গাদ্দাফির সঙ্গে অর্থ কেলেঙ্কারি, সাবেক প্রেসিডেন্ট সারকোজির বিচার শুরু

আন্তর্জাতিক ডেস্ক ঃ

 

ফ্রান্সের সাবেক প্রেসিডেন্ট নিকোলাস সারকোজির বিরুদ্ধে লিবিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট মুয়াম্মার গাদ্দাফির কাছ থেকে অবৈধ অর্থ গ্রহণের অভিযোগে বিচার শুরু হচ্ছে।

২০০৭ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রচারণার জন্য তিনি ওই কেলেঙ্কারিতে জড়ান বলে অভিযোগ।

বিএফএমটিভি জানিয়েছে, সোমবার প্যারিসে শুরু হওয়া এই বিচার প্রক্রিয়া এপ্রিল পর্যন্ত চলবে।

সাবেক প্রেসিডেন্ট সারকোজিসহ আরও ১২ জন সন্দেহভাজনের বিরুদ্ধে অর্থ তছরুপ গোপন করা, দুর্নীতি, অবৈধ নির্বাচনী প্রচারণার অর্থায়ন এবং অপরাধমূলক যোগসাজশের অভিযোগ আনা হয়েছে।

২০১২ সালে স্বাধীন ফরাসি সংবাদমাধ্যম মিডিয়াপার্ট প্রকাশিত এক রিপোর্টে এই অর্থ কেলেঙ্কারির কথা প্রথমবারের মতো প্রকাশিত হয়। এতে লিবিয়ার গোপন নথিতে প্রমাণিত হয় যে, ২০০৭ সালে নির্বাচনের কয়েক মাস আগে প্রায় ৫০ মিলিয়ন ইউরো (প্রায় ৫১.৬ মিলিয়ন ডলার) ফ্রান্সে স্থানান্তরিত হয়েছিল।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, তৎকালীন ফরাসি উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের, মন্ত্রীদের এবং ব্যবসায়ীদের ব্যাংক লেনদেনের মাধ্যমে সেই অর্থ স্থানান্তরের নথিপত্র পাওয়া গেছে।

এর আগে ২০০৫ সালে সারকোজি এবং গাদ্দাফির মধ্যে একটি দুর্নীতির চুক্তি স্বাক্ষরিত হয় বলে দাবি করেছে ফরাসি দৈনিক লা মন্ডে। এতে আর্থিক ও শিল্প সুবিধার বিনিময়ে অর্থ লেনদেন করা হয়।

২০০৭ সালের নির্বাচনে জয়ের পর সারকোজি ত্রিপোলি সফর করেন এবং কয়েক মাস পরে গাদ্দাফি প্যারিসে সফর করেন। সেই সফরে দুই দেশের মধ্যে অস্ত্র চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।

পরে ২০১১ সালে লিবিয়ায় আন্তর্জাতিক সামরিক হস্তক্ষেপের জন্য প্রথমবারের মতো আহ্বান জানান সারকোজি।

এদিকে এসব অভিযোগ প্রমাণিত হলে সাবেক প্রেসিডেন্ট নিকোলাস সারকোজি সর্বোচ্চ ১০ বছরের কারাদণ্ড, বড় অঙ্কের জরিমানার মুখোমুখি হতে পারেন। একই সঙ্গে তিনি নাগরিক অধিকার, বিশেষ করে সরকারি পদে নির্বাচিত হওয়ার অধিকারও হারাতে পারেন।

গত মাসে ফ্রান্সের সর্বোচ্চ আদালত কোর্ট অফ কাসেশন সারকোজির বিরুদ্ধে ‘বিসমুথ অ্যাফেয়ার’-এর রায় নিশ্চিত করে। এতে তার দুর্নীতির দণ্ড বহাল থাকে এবং তাকে এক বছরের জন্য ইলেকট্রনিক ট্যাগ পরিধান করার নির্দেশ দেওয়া হয়।

২০১৩ সালে সারকোজি এবং তার আইনজীবী থিয়েরি হার্জোগের গোপন ফোনালাপ ফাঁসের মাধ্যমে তার অবৈধ নির্বাচনী অর্থায়নের বিষয়টি প্রকাশ পায়। সারকোজি তখন ভুয়া নাম পল বিসমুথ ব্যবহার করে দুটি ফোন লাইন থেকে যোগাযোগ করতেন।

এই মামলায় সারকোজি ও তার আইনজীবীর বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে। এতে বলা হয়, তারা ২০১৪ সালে কোর্ট অফ কাসেশন-এর সাবেক বিচারপতি গিলবার্ট আজিবার্ট-কে ঘুষ দিয়েছিলেন। যেখানে ওই বিচারপতিকে মোনাকোতে একটি মর্যাদাপূর্ণ পদ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়। সূত্র: আনাদোলু এজেন্সি

এ বিভাগের অন্যান্য