বাজি ফাটানো নিয়ে আবারও সংঘর্ষ, এএসপি-ওসি-এসআইসহ আহত অর্ধশতাধিক
মাদারীপুরের রাজৈরে বাজি ফাটানো নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে আবারও সেই দুই গ্রামবাসীর মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এ সময় বেশ কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণ, পুলিশের টিয়ার শেল নিক্ষেপ ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। এতে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, ওসি, এসআইসহ অন্তত অর্ধশত ব্যক্তি আহত হন। পরে সেনাবাহিনী, পুলিশ, র্যাব ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা কয়েক ঘণ্টা যৌথ চেষ্টা চালিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
পুলিশ, হাসপাতাল ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বাজি ফাটানোর সময় বাধা দেওয়া নিয়ে পূর্বশত্রুতার জের ধরে গত ১২ এপ্রিল রাতে পশ্চিম রাজৈর ও বদরপাশা- এই দুই গ্রামের মধ্যে প্রায় তিন ঘণ্টাব্যাপী সংঘর্ষ হয়। এ সংঘর্ষে অন্তত ১০ পুলিশসহ ২৫ জন আহত হন। একপর্যায়ে সেনাবাহিনী ও পুলিশ যৌথ প্রচেষ্টা চালিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এর মধ্যে রবিবার (১৩ এপ্রিল) সন্ধ্যায় উভয় পক্ষের লোকজন উত্তেজিত হয়ে আবারও দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। এ সময় বদরপাশা গ্রামের লোকজন বেশ কয়েকটি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটায় এবং দোকানে অগ্নিসংযোগ করা হয়। ১২টি দোকান ভাঙচুর ও লুটপাট করে বিক্ষুব্ধরা।
এ ঘটনায় মাদারীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর আলম, রাজৈর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ও কয়েকজন পুলিশ সদস্যসহ উভয় পক্ষের অর্ধশতাধিক লোক আহত হয়। আহতদের মধ্যে গুরুতর অবস্থায় পশ্চিম রাজৈর গ্রামের মেহেদী মীর (২২), রাসেল শেখ (২৮), সাহাপাড়ার মনোতোষ সাহা (৫০), আলমদস্তারের তাওফিককে (৩৭) রাজৈর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর আলমের পায়ে মাদারীপুর সদর হাসপাতাল থেকে অপারেশন করানো হয়। এ ছাড়া বাকি আহতরা রাজৈর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ বিভিন্ন ক্লিনিকে চিকিৎসা নিয়েছেন।
অপরদিকে রবিবার (১৩ এপ্রিল) রাতে চতুর্থ ধাপের সংঘর্ষ শেষে রাজৈর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় মিটিং করছিল মজুমদার কান্দি গ্রামের লোকজন। খবর পেয়ে রাজৈর থানার পুলিশ এসে লাঠিচার্জ করে তাদের ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা চালায়। এতে তারা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। একপর্যায়ে পুলিশের দুটি পিকআপের ওপর ইটপাটকেল নিয়ে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর করে বিক্ষুব্ধরা।
এ ঘটনায় রাজৈর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মোস্তফা ও পুলিশের গাড়ির ড্রাইভার শাহাবুদ্দিনের মাথা ফেটে তারা গুরুতর আহত হয়। পরে তাদের উদ্ধার করে রাজৈর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হয়।
রাজৈর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মাসুদ খান বলেন, সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়েছি। পুলিশ অতি সাহসিকতার সঙ্গে সংঘর্ষ মোকাবেলা করেছে। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে। এ ব্যাপারে আইনগত ব্যাবস্থা নেওয়া হবে।