পাচারকৃত অর্থ-সম্পদ অবিলম্বে ফ্রিজ করুন : টিআইবি
যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, সুইজারল্যান্ড, ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশ, অস্ট্রেলিয়া, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশ থেকে পাচার হওয়া অর্থ-সম্পদ ফেরত আনার লক্ষ্যে প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে বাংলাদেশিদের অবৈধ সম্পদ ফ্রিজ করার আহ্বান জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) ও যুক্তরাজ্যভিত্তিক চারটি দুর্নীতিবিরোধী সংস্থা।
মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, টিআই-ইউকে, ইউকে অ্যান্টি করাপশন কোয়ালিশন, ইন্টারন্যাশনাল লইয়ারস প্রজেক্ট, স্পটলাইট অন করাপশন ও টিআইবি কর্তৃক যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র ও বৈদেশিক উন্নয়ন বিষয়ক মন্ত্রীর সমীপে প্রেরিত যৌথ চিঠিতে ‘নতুন বাংলাদেশ’-এর দুর্নীতিমুক্ত, স্বচ্ছ, জবাবদিহিমূলক ও গণতান্ত্রিক ভবিষ্যৎ নির্মাণে তাদের প্রত্যাশিত সহযোগিতার অংশ হিসেবে জরুরি ভিত্তিতে যুক্তরাজ্য ও সংশ্লিষ্ট অন্যান্য দেশের সরকারের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে অবৈধ অর্থ-সম্পদের মালিকদের জবাবদিহি নিশ্চিত করা এবং পাচারকৃত অর্থ দেশে ফেরত আনার জন্য বাংলাদেশ সরকারকে সক্রিয় সহযোগিতার আহ্বান জানানো হয়েছে।
এ বিষয়ে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘বাংলাদেশ থেকে যেসব দেশে অর্থ ও সম্পদ পাচার করা হয়েছে, তাদের সবাই আমাদের উন্নয়ন, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ অংশীদার এবং তারা জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এ প্রতিশ্রুতির কার্যকর বাস্তবায়নের লক্ষ্যে এসব দেশকে তাদের এখতিয়ারে থাকা সব বাংলাদেশি ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের অবৈধ সম্পদ ফ্রিজ করতে অবিলম্বে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার আহ্বান জানাই।
এর আগে গত ৩০ আগস্ট যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে লেখা উক্ত চিঠিতে বলা হয়, ক্রান্তিলগ্নে থাকা বাংলাদেশে ক্ষমতাচ্যুত কর্তৃত্ববাদী সরকারের অধীনে থাকা সুবিধাভোগীদের বিপুল দুর্নীতি উদ্ঘাটিত হচ্ছে। এসব সুবিধাভোগীর পাচারকৃত অর্থ-সম্পত্তি বাংলাদেশের নাগরিকদের সম্পদ। ‘নতুন বাংলাদেশ’-এর পুনর্গঠনের পাশাপাশি দেশকে আরো স্বচ্ছ, জবাবদিহিমূলক, গণতান্ত্রিক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক করে তুলতে বিভিন্ন দেশে পাচার হওয়া এই জাতীয় সম্পদ অতি দ্রুত চিহ্নিত ও পুনরুদ্ধার করা জরুরি।
চিঠিতে তিনটি বিষয় অতি জরুরিভাবে কার্যকর করার আহ্বান জানানো হয়। প্রথমত, কোনো বাংলাদেশি ব্যক্তি বা কম্পানির দ্বারা পাচারকৃত সম্পদ যুক্তরাজ্যে রয়েছে কি না এবং তা পুনরুদ্ধারযোগ্য কি না, আর ফেরত পাঠানোর উদ্যোগের প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে ওই সম্পদ ফ্রিজ করাসহ সব পদক্ষেপ গ্রহণ।
দ্বিতীয়ত, দুর্নীতি দমন কমিশন, আর্থিক গোয়েন্দা বিভাগ, অপরাধ তদন্ত বিভাগ, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয় এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থাসহ বাংলাদেশের সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান সংস্কারের পাশাপাশি ফরেনসিক হিসাবরক্ষক ও আইনজীবীদের সক্ষমতা বৃদ্ধিতে যুক্তরাজ্য সরকারের প্রতি সহায়তা।
তৃতীয়ত, যেসব দেশে বাংলাদেশের অর্থ-সম্পদ পাচার হয়েছে তাদের সঙ্গে সহযোগিতা ও সমন্বয়ের মাধ্যমে সব সম্পদ দেশে ফেরত আনা এবং পাচারের সঙ্গে জড়িত সবার জবাবদিহি নিশ্চিতের পথ ত্বরান্বিত করার আহ্বান জানানো হয়।