আওয়ামী লীগ ছাড়ার কারণ জানালেন কাদের সিদ্দিকী
সিলেটের সময় ডেস্ক :
কেন আওয়ামী লীগ ছেড়েছিলেন, তা জানালেন কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি কাদের সিদ্দিকী, বীর উত্তম। আজ সোমবার ময়মনসিংহ টাউন হলে অ্যাডভোকেট তারেক স্মৃতি অডিটোরিয়ামে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের কর্মীসভায় এ কথা বলেন তিনি।
কাদের সিদ্দিকী বলেন, ‘যারা বীর মুক্তিযোদ্ধা ও প্রতিরোধযোদ্ধাদের ভাত রান্না করে খাওয়াতো আজ তারা কোটিপতি হয়ে গেছে। প্রতিরোধযুদ্ধে যারা শহীদ হয়েছেন তাদের নাম আমি সংসদে ৭ বার প্রস্তাব করেছি তবুও গৃহীত হয় নাই। পরে সংসদকে চিঠি দিয়ে জানানো হয়েছে যে আমার মৃত্যুর পরে যেন সংসদে কোনো প্রকার শোক প্রস্তাব না আনে।’
তিনি বলেন, ‘আজ ময়মনসিংহের টাউন হলে অ্যাডভোকেট তারেক স্মৃতি অডিটোরিয়ামে প্রতিরোধযোদ্ধাদের উপস্থিতি দেখে আমি খুশি হয়েছি। আর মাত্র দুটি মাস যদি আপনার একত্রিত হয়ে চলতে পারেন, আমি কথা দিলাম আপনাদের স্বীকৃতি হবে ইনশাল্লাহ। আমার মধ্যে প্রতিরোধযোদ্ধাদেরকে নিয়ে প্রচুর হতাশা কাজ করছে।’
কাদের সিদ্দিকী বলেন, ‘আমি আওয়ামী লীগ ছেড়েছিলাম বেশ কয়েকটি প্রশ্নের কারণে। সেখানে প্রতিরোধযোদ্ধাদের স্বীকৃতি, বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানি, মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়, পাটের দাম, কোটি টাকার চাকরি- এরকম বেশ কিছু শর্ত ছিল আমার। এ নিয়ে হঠাৎ আমি একদিন বলেছিলাম জনগণকে একের পর এক শর্ত দিলেও তা পালন করা হচ্ছে না। এই জন্য আমার মধ্যে কিছুটা হতাশা কাজ করছে।’
কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বলেন, ‘এখন আমরা দুর্নীতিবাজ, ঘুষখোরদের নিপাত করে মুক্তিযুদ্ধ করব। এক সপ্তাহ আগে ছিল ভিক্ষুক, আজ তারা কোটিপতি। আজ যদি দেশে খেলাধুলা, নাটক, থিয়েটার থাকত, তাহলে গাঁজাখোর, নেশাখোরদের সংখ্যা এত বাড়ত না।’
তিনি বলেন, ‘১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের সদস্যবৃন্দ ও তার নিকটাত্মীয়দের নৃশংসভাবে হত্যার পর দেশে বিভীষিকাময় পরিস্থিতি তৈরি হয়। তৎকালীন সামরিক সরকার মিছিল-মিটিং সব বন্ধ করে দেয়। তখন মানুষের মনে একটা ভীতিকর অবস্থা তৈরি হয়। ওই দিনই নেত্রকোনার মোহনগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ, নরসিংদী, খুলনা, যশোর, চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ ও ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ে বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদ হয়। বঙ্গবন্ধু হত্যার ৪৭ বছর পার হলেও এখনও সেই প্রতিরোধযোদ্ধাদের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি মেলেনি। প্রতিরোধযোদ্ধাদের অনেকেই এখন চরম কষ্ট-অবহেলায় জীবনযাপন করছেন।’
ময়মনসিংহ জেলা কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি অধ্যক্ষ এম আব্দুর রশিদের সভাপতিত্বে কর্মীসভায় বিশেষ আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা হাবিবুর রহমান তালুকদার বীর প্রতীক। এছাড়া দলের ময়মনসিংহ জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক প্রভাষক মো. শাহিনুর আলমসহ বৃহত্তম ময়মনসিংহের নেকাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।