মাদ্রাসায় টয়লেট হলে আরিফের কবর রচনা করা হবে:মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা
সিলেট সরকারী আলিয়া মাদ্রাসা ও সিভিল সার্জন অফিসে সীমানা প্রাচীর ভেঙ্গে নির্মাণ করা হচ্ছে পাবলিক টয়লেট। আলিয়া মাদ্রাসার ক্লাস রুমের কয়েকগজ পাশে পাবলিক টয়লেট নির্মাণ করা নিয়ে জনমতে দেখা দিয়েছে নানান প্রশ্ন। অন্যদিকে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রনালয়ের অনুমতি না নিয়ে শুধু প্রতিষ্টানের প্রধানের একটি চিঠি প্রেরণ করে একরকম জোড়পূর্বকভাবে পাবলিক টয়লেট নির্মান করা নিয়ে নগরজুড়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে।
এদিকে সরকারি আলিয়া মাদ্রাসা স্টুডেন্ট এসোসিয়েশন এৗক্যবদ্ধ হয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ২৪ ঘণ্ঠার আলটিমেটাম দিয়েছেন সিলেটবাসীর উদ্দেশ্যে যে খোলা চিঠি তারা দিয়েছেন তা হুবহ তোলে ধরা হলো..
সম্মানিত সিলেটবাসী আমরা সরকারি আলিয়া মাদ্রাসা,সিলেটে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীরা আপনাদের অবগত করছি যে,সিলেট সিটি কর্পোরেশন এর সম্মানিত মেয়র আরিফুল হক মহোদয় মাদ্রাসার কামিল ক্লাসের পাশ ঘেঁষা দেয়াল ভেঙ্গে পাবলিক টয়লেট নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন।আমরা নিয়মতান্ত্রিকভাবে এ কাজের প্রতিবাদ করে আসছি।পাবলিক টয়লেট নির্মাণ না করার জন্য আমরা প্রিন্সিপাল মহোদয়ের মাধ্যমে মেয়রের কাছে স্মারকলিপি পেশ করেছি।কিন্তু দু:খজনক হলেও সত্য মেয়র মহোদয় আমাদের প্রতিবাদে কর্ণপাত না করে পুলিশ প্রহরায় নির্মাণ কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।যা আমাদের হৃদয়ে রক্তক্ষরণ সৃষ্টি করেছে।এবং মাদ্রাসার বর্তমান ও প্রাক্তন ছাত্রদের মনে ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে। আমাদের দাবি হচ্ছে শুধু মাদ্রাসা নয় কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পাশে যাতে পাবলিক টয়লেট নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া না হয়।কেননা এতে প্রতিষ্ঠানের পরিবেশ ও শিক্ষার্থীদের শিক্ষা অর্জনের পরিবেশ মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয়।আপনাদের আরো অবগত করছি যে,মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের সাথে মেয়র মহোদয়ের আলোচনার কথা থাকলেও তিনদিন তারিখ করেও তিনি আলোচনায় আসেন নি;বরং পুলিশ প্রহরায় দিবা-রাত্রি কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।প্রিয় সিলেটবাসী আপনাদের বিবেকের কাছে প্রশ্ন মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের দ্বারা কোন ধরনের বৈরী পরিস্থিতির সৃষ্টি হলে এর দায়ভার কে নেবে…..প্রচারে:-
সরকারি আলিয়া মাদ্রাসা স্টুডেন্ট এসোসিয়েশন।
উল্লেখ্য সিলেট সরকারী আলিয়া মাদ্রাসা ও ও সিভিল সার্জন অফিসে সীমানা প্রাচীর ভেঙ্গে নির্মাণ করা হচ্ছে পাবলিক টয়লেট। আলিয়া মাদ্রাসার ক্লাস রুমের কয়েকগজ পাশে পাবলিক টয়লেট নির্মাণ করা নিয়ে জনমতে দেখা দিয়েছে নানান প্রশ্ন। অন্যদিকে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রনালয়ের অনুমতি না নিয়ে শুধু প্রতিষ্টানের প্রধানের একটি চিঠি প্রেরণ করে একরকম জোড়পূর্বকভাবে পাবলিক টয়লেট নির্মান করা নিয়ে নগরজুড়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে।
জানা যায়, ওয়াটার এইড নামে একটি আর্ন্তজাতিক প্রতিষ্ঠান থেকে পাবলিক টয়লেট নির্মাণের বরাদ্ধ আসে। এর জন্য সিলেট সিটি কর্পোরেশন নগরীর আলিয়া মাদ্রাসা ও সিভিল সার্জনের কার্যালয়ে জায়গা অধিগ্রহন করে সীমানা প্রাচীর নির্মানের কাজ শুরু করে। সিটি কর্পোরেশন থেকে এ ২ প্রতিষ্ঠানকে একটি চিঠি প্রেরণ করে জনস্বার্থে এ জায়গায় একটি পাবলিক টয়লেট নির্মাণ করা হবে। এর কয়েক দিন পর আলিয়া মাদ্রাসা ও সিভিল সার্জনের কার্যালয়ের পিছনে জায়গা অধিগ্রহন করে সীমানা প্রাচীরের কাজ শুরু সিসিক। পাবলিক টয়লেট নির্মাণের খবর আলিয়া মাদ্রাসার বর্তমান ও সাবেক ছাত্রদের মধ্যে ক্ষোভের সঞ্চার হয়। দিন কয়ক
পূর্বে মাদ্রাসার ছাত্রদের বাধার মূখে পড়ে পাবলিক টয়লেট নির্মান বন্ধ কাজ বন্ধ করতে বাধ্য হয় সিসিক। এদিকে বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা গেছে আলিয়া মাদ্রাসার সাবেক ছাত্রদের।
মেহরাজ নামে আলিয়া মাদ্রাসার এক ছাত্র জানান, সিটি কর্পোরেশন কি আর কোন জমি পায়নি, যে মাদ্রাসার জমিতে টয়লেট নির্মাণ করতে হবে। সিভিল সার্জন অফিসের দিকে আরেকটু জমি নিলেই তো মাদ্রাসার জমি নিতে হতো না। এই প্রতিষ্ঠানটির সাথে অনেক ইতিহাস ঐতিহ্য জড়িত রয়েছে। পক্ষান্তরে এখানে ধর্মীও অনভ‚তিতে আঘাত হানার উদ্দ্যেশ্যেই এই তৎপরতা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মাদ্রাসার দুই কর্মচারী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, মাদ্রাসাতো পাবলিক টয়লেট তৈরির জায়গা নয়। এখানে দ্বীনি শিক্ষা দেয়া হয়। টয়লেটের জন্য সিটি কর্পোরেশন অন্য জমি বেছে নিতে পারত।
সিলেট সরকারী আলিয়া মাদ্রাসার অধ্যক্ষ প্রফেসর আলী আহমদ খান জানান, কয়েকদিন আগে মেয়র আমাকে এসে বললেন এখানে পাবলিক টয়লেট নির্মাণ করা হবে। তাই জায়গা ছাড়তে হবে। উনি আমাকে বলেছেন শিক্ষামন্ত্রীর সাথে উনার কথা হয়েছে। তিনি আরো জানান, আমাকে কোন প্রকার লিখিত কিছু দেওয়া হয়নি । উনি যেহেতু শিক্ষামন্ত্রীর সাথে কথা বলেছেন তাই আমার বাধা দেওয়ার যুক্তি নেই। আমি এ বিষয়টি শীঘ্রই শিক্ষা মন্ত্রনালয়কে অবগত করবো।
সিলেটের সিভিল সার্জন ডা. হিমাংশু লাল রায় বলেন, উন্নয়ন কাজে তো আর আমরা বাধাঁ দিতে পারিনা। আর এখানে জমিও আমি দিতে পারিনা। জমি দেয়ার এখতিয়ার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের। সিটি কর্পোরেশন থেকে আমাকে একটি চিঠি দেয়া হয়েছে। আমি চিঠি মন্ত্রণালে পাঠিয়েছি। কিন্তু এখন পর্যন্ত মন্ত্রণালয় কোন অনুমতি দেয়নি। তিনি বলেন, মাদ্রাসার ছাত্ররা কাজ বন্ধ করার পর আমার সাথে দেখা করতে এসেছিল। কিন্তু আমি অফিসে ছিলামনা।
এ ব্যাপারে সিলেট সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নূর আজিজুর রহমান জানান, আমরা আলিয়া মাদ্রাসা ও সিভিল সার্জনকে চিঠি দিয়েছি। তাদের অনুমতি পেয়েই আমরা জায়গা অধিগ্রহন করেছি। সীমানা প্রচীর দেওয়ার কাজ চলছে। শীঘ্রই ওয়াটার এইড নামের একটি আর্ন্তজাতিক সংস্থা এখানে পাবলিক টয়লেট নির্মান কাজ শুরু করবে। তবে একটি শিক্ষা প্রতিষ্টানের গাঁ ঘেষে পাবলিক টয়লেট নির্মান করাটা কতটুকু যৌক্তিক এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি প্রতিবেদককে বলেন, আমরা আলিয়া মাদ্রাসা থেকে সামান্য জায়গা নিয়েছি। আর এটি তো মাদ্রাসার পিছনের অংশে এতে কোন সমস্যা হওয়ার কথা নয়। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও সিভিল সার্জনের জায়গায় কোন ভবন নিমার্ন করতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রনালয়ের অনুমতি লাগে সেখানে কি অনুমতি নেওয়া হয়েছে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যেহেতু প্রতিষ্টান থেকে আমরা অনুমতি পেয়ে গেছি তাই আমরা মন্ত্রনালয়ে যাই নি।
এদিকে কয়েক দিন আগে এ বিয়য়ে জানতে চাইলে সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, বিষয়টিতে জনস্বার্থ জড়িত। আমরা সংশ্লিষ্টদের অনুমতি নিয়েই প্রকল্পটি করছি। নগরীর বৃহত্তর স্বার্থেই এটি করা হচ্ছে