বাংলাদেশে জঙ্গিবাদ মাথাচাড়া দেওয়ার সুযোগ নেই: মুহাম্মদ ইউনূস
সিলেটের সময় ডেস্ক :
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, ‘বাংলাদেশে জঙ্গিবাদ মাথাচাড়া দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। ধর্ম নিয়ে নিরপেক্ষ দেশের তরুণ সমাজ। তারা নতুন বাংলাদেশ গড়তে চায়। এই তরুণরা বিশ্ব পরিবর্তন করতে পারে।’
প্রভাবশালী ব্রিটিশ সাময়িকী দ্য ইকোনমিস্টকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ড. ইউনূস এসব কথা বলেন। শুক্রবার (২০ ডিসেম্বর) ওই সাক্ষাৎকারের ভিডিও ইকোনমিস্টের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে।
ড. ইউনূসের সাক্ষাৎকার নেন ইকোনমিস্টের বিদেশবিষয়ক সম্পাদক প্যাট্রিক ফোলিস। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে ইসলামি চরমপন্থা ফিরে আসার কিছু ঝুঁকি রয়েছে বলে সতর্ক করেছেন যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের কর্মকর্তারা। বিষয়টিকে কীভাবে দেখছেন? জবাবে ড. ইউনূস আশ্বস্ত করে বলেন, বাংলাদেশে এমন কিছু ঘটতে যাচ্ছে না। দেশের তরুণরা খুবই উদ্যমী। ধর্মের বিষয়ে তারা খুবই পক্ষপাতহীন।’
বাংলাদেশ ইকোনমিস্টের বর্ষসেরা দেশ হওয়ায় ড. ইউনূসকে অভিনন্দন জানিয়ে এ বিষয়ে তার প্রতিক্রিয়া জানতে চান প্যাট্রিক ফোলিস। জবাবে ড. ইউনূস বলেন, ‘আমরা আনন্দিত, অত্যন্ত গর্বিত। সত্যিকার অর্থেই আমরা বড় একটি পরিবর্তন ঘটিয়েছি। ছাত্রদের কারণেই অভ্যুত্থান ঘটেছে। তখন থেকে আমরা বলছি, একটি নতুন বাংলাদেশ গড়ে তুলতে চাই।’
সাক্ষাৎকারে প্রধান উপদেষ্টা তরুণীদের ভূমিকার ওপর জোর দিয়ে বলেন, ‘আমাদের উচিত তরুণ-তরুণীদের প্রতি মনোযোগ দেওয়া। বিশেষ করে তরুণীদের ওপর। কারণ জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে তারা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। তরুণ-তরুণীদের ওপর মনোযোগ দেওয়া উচিত, যাতে তারা নিজেদের স্বপ্ন পূরণ করতে পারেন।’
যোগ্যতার দিক দিয়ে বাংলাদেশের তরুণরা কোনো অংশে কম নন, উল্লেখ করে ড. ইউনূস বলেন, অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া তিনজন তরুণকে অন্তর্বর্তী সরকারের ‘মন্ত্রিসভায়’ (কেবিনেট) যুক্ত করা হয়েছে। তারা এখন ‘মন্ত্রিসভার’ সদস্য এবং অসাধারণ কাজ করছেন। তারা বিগত শতাব্দীর নন বরং এই শতাব্দীর তরুণ।
জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের পর কী করবেন জানতে চাইলে ড. ইউনূস বলেন, ‘আসলে আমাকে আমার কাজ থেকে সরিয়ে আনা হয়েছে। জোর করে এই কাজে আমাকে যুক্ত করা হয়েছে। আমি আমার কাজ করছিলাম, তা উপভোগ করছিলাম। এ কারণেই আমি প্যারিসে ছিলাম। আমাকে ভিন্ন কিছু করার জন্য প্যারিস থেকে সরিয়ে আনা হয়। সুতরাং আমার জীবনে সব সময় যে কাজ করেছি, উপভোগ করেছি, তাতে ফিরে যেতে পারলে খুশি হব।’
উল্লেখ্য, ২০২৪ সালে ইকোনমিস্টের বর্ষসেরা দেশ নির্বাচিত হয়েছে বাংলাদেশ। সবচেয়ে সুখী বা ধনী নয়, বরং গত ১২ মাসে কোন দেশ সবচেয়ে বেশি উন্নতি করেছে, সেই বিচারে বর্ষসেরা দেশ বেছে নেওয়া হয়। বাংলাদেশকে বর্ষসেরা নির্বাচনের ক্ষেত্রে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতন এবং বাংলাদেশে নতুন যাত্রা শুরুর বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়েছে ব্রিটিশ ওই গণমাধ্যমটি।