ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গাজায় গণহত্যা চালানোর অভিযোগ অ্যামনেস্টির
আন্তর্জাতিক ডেস্ক ঃ
ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গাজার ফিলিস্তিনিদের উপর ‘গণহত্যা চালানোর’ অভিযোগ এনেছে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল।
বৃহস্পতিবার প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ অভিযোগ করেছে।
লন্ডনভিত্তিক অধিকার সংস্থাটি বলছে, ‘ইসরায়েলি সরকার ও সামরিক কর্মকর্তাদের অমানবিক এবং গণহত্যামূলক বিবৃতি’, স্যাটেলাইট ইমেজ থেকে পাওয়া ধ্বংসযজ্ঞ এবং গাজাবাসীর কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে।
অ্যামনেস্টি প্রধান আনিয়েস কালামার এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘মাসের পর মাস ইসরায়েল গাজার ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে মানবাধিকার ও মর্যাদার অযোগ্য একটি অধম গোষ্ঠী হিসেবে আচরণ করেছে, তাদের শারীরিকভাবে শেষ করে দেওয়ার ইচ্ছা প্রদর্শন করেছে।’
তিনি বলেন, তাদের প্রতিবেদনের পর আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের জেগে ওঠা উচিত। ‘এটা গণহত্যা।এটা অবশ্যই এখনই থামাতে হবে।’
গত বছরের ৭ অক্টোবর হামাস ইসরায়েলে হামলা চালানোর পর গাজায় হামলা শুরু করে ইসরায়েল।
ইসরায়েল নিয়মিতভাবে তাদের বিরুদ্ধে আনা গণহত্যার অভিযোগ অস্বীকার করে এসেছে।
কালামার জানান, অ্যামনেস্টির ৩০০ পাতার প্রতিবেদনে সেই ঘটনাগুলোর উল্লেখ করা হয়েছে যেখানে ‘হামাসের কোনো উপস্থিতি ছিল না।’
গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে এ বছরের ২০ এপ্রিল পর্যন্ত গাজায় চালানো ১৫টি বিমান হামলার উল্লেখ করে অ্যামনেস্টি বলেছে, এসব হামলা ‘মিলিটারি অবজেক্টিভ’কে লক্ষ্য করে করার কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। এসব হামলায় ১৪১ শিশুসহ ৩৩৪ জন সাধারণ মানুষ নিহত হয়েছেন।
হাজার হাজার মৃত্যু এবং শারীরিক ও মনস্তাত্ত্বিক ট্রমার পাশাপাশি গাজাবাসী ‘অপুষ্টি, ক্ষুধা ও রোগের’ শিকার এবং ‘ধীরে মৃত্যুর’ সম্মুখীন হচ্ছেন বলে অ্যামনেস্টির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
যেসব দেশ ইসরায়েলকে অস্ত্র দিচ্ছে তারা কনভেনশনের আওতায় গণহত্যা প্রতিরোধে তাদের যে বাধ্যবাধকতা রয়েছে তার লঙ্ঘন করছে বলে সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করেন কালামার।
যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর গাজায় অন্তত ৪৪ হাজার ৫৩২ জন নিহত হয়েছেন বলে হামাস পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে। নিহতদের মধ্যে বেশিরভাগই সাধারণ নাগরিক। জাতিসংঘ গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য বিশ্বাসযোগ্য মনে করে।
অ্যামনেস্টি জানিয়েছে, তারা ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের হামলা নিয়েও প্রতিবেদন প্রকাশ করবে। ওই হামলায় ১২০৮ জন নিহত হন, যাদের বেশিরভাগই সাধারণ নাগরিক।
হামলার পর ২৫১ জন ইসরায়েলিকে জিম্মি করে গাজায় নিয়ে গিয়েছিল হামাস। তাদের মধ্যে কয়েকজন ইতোমধ্যে নিহত হয়েছেন। কয়েকজনকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।