শেখ মুজিব কেন গণতন্ত্র হত্যা করে বাকশাল করলেন, প্রশ্ন জামায়াত আমিরের
সিলেটের সময় ডেস্ক :
জামায়াত আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, আওয়ামী লীগ এ দেশের একটি রাজনৈতিক দল। ১৯৭০ সাল থেকে এদেশের মানুষ দেখে এসেছে এই দলটিকে। বর্তমানের প্রজন্ম অধিকাংশই এখন রাজনৈতিক সচেতন। কিন্তু ১৯৭০ সালের দিকে ২০ শতাংশ মানুষও রাজনৈতিক সচেতন ছিলেন না। বর্তমান প্রজন্মের ৮০ ভাগই ১৯৭০ দেখে নাই। তারা শুধু বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর থেকে বিভিন্ন ক্ষমতার পরিবর্তন দেখেছে।
মঙ্গলবার রাতে যমুনা টেলিভিশনে দেশের সমসমায়িক রাজনীতি নিয়ে আলোচনায় অংশ নিয়ে এসব কথা বলেন আমিরে জামায়াত।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ১৯৭৫ থেকে শুরু করে ’৭৯, ’৮২, ’৯০, ১৯৯৬, ২০০৯ ও সর্বশেষ ২০২৪ আওয়ামী লীগকে এই প্রজন্ম দেখেছে। গোটা রাজনৈতিক অভিযাত্রায় আওয়ামী লীগ যে রোল প্লে করেছে এগুলোর দিকে নজর দিলে দেখতে পাব যে, আওয়ামী লীগ গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের প্রতি কমই সম্মান দেখিয়েছে।
জামায়াত আমির বলেন, ১৯৭০ সালের নির্বাচনে ৩০০ আসনের মধ্যে ১৬১ আসনে আওয়ামী লীগ বিজয়ী হয়েছিল। জনগণের এ রায় পাকিস্তান শাসকগোষ্ঠী মেনে না নেওয়ায় কারণে অনিবার্য হয়ে উঠেছিল মুক্তিযুদ্ধ। এতে অনেক জীবন গেল, সম্পদ নষ্ট হলো অনেক ক্ষয়ক্ষতি হলো দেশটার। কিন্তু দেশ স্বাধীন হওয়ার পরে মাত্র পৌনে চার বছরের মাথায় সবকিছু পাল্টে গেল কেন?
ভোটের অস্বীকার ও ভুট্টো সাহেবের একগুয়েমির কারণে যে মুক্তিযুদ্ধ হলো। মুক্তিযুদ্ধের কারণে দেশ স্বাধীন হলো। অনেক রক্তের বিনিময়ে দেশ স্বাধীন হল। সেই স্বাধীন দেশে আওয়ামী লীগ কী কাণ্ড করল? শেখ মুজিবর রহমান আওয়ামী লীগসহ সব দলকে নিষিদ্ধ করে দিলেন। আওয়ামী লীগের নামও থাকল না, বাংলাদেশ কৃষক শ্রমিক আওয়ামী লীগ বাকশাল গঠন করল। সেই বাকশালের যে সংবিধান ছিল সেটা পুরোপুরিভাবে একদলীয় শাসন ছিল। অন্য কোনো দলের অংশ গ্রহণের সুযোগ ছিল না। কার্যত গণতন্ত্রকে হত্যা করা হলো। কেন আওয়ামী লীগ এটা করতে গেল? ইতিহাসের সবচেয়ে ভালোবাসা ও সম্মানের জায়গায় ছিলেন শেখ মুজিবর রহমান। তিনি পাকিস্তানের কারাগারে থাকলেও মুক্তিযুদ্ধে তার ভাবমূর্তি সহায়ক শক্তি হিসেবে কাজ করেছিল। এটাকে কেউ অস্বীকার করতে পারবে না। এই জাতি তাকে যে পরিমাণে সম্মান দেখিয়েছিল জাতির ওপর আস্থা হারালেন কেন? তার নিজের হাতে বহুদলীয় গণতন্ত্র খতম হলো কেন? কোনো সময় তারা গণতন্ত্র মূল্যবোধের পরিচয় দেননি।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, আরও মজার বিষয় হচ্ছে, যে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা থাকার কারণে ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এল সেই কেয়ারটেকার ব্যবস্থাটাকে নিজ হাতে ২০০৯ সালে খতম করে দিলেন। এখন তো তারা গণহত্যা করেছে।
জামায়াতে ইসলামীর মতো আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করে দেশে রাজনৈতিকভাবে কী ধরনের প্রভাব পড়তে পারে? এমন প্রশ্নের জবাবে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, এই মুহূর্তে এটা বলা যাবে না। যেহেতু এখনো নিষিদ্ধ হয়নি। এ বিষয়ে মন্তব্য করা ঠিক হবে না।