কঠিন চাপে জাতীয় পার্টি

সিলেটের সময় ডেস্ক :

 

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান জিএম কাদেরসহ দলটির বেশ কয়েকজন নেতা সরব ছিলেন। পরে অন্তর্বর্তী সরকারকে জোরালো সমর্থন এবং পতিত ফ্যাসিস্ট সরকারের কঠোর সমালোচনা করলেও এখন পর্যন্ত ‘গুডবুকে’ নাম লেখাতে পারেনি দলটি। ইতোমধ্যে জাতীয় পার্টিকে ‘স্বৈরাচারের দোসর’ অভিযোগে শাস্তির দাবি তুলেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়করা। তা ছাড়া জিএম কাদের ও তার স্ত্রী শেরিফা কাদেরসহ দলটির শীর্ষ নেতৃবৃন্দের নামে মামলাও হয়েছে। আবার রাজনৈতিক দলের সঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার সংলাপেও ডাক পায়নি দলটি। সব মিলিয়ে জাতীয় পার্টি একটি ‘কঠিন চাপে’ পড়তে যাচ্ছে এমনটিই মনে করছেন অনেকেই। এ অবস্থায় আজ সোমবার বিকাল ৩টায় জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের বনানীর কার্যালয়ে ‘জরুরি’ সংবাদ সম্মেলনে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলবেন দলটির চেয়ারম্যান জিএম কাদের। এতে জাতীয় পার্টির করণীয় এবং দলীয় অবস্থান স্পষ্ট করা হবে বলে দলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।

নব্বইয়ের গণঅভ্যুত্থানে পতনের পর থেকে নানা ইস্যুতে রাজনৈতিক দল হিসেবে আলোচনায় রয়েছে জাতীয় পার্টি (জাপা)। বিশেষ করে নির্বাচন এলেই আলোচনায় আসতে দেখা গেছে জাপাকে। দলটির নেতারা বলছেন, নির্বাচন এলেই অদৃশ্য সুতোর টানে তাদের চলতে হয়েছে। হুমকি, মামলা, দল ভেঙে দেওয়ার মতো জটিল পরিস্থিতি সৃষ্টি করা হয়েছে। দলের নেতৃত্বের পরিবর্তন ঘটানো হয়েছে। তথাপিও জাতীয় পার্টি মানুষের অধিকার নিয়ে কথা বলা অব্যাহত রেখেছে। তবে এই সরকারের সময়ে তাদের ঘুরে দাঁড়াতে বেগ পেতে হবে। সেটি হবে আওয়ামী লীগ সরকারের ‘দোসর’ হয়ে কাজ করার অপরাধে।

অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্বগ্রহণের পর প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনায় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলসহ জাতীয় পার্টিকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। এরপরই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের এ নিয়ে প্রতিবাদ করতে দেখা গেছে। যে কারণে এবার রাষ্ট্রীয় সংস্কারের অংশ হিসেবে চতুর্থ দফার সংলাপে জাপা আমন্ত্রণ পায়নি। আওয়ামী লীগের মতো তাদের বিচারের আওতায় এনে বিচার করা হবে বলে আলোচনা হচ্ছে। এ নিয়ে দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীদের মধ্যে হতাশা বিরাজ করছে। দলটির এক নেতা আমাদের সময়কে বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে জটিলতায় পড়তে যাচ্ছে জাপা। অথচ দেশের উন্নয়ন, অগ্রযাত্রা এবং আধুনিক চিন্তায় দলটির অবদান অনেক।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে দলটির চেয়ারম্যান জিএম কাদের আমাদের সময়কে বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে আমরা যতটুকু কো-অপারেট করা দরকার করেছি। ফিজিক্যালি আমাদের লোকজন পূজামণ্ডপে গেছে। যেখানে যখন বলা হয়েছে, আমরা সেভাবে সহায়তা করার চেষ্টা করেছি। পূজার সময় আমিসহ দলের লোকজন রংপুরে গেছি। বর্তমান সরকারের কাছে জনগণের প্রত্যাশা অনেক। আমরা চাই সেটি পূরণ হোক। সরকার পরামর্শ চাইলে দেব, না চাইলে দেব না। ডাকলে যাব, না ডাকলে যাব না। কিন্তু আমাদের দোষারোপ করা হচ্ছেÑ আমরা ‘স্বৈরাচারের দোসর’। এই অভিযোগে সংলাপে যেতে পারব না, এটি মানতে পারছি না। কারণ এটি তো প্রমাণ করতে হবে। আমাদের কথা বলার সুযোগ দিতে হবে। অভিযোগ তুলে শাস্তি দিয়ে দেবেনÑ এটি তো হতে পারে না। আমাদের আপত্তির জায়গাটা এখানেই। কারণ আমরা দোষী নই।’

জাতীয় পার্টি ভয় পাচ্ছে কিনা জানতে চাইলে চেয়ারম্যান বলেন, ‘না ভয়ের কিছু নেই। আমরা এমন কিছু করিনি যে ভয় পেতে হবে। যে অভিযোগই আসুক, আমরা মোকাবিলা করার জন্য প্রস্তুত আছি।’

এ বিভাগের অন্যান্য