিবেদককে বলেন, কিছু শিক্ষক নিজেদের ব্যক্তিগত বিষয়কে পরীক্ষার হল পর্যন্ত টেনে এনেছেন। পরীক্ষার হলে মনোসংযোগে ব্যঘাত সৃষ্টি করা শিক্ষকদের এধরণের মন্তব্য বিব্রতকর। এরকম চলতে থাকলে এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফলে এসবের প্রভাব পড়বে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেন শিক্ষার্থীরা।

এমসি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর নিতাই চন্দ্র চন্দ বলেন, দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষার্থীরা প্রতিষ্ঠান দু’টিতে পরীক্ষা দিয়ে আসছে, এগুলো নতুন বিষয় না। একটা মন্তব্যকে কেন্দ্র করে শিক্ষার্থীরা বিষয়টাকে ইস্যু করে ফেলেছে।

দুই কলেজের শিক্ষকদের মনস্তাত্ত্বিক লড়াইয়ের ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি এ প্রতিবেদককে বলেন, সরকারী কলেজের প্রিন্সিপালসহ আমরা বিষয়টির সমাধান করে দিয়েছি। পরবর্তীতে আর এধরণের বিষয় ঘটবে না বলে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন তিনি।

সিলেট সরকারী কলেজ অধ্যক্ষ প্রফেসর আতাউর রহমান বলেন, এসএসসি পরীক্ষার সময়ে প্রশ্নফাঁস সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট করেছে। পাবলিক পরীক্ষায় সর্বোচ্চ সতর্কতা নিয়ে আমরা কাজ করছি।

পরীক্ষার্থীদের অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘শিক্ষকদের সচেতন করার বিষয়ে সোমবারের বৈঠকের পর থেকে পরীক্ষা শুরুর পাঁচ মিনিট আগে হল ইনভিজিলেটরদের করণীয় বিষয়ক দিকনির্দশনা দেয়া হচ্ছে। পরীক্ষার্থীরা যাতে অধিকার থেকে বঞ্চিত না হয়, কিংবা পরীক্ষার্থীদের ব্যক্তিতে আঘাত করে এমন মন্তব্য ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয় এধরণের কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকার বিষয়ে দুই কলেজের অধ্যক্ষ একমত হয়েছি। সুন্দর, সুশৃঙ্খল পরিবেশে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত করার জন্য আমরা কাজ করে যাচ্ছি।’

প্রসঙ্গত, সিলেট সরকারী কলেজের এইচএসসি পরীক্ষার্থীরা এমসি কলেজে এবং এমসি কলেজের শিক্ষার্থীরা সিলেট সরকারী কলেজ কেন্দ্রে এইচএসসি পরীক্ষা দিচ্ছেন। এছাড়া এ দুই কলেজে নগরীর অন্যান্য কলেজের শিক্ষার্থীরাও পরীক্ষা দিচ্ছেন।

এ বিভাগের অন্যান্য