গাজার শরণার্থী শিবিরে ইসরায়েলি হামলা, নিহত ৭০
আন্তর্জাতিক ডেস্ক ঃ
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডের আল-মাগাজি শরণার্থী শিবিরে ভয়াবহ বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল।স্থানীয় সময় রবিবারের এ হামলায় অন্তত ৭০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও বহু মানুষ।
আজ সোমবার আল জাজিরা, বিবিসিসহ একাধিক আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের খবরে এ তথ্য জানানো হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজার মধ্যাঞ্চলে অবস্থিত আল-মাগাজি শরণার্থী শিবিরে ইসরায়েলি বিমান হামলায় অন্তত ৭০ জন নিহত হয়েছেন বলে ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে।
তবে নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আশরাফ আল-কুদরা। গতকাল গভীর রাতে তিনি বলেন, ‘আল-মাগাজি ক্যাম্পের জনাকীর্ণ আবাসিক চত্বরে যা সংঘটিত হচ্ছে তা আসলে গণহত্যা।’
আল জাজিরা বলছে, ইসরায়েলি বর্বর এই হামলায় আরও বহু মানুষ আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে এবং হামলায় বেশ কয়েকটি বাড়িও ধ্বংস হয়ে গেছে। হামলার পর সেখানকার মানুষ বেঁচে যাওয়া লোকদের খুঁজে বের করার চেষ্টায় ধ্বংসস্তূপের ভেতরে তল্লাশি করছে।
আল জাজিরার তারেক আবু আজউম দক্ষিণ গাজার রাফাহ থেকে জানিয়েছেন, আল-মাগাজি শরণার্থী শিবিরটি গাজা উপত্যকার মাঝখানে সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ এলাকাগুলোর মধ্যে একটি।
তিনি বলেন, ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী এর আগে গাজার ফিলিস্তিনিদের যে জায়গাগুলো থেকে সরে যেতে বলেছিল তার মধ্যে এটি অন্যতম। হামলা চালিয়ে এখন ক্যাম্পটিকে ‘সম্পূর্ণ ধ্বংস করে দেওয়া’ হয়েছে। এই মুহূর্তে হতাহতদের বেশির ভাগই বেসামরিক নাগরিক বলে তথ্য রয়েছে।
বিবিসি জানিয়েছে, হামলায় কয়েক ডজন আহত ব্যক্তিকে কাছাকাছি আল-আকসা হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। বিবিসির ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, কিছু শিশুর মুখ রক্তে রঞ্জিত। তাদের শরীরের বিভিন্ন অংশ ব্যাগে স্তূপীকৃত করে নেওয়া হচ্ছে।
এদিকে আল-মাগাজি ক্যাম্পে বিমান হামলাকে ‘ভয়াবহ গণহত্যা’ বলে অভিহিত করেছে হামাস। একই সঙ্গে এটিকে ‘নতুন যুদ্ধাপরাধ’ বলেও অভিহিত করেছে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র এই গোষ্ঠীটি।
অন্যদিকে ইসরায়েলের সামরিক মুখপাত্রের কার্যালয় বলেছে, তারা হামলার রিপোর্ট খতিয়ে দেখছে।
উল্লেখ্য, ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামলা চালায়। হামলার জবাবে ওইদিনই গাজায় পাল্টা হামলা শুরু করে ইসরায়েল। এর পর আড়াই মাসের বেশি সময় পেরিয়ে গেছে। মাঝে যুদ্ধবিরতির কয়েক দিন বাদে গাজায় নির্বিচার হামলা অব্যাহত রেখেছে ইসরায়েলি বাহিনী। হামলা থেকে মসজিদ, বিদ্যালয়, হাসপাতাল, আশ্রয়শিবির-কিছুই বাদ যায়নি।
ইসরায়েলি হামলায় গাজায় নিহতের মোট সংখ্যা ২০ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। এর বেশির ভাগ নারী ও শিশু। উদ্বাস্তু হয়েছে গাজার ২৩ লাখ বাসিন্দার মধ্যে ১৮ লাখের বেশি। এ পরিস্থিতিতে অবিলম্বে যুদ্ধ বন্ধে ইসরায়েলের ওপর চাপ বাড়িয়েছে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়।