যাত্রীবাহী নৌকা ও সেনা ঘাঁটিতে ভয়াবহ হামলা, মালিতে নিহত ৬৪
মালিতে যাত্রীবাহী নৌকা এবং সেনা ঘাঁটিতে হামলা ঘটনা ঘটেছে। দেশটির সশস্ত্র বাহিনী জানিয়েছে, দুটি পৃথক হামলায় কমপক্ষে ৪৯ জন বেসামরিক এবং ১৫ জন সেনা নিহত হয়েছে। হামলায় আনুমানিক ৫০ জন হামলাকারীও নিহত হয়েছে বলে জানা গেছে।
মালির সামরিক বাহিনী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক বিবৃতিতে বলেছে, ২০২৩ সালের ৭ সেপ্টেম্বর সশস্ত্র সন্ত্রাসী দল রারহৌসে আবাকইরা ও জরঘইয়ের মধ্যে একটি নৌকায় হামলা চালিয়েছে।
অন্য একজন ফেরি চালক জানান, ‘নদীটি এই অঞ্চলের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি রুট।
অন্য হামলাটি ঘটে দেশটির গাও অঞ্চলের আরো পূর্বে একটি সেনা ঘাঁটিকে লক্ষ্য করে। বৃহস্পতিবার এ হামলার ঘটনায় চূড়ান্ত নিহতের সংখ্যা জানানো হয়নি।
সংবাদ সংস্থা এএফপি বলছে, আল-কায়েদার সঙ্গে সম্পৃক্ত একটি গোষ্ঠী উভয় হামলার দায় স্বীকার করেছে।
এদিকে জাতিসংঘ মালির পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছে, ‘বেসামরিক এবং সামরিক অবকাঠামোগুলোকে লক্ষ্য করে সন্ত্রাসীদের হামলা বৃদ্ধি পেয়েছে, যা ইতিমধ্যেই উৎকণ্ঠাজনক মানবিক পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে।’
জেএমআইআইআই নামে পরিচিত আল-কায়েদার একটি স্থানীয় সহযোগী গ্রুপ গত ১৩ আগস্ট থেকে ঐতিহাসিক মালিয়ান শহর টিমবুক্টুর চারপাশে অবরোধ করছে। এলাকটি পূর্ব নাইজার নদীর কাছে অবস্থিত। সেখানেই বৃহস্পতিবার এই হামলার ঘটনা ঘটেছে। এই অবরোধের ফলে টিমবুক্টুর ৩৫ হাজার বাসিন্দাদের মধ্যে অনেকেই খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম বেড়ে গেছে এবং মানবিক সহায়তাও বন্ধ হয়ে গেছে।
জাতিসংঘের একটি প্যানেল আগস্ট মাসেও জানিয়েছিল, আইএসআইএল যোদ্ধারা গত বছর থেকে তাদের নিয়ন্ত্রিত এলাকা বৃদ্ধি করেছে। প্রতিদ্বন্দ্বী গ্রুপগুলোর মধ্যেও সংঘর্ষ অব্যাহত রয়েছে।
মালিতে পরিস্থিতি খারাপ হয় মূলত ২০১২ সালে। যখন উত্তরে বিদ্রোহীরা স্বাধীনতার জন্য চাপ দিচ্ছিল। তখন সংঘাত শুরু হয় এবং একই বছরের শেষের দিকে একটি সামরিক অভ্যুত্থান ঘটে। গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকারের পতন ঘটানো হয়। দেশটি তখন থেকে আরো দুটি অভ্যুত্থানের সম্মুখীন হয়েছে। একটি ২০২০ সালে এবং অন্যটি ২০২১ সালে। ২০১৫ সালে একটি শান্তি চুক্তির মাধ্যমে বিদ্রোহ দমনের চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু বিদ্রোহ দমনে সফল হয়নি দেশটির সরকার।
সূত্র: আলজাজিরা