বিদ্যুৎ ব্যবহারে মিতব্যয়ী হোন : প্রধানমন্ত্রী
রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিদ্যুৎ ব্যবহারে জনগণকে মিতব্যয়ী হবার আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করে বলেছেন, এই বিদ্যুৎ উৎপাদনে তার সরকারকে অনেক টাকা ব্যয় করতে হয়।
তিনি বলেন, ‘আমরা চাই দেশের মানুষ এই বিদ্যুৎ যথাযথভাবে ব্যবহার করবেন। বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে কিন্তু অনেক টাকা খরচ হয় এবং যে পরিমাণ টাকা খরচ হয় সেই টাকা কিন্তু বিদ্যুতের দাম আমরা গ্রহণ করি না এখানে আমরা ভর্তুকি দেই। সেক্ষেত্রে আমি প্রত্যেককেই বলবো বিদ্যুৎ ব্যবহারে সাশ্রয়ী হতে হবে।’
শেখ হাসিনা বৃহস্পতিবার তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ভেড়ামারা ৪১০ মেগাওয়াট কম্বাইন্ড সাইকেল বিদ্যুৎকেন্দ্র এবং ১৫ উপজেলায় শতভাগ বিদ্যুতায়ন কর্মসূচির উদ্বোধনকালে একথা বলেন। তিনি অনুষ্ঠান থেকে উদ্ভাবনীমূলক অনলাইন ট্রেনিং প্লাটফর্ম ’কুশলী’র উদ্বোধন করেন।
প্রধানমন্ত্রী জনগণের উদ্দেশ্যে বলেন, কীভাবে স্বল্প বিদ্যুৎ খরচ করে আপনারা আপনাদের বিদ্যুতের চাহিদা পূরণ করতে পারেন সেদিকে আপনাদের যত্মবান হতে হবে। এমন না যে, সরকারি মাল দরিয়া মে ঢাল, এটা করলে কিন্তু চলবে না। প্রত্যেককেই এ ব্যাপারে যথাযথভাবে আন্তরিক থাকতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী এ সময় ঘর থেকে বের হবার সময় নিজ হাতে বিদ্যুতের সুইচটি অফ করার পরামর্শ দিয়ে বলেন, স্কুল-কলেজ অফিস, আদালতে বা আপনারা যারা সরকারি কর্মচারী আছেন তারা নিজ হাতে সুইচটা অফ করলে আপনাদের কোন ক্ষতি হবে না বরং দেশের সম্পদটা আপনি রক্ষা করতে পারলেন।
তিনি নিজে প্রধানমন্ত্রী হয়েও ঘর-বাথরুম থেকে বের হবার সময় নিজ হাতে বিদ্যুতের সুইচ অফ করেন উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি নিজ হাতেই কিন্তু বিদ্যুতের সুইচগুলো অফ করি তাতে আমার কোন সম্মান যায় না। নিজের কাজ নিজে করাতে কোন লজ্জা নেই। কিন্তু, এতে সুবিধা যেটা পাবেন বিদ্যুৎ ব্যবহারে যদি সাশ্রয়ী হন তাহলে বিদ্যুৎ বিলটা কম আসবে।’
প্রধানমন্ত্রী এ সময় মোবাইল ফোন, ল্যাপটপ বা এসব ইলেকট্রনিক ডিভাইস চার্জ শেষে চার্জারটি বিদ্যুতের সংযোগ থেকে খুলে রাখলেও অনেকটা বিদ্যুৎ সাশ্রয় করা যায় বলে উল্লেখ করেন।
জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন। বিদ্যুৎ বিভাগের সচিব ড. আহমেদ কায়কাউস পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে দেশের বিদ্যুৎ ব্যবস্থার অতীত, বর্তমান এবং ভবিষ্যত উদ্যোগ তুলে ধরেন। প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. নজিবুর রহমান অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন।
তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ এবং বিদ্যুৎ, জ্বালানি এবং খনিজ সম্পদ বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়া, বিদ্যুৎ, জ্বালানি এবং খনিজ সম্পদ বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি তাজুল ইসলাম, জাতীয় সংসদের হুইপ আতিউর রহমান আতিক, জাপান দূতাবাসের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স, জাতীয় সংসদের সদস্যবৃন্দ এবং পদস্থ সরকারি কর্মকর্তাবৃন্দ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
বিদ্যুৎ উৎপাদনে সক্ষমতা বৃদ্ধিতে তার সরকার কুশলী কর্মসূচি হাতে নিয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সেখানে একটি ই-লার্নিং প্লাটফর্মও তৈরি করা হয়েছে, যারা এখানে কর্মরত আছেন তারাও যথেষ্ট লাভবান হবেন।
তিনি বলেন, তার সরকারের এই অর্থনৈতিক উন্নয়ন কর্মসূচির মাধ্যমে দেশের মানুষ স্বাবলম্বী হবে, তারা কাজ পাবে এবং কাজের মধ্যদিয়ে তাদের আর্থসামাজিক উন্নয়ন হবে। যেটা সরকারেরই লক্ষ্য।
প্রধানমন্ত্রী এ সময় উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে বাংলাদেশের উত্তোরণকে একটি বিরাট অর্জন উল্লেখ করে উন্নয়নের এই ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখার জন্য সরকার সেসব স্থানে যেসব প্রকল্প গ্রহণ করেছে তা যথাসময়ে যথাযথভাবে বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্বারোপ করে এজন্য সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।