ভৈরবে মোটরসাইকেলে ঘুরতে বের হয়ে লাশ হয়ে ফিরল দুই বন্ধু
সিলেটের সময় ডেস্ক :
ভৈরবে ট্রাক ও সিএনজির ধাক্কায় মোটরসাইকেল আরোহী দুই কিশোর শিক্ষার্থী নিহত হয়েছে। শুক্রবার রাত আটটার দিকে ভৈরব-কিশোরগঞ্জ আঞ্চলিক সড়কের সম্ভুপুর পাক্কার মাথা করবস্থান এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ দুর্ঘটনায় আরেক শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হয়েছে।
নিহত শিক্ষার্থীরা হলো- পৌর শহরের বাসস্ট্যান্ড এলাকার নিবস্বা মিয়ার বাড়ির স্বপন মিয়ার ছেলে সুফল মিয়া (১৫) ও গাছতলা ঘাট এলাকার কাজি বাড়ির আতাউল্লাহ মিয়ার ছেলে আসাদুজ্জামান মুন্না (১৫)। গুরুতর আহত হয় ভৈরবপুর উত্তরপাড়া এলাকার আরাফাত মিয়ার কিশোর ছেলে শিক্ষার্থী বর্ন (১৫)। তারা তিনজনই বিভিন্ন বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী এবং বন্ধু। পরিবারের সদস্যরা ও পুলিশ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। দুই কিশোর শিক্ষার্থীর অকাল মৃত্যুতে পরিবারে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয়দের বরাত দিয়ে হাইওয়ে থানা অফিসার ইনচার্জ মো. সাঝু মিঞা বলেন, শুক্রবার ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা কিশোরগঞ্জগামী একটি ট্রাক সম্ভুপুর পাক্কার মাথা করবস্থান এলাকায় রাত আটটায় পৌঁছামাত্র পেছন দিক দিয়ে একটি সিএনজি ওভারটেক করে যাওয়ার সময় বিপরীতগামী আসা মোটরসাইকেলের তিন শিক্ষার্থীর বাইকটি সিএনজির সঙ্গে ধাক্কা লেগে বাইকটি ট্রাকের সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে ছিটকে পড়ে যায়।
এ সময় ঘটনাস্থলে শিক্ষার্থী সুফল নিহত হয়। ঘটনার সময় সঙ্গের দুজন গুরুতর আহত হলে স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। গুরুতর আহত মুন্নাকে হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করলে সে পথিমধ্যে রাত ১০ টায় মারা যায়।
এ ঘটনার পর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে না নিয়ে আহত শিক্ষার্থী বর্ণ একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নেয়। সে বেঁচে আছে।
খবর পেয়ে হাইওয়ে থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। এ ঘটনায় জড়িত ট্রাক ও সিএনজি দুইটিই ড্রাইভারসহ পালিয়ে গেছে বলে তিনি জানান।
এ ঘটনায় নিহত সুফলের কাকা শাকিব বলেন, আমার ভাতিজা স্থানীয় একটি ক্যাডেট একাডেমি স্কুলে অষ্টম শ্রেণিতে লেখাপড়া করতো। সেইসঙ্গে তার বাবার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানেও সময় দিতেন৷পরিবারকে না বলে সহপাঠীদের সঙ্গে মোটরসাইকেলে ঘুরতে গিয়েছিল। এখন তার লাশ দেখতে হলো। সুফল পরিবারের বড় ছেলে। মা-বাবার স্বপ্ন ছিল ছেলেকে উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত করবে। ঘটনায় এ স্বপ্নের অপমৃত্যু ঘটল।
এ বিষয়ে নিহত মুন্নার ভাই বিজয় বলেন, দুপুরে বাড়ি থেকে খেয়ে বন্ধুদের সঙ্গে বেড়াতে বের হয়েছে। আমরা জানতাম না সে তার বন্ধুর মোটরসাইকেল নিয়ে বের হয়েছে। আমার ছোট ভাইয়ের এখন লেখাপড়ার সময় ছিল। সে কমলপুর হাজী জহির উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেণিতে লেখাপড়া করতো। তার উচ্চ শিক্ষার স্বপ্ন ধূলিসাৎ হয়ে পরিবারকে কান্নার মধ্য রেখে সে পরকালে চলে গেল।
এ বিষয়ে হাইওয়ে থানা অফিসার ইনচার্জ মো. সাঝু মিঞা বলেন, নিহতের মরদেহ তাদের পরিবারের কাছে রয়েছে। নিহতদের পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তবে দুর্ঘটনায় দায়ী ট্রাক ও সিএনজিকে পুলিশ এখনও শনাক্ত করতে পারেনি।