সিলেটে অস্ত্র উদ্ধারে কাল থেকে যৌথ বাহিনীর অভিযান শুরু
সিলেটের সময় ডেস্ক :
শেখ হাসিনার পতন ও দেশত্যাগের দিন (৫ আগস্ট) সিলেটসহ সারা দেশের প্রায় প্রত্যেকটি থানায় হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও অস্ত্র লুটপাট করে দুর্বৃত্তরা। এসব অস্ত্র ফিরে পেতে মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছে বর্তমান নির্দলীয় সরকার।
এছাড়া বেসামরিক লোকজনকে দেওয়া আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স গত ২৫ আগস্ট স্থগিত করেছে বর্তমান সরকার। এসব অস্ত্রও জমা দেওয়ার জন্য মঙ্গলবার পর্যন্ত তারিখ নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার পর্যন্ত এসব সব অস্ত্র ফিরে না পেলে আগামীকাল বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) থেকে সারা দেশে যৌথ বাহিনী অভিযানে নামবে।
এ বিষয়ে সতর্ক করে সোমবার (২ সেপ্টেম্বর) সিলেটজুড়ে মাইকিং করা হয়েছে। সোমবার বিকালে সিলেটের দক্ষিণ সুরমা ও বিশ্বনাথে উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ব্যাটরিচালিত রিকশাযোগে মাইকিং করতে দেখা যায়।
রবিবার (১ সেপ্টেম্বর) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে দেওয়া স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী স্বাক্ষরিত এক বার্তায় জানা গেছে, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে সারাদেশে বুধবার থেকে যৌথ অভিযান চালানো হবে। তবে কাউকে গ্রেপ্তার করতে হলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নিজেদের পরিচয় দিতে হবে। পরিচয় না দিয়ে কোনো অবস্থাতেই কাউকে গ্রেপ্তার করা যাবে না। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে এমন নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে। যৌথ অভিযানসহ যে কোনো ক্ষেত্রে এ নির্দেশনা মানতে হবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, রবিবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে কোর কমিটির বৈঠক হয়েছে। এতে সব বাহিনী ও গোয়েন্দাপ্রধান এবং তাদের প্রতিনিধিরা ছিলেন। সম্প্রতি থানা, ফাঁড়ি ও পুলিশ স্টেশন থেকে লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধার করার বিষয়ে এতে জোর দেওয়া হয়েছে।
অপরদিকে, গত ২৫ আগস্ট স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়- ২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি থেকে গত ৫ আগস্ট পর্যন্ত বেসামরিক লোকজনকে দেওয়া আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স স্থগিত করা হয়েছে। ওই সময়ে যাদের লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে, তাদের ৩ সেপ্টেম্বরের (মঙ্গলবার) মধ্যে গোলাবারুদসহ আগ্নেয়াস্ত্র সংশ্লিষ্ট থানায় জমা দিতে হবে। অস্ত্র-গোলাবারুদ জমা দেওয়ার শেষ দিন পেরিয়ে যাওয়ার পর (বুধবার থেকে) অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে যৌথ অভিযান শুরু হবে।
যৌথ অভিযানে সেনাবাহিনী, বিজিবি, পুলিশ, র্যাবসহ বিভিন্ন বাহিনীর সদস্যরা থাকবেন। অবৈধ অস্ত্রধারীদের গ্রেপ্তারে দেশব্যাপী অভিযান চালানো হবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, সিলেটসহ সারা দেশে এখন লোকজনের কাছে বৈধ অস্ত্র প্রায় ৫০ হাজার। এর মধ্যে ১০ হাজারের বেশি অস্ত্র রয়েছে রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীর হাতে। তাদের বেশিরভাগই আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী। তাদের অনেকেই ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর অস্ত্রের লাইসেন্স পেয়েছেন।
এদিকে, ৫ আগস্ট সিলেট মেট্রোপলিটন এলাকার ৬টি পুলিশ স্টেশনে হামলা করে ১০১টি বিভিন্ন ধরনের আগ্নেয়াস্ত্র লুট করা হয়। ৩১ আগস্ট পর্যন্ত এসবের মধ্যে ৮০টি অস্ত্র উদ্ধার করা সম্ভব হয়েেছে। ২১টি এখনো উদ্ধার হয়নি।
সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের (এসএমপি) মিডিয়া অফিসার অতিরিক্ত উপ-কমিশনার মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম এ তথ্যগুলো জানিয়েছেন। তিনি বলেন-উদ্ধার হওয়া ৮০টি অস্ত্রের মধ্যে এসএমজি, চায়না রাইফেল, পিস্তল ও শটগান রয়েছে।