সাবেক এমপি হেনরীর অ্যাকাউন্টে ২ হাজার কোটি টাকার সন্দেহজনক লেনদেন
সিলেটের সময় ডেস্ক :
সিরাজগঞ্জ-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) জান্নাত আরা হেনরীর ৩৫টি ব্যাংক হিসাবে ২ হাজার ১৩ কোটি টাকার সন্দেহজনক লেনদেনের তথ্য পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এ ছাড়া তার বিরুদ্ধে ৫৭ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের পাশাপাশি স্বামী শামীম তালুকদারের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ৩৬০ কোটি টাকার সন্দেহজনক লেনদেন পেয়েছে তারা।
এ সব অভিযোগে আজ সোমবার দুপুরে তাদের বিরুদ্ধে পৃথক মামলা করেছে দুদক। প্রতিষ্ঠানটির প্রধান কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আসিফ আল-মাহমুদ ও শাহ আলম সেখ বাদী হয়ে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন ও অবৈধ সম্পদের তথ্য গোপনের দায়ে মামলা দুটি করেন।
নির্বাচনী হলফনামা অনুযায়ী, গত ৫ বছরে সবচেয়ে বেশি, ৪৯৭ গুণ সম্পদ বেড়েছে জান্নাত আরা হেনরীর। অস্বাভাবিক হারে সম্পদবৃদ্ধি পাওয়া শীর্ষ পাঁচ এমপিকে নিয়ে দুদকের করা অনুসন্ধানে এ তথ্য বেড়িয়ে আসে।
একটি উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করা জান্নাত আরা হেনরী ২০০৮ সালের নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সিরাজগঞ্জ-২ আসন প্রতিদ্বন্ধিতা করে হেরে যান। ওই নির্বাচনে নির্বাচনী হলফনামায় তার সম্পদের পরিমাণ ছিল ১৩ লাখ ২৭ হাজার টাকা।
এমপি নির্বাচনে হেরে গেলেও ২০০৯ সালে সোনালী ব্যাংকের পরিচালক নির্বাচিত হন তিনি। ২০২৪ সালে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নির্বাচনী হলফনামায় ৬৬ কোটি টাকার সম্পদ দেখান হেনরী।
দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ২৫ নভেম্বর জান্নাত আরা হেনরী, তার স্বামী শামীম তালুকদার ও মেয়ে মুনতাহা রিদায়ী লামের দেশত্যাগে স্থায়ী নিষেধাজ্ঞার আদেশ দেন আদালত।
এর আগে গত ১৯ সেপ্টেম্বর তাদের ৬০ দিনের জন্য দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞার আদেশ দিয়েছিলেন আদালত। মামলার অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তা দুদকের সহকারী পরিচালক আসিফ আল মাহমুদ তাদের দেশত্যাগে স্থায়ী নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আবেদন করেন।
ওই আবেদনের বলা হয়, জান্নাত আরা হেনরী, তার পোষ্যগণ জ্ঞাত আয়বর্হিভূতভাবে অর্থ, স্থাবর, অস্থাবর সম্পদ অর্জন করেছেন। অনুসন্ধানকালে প্রাপ্ত তথ্যাদি এবং সংশ্লিষ্টরা গুরুত্বপূর্ণ আলামত এবং অবৈধ টাকাসহ যেকোনো মুহূর্তে দেশত্যাগ করতে পারেন। এজন্য তাদের বিদেশ গমনরোধ করা আবশ্যক।
উল্লেখ্য, ৩০ সেপ্টেম্বর মৌলভীবাজার সদর থানা এলাকার একটি বাসা থেকে জান্নাত আরা হেনরি ও তার স্বামী শামীম তালুকদারকে আটক করে র্যাব-৯-এর সদস্যরা। পরে তাকে থানা-পুলিশের কাছে হস্তান্তর করলে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।