কোম্পানীগঞ্জে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন: হুমকিতে বাড়ি-ঘর ও ফসলি জমি

সিলেটের সময় ডেস্ক :

 

সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার দক্ষিন পুর্বে দক্ষিন বুড়দেও গ্রাম ও উত্তর পূর্বে চানপুর গ্রামের অবস্থান। দুই গ্রামের মধ্যে দিয়ে বয়ে চলেছে নদী। এ গ্রাম দুটিতে রয়েছে অসংখ্য ঘর-বাড়ি, রাস্তাঘাট, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ও ফসলি জমিসহ বিভিন্ন স্থাপনা। সবকিছুকে হুমকিতে ফেলে নদী থেকে চলছে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন।

স্থানীয়দের অভিযোগ কোম্পানীগঞ্জ থানার সামনেই অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে স্টিলবডি (বালুবাহী নৌযান) দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার ঘনফুট বালু নিলেও চোখ বন্ধ রেখেছে পুলিশ। এতে করে ধীরে ধীরে নদীর দুই পাড় ভেঙে বিলীন হতে বসেছে দক্ষিন বুড়দেও, চানঁপুর গ্রামের হাজার হাজার বিঘা ফসলি জমি ও বাড়ি-ঘর সহ বিভিন্ন স্থাপনা। সরজমিনে গিয়ে দেখা যায় থানার সামনের ধলাই নদীতে বেশ কয়েকটি স্টিল বডি (বালুবাহী নৌযান) নদী পাড়ে বাঁধা আছে। নদীপাড়ে গিয়ে এক কৃষকের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, দিনের বেলা নৌকা নদী পাড়ে বাঁধা থাকে। এ নৌকা গুলোই রাতে আমাদের দুই গ্রামের শতশত বাড়ি-ঘর, হাজার হাজার বিঘা ফসলি জমি হুমকিতে ফেলে বালু তুলে।

উপজেলা পরিষদ, কোম্পানীগঞ্জ থানা ও ভুমি অফিসের খুব কাছাকাছি জায়গা থেকে প্রতি বছরই বালু তোলে একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট কিন্তু প্রশাসনের কারোরই কোন হস্তক্ষেপ দেখিনা। তিনি আরও বলেন, একই স্থান থেকে প্রতিবছর অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের ফলে কোম্পানীগঞ্জ থানার পূর্বের দু’টি গ্রাম দক্ষিণ বুড়দেও ও চানঁপুর গ্রামের অনেক বাড়ি-ঘর নদী গর্ভে চলে যায়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় বাসিন্দা শ্রমজীবী এক যুবক জানান, কোম্পানীগঞ্জ থানা পুলিশের অস্থায়ী নৌকা চালক শফিক আলী পুলিশের নামে টাকা তুলে পুলিশকে ম্যানেজ করে প্রতিদিন রাতে বালু উত্তোলনের ব্যবস্থা করেন।

পুলিশ ছাড়াও এ ভাগ পান স্থানীয় প্রভাবশালী সিন্ডিকেট ও কয়েকজন সাংবাদিক। অভিযুক্ত পুলিশের অস্থায়ী নৌকা চালক শফিক আলীর (+8801937473376) কাছে বালু উত্তোলনের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ভাই কয়েকদিন ধরে বালু উত্তোলন বন্ধ আছে। এর আগে কিছু দিন চলছে। পুলিশের নামে টাকা তোলার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি অস্বীকার করে বলেন আমি টাকা তুলি না যারা আপনাকে এ তথ্য দিয়েছে তাঁরাই টাকা তুলে। পূর্ব ইসলামপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলমগীর আলম বলেন, দীর্ঘদিন ধরেই চানঁপুর ও দক্ষিন বুড়দেও গ্রামের বাড়ি-ঘর ও ফসলি জমিগুলোকে হুমকিতে ফেলে রাতের আঁধারে লিজ বহির্ভূত জায়গায় উত্তোলন হচ্ছে বালু ।

উপজেলা প্রশাসনের নির্বাহী কর্মকর্তা সুনজিত কুমার চন্দ মহোদয়কে বিষয়টি আমি অবগত করেছি। কোম্পানীগঞ্জ থানার ওসি গোলাম দস্তগীর আহমদের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন এই বিষয়ে আমার কিছুই জানা নেই। কোম্পানীগঞ্জের সহকারী কমিশনার (ভূমি) সুমাইয়া ফৈরদৌস বলেন অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের বিষয়টি আমার জানা নেই। খবর পাওয়ার পর কাউকেই অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করতে দেওয়া হবে না। এ বিষয়টি থানার ওসি সাহেবকে বিষয়টি অবগত করেন।

এ বিভাগের অন্যান্য