কোটা আন্দোলন ঘিরে লন্ডনে মুখোমুখি আওয়ামী লীগ ও বিএনপি

সিলেটের সময় ডেস্ক :

 

বাংলাদেশে চলমান কোটা আন্দোলন ঘিরে বাংলাদেশের পাশাপাশি প্রবাসেও নানা কর্মসূচি পালিত হচ্ছে। সর্বশেষ দেশে কারফিউ জারি, দেশজুড়ে ধ্বংসযজ্ঞ ও সাধারণ ছাত্রসহ শতাধিক মানুষের মৃত্যু নিয়ে, বাংলাদেশের সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার কারণে সত্য এবং গুজবে মিলেমিশে প্রবাসীরাও ছিলেন উদ্বিগ্ন। সেই উদ্বিগ্নতা কাটতে না কাটতেই রাজনৈতিক ভাবে মুখোমুখি হচ্ছে যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগ ও বিএনপি।

২৯ জুলাই যুক্তরাজ্য হাউজ অব কমন্সের সামনে সমাবেশ আহবান করেছে আওয়ামী লীগ। এর সামান্য দূরে ১০ ডাউনিং স্ট্রিট ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনের সামনে সমাবেশ আহবান করেছে যুক্তরাজ্য বিএনপি। তাই দুই দলের মুখোমুখি কর্মসূচি নিয়ে যুক্তরাজ্য প্রবাসীরা আছেন আতঙ্কে।

গতকাল ২৭ জুলাই সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় কালে তাদের লিখিত বক্তব্যে যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ সাজিদুর রহমান ফারুক জানান, দেশকে অস্থিতিশীল করতে সাধারণ ছাত্রদের ঢাল হিসাবে ব্যবহার করে যে ভয়ংকর ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে, তা স্পষ্ট প্রমাণ করে সব ছিল পরিকল্পিত ধ্বংসযজ্ঞ। মূলত বিগত ১৫ বছরের অর্জনকে তারা ধ্বংস করতে চেয়েছে। বাংলাদেশকে অকার্যকর একটি রাষ্ট্রে যারা পরিণত করতে চায় সেই অপশক্তির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতেই মুক্তিযুদ্ধের আদর্শিক প্রগতিশীল সকল প্রবাসীদের নিয়ে আমরা পার্লামেন্টের সামনে সমবেত হচ্ছি। ব্রিটিশ সংসদ সদস্যদের জানাতে চাই, বাংলাদেশে আসলে কী ঘটেছে।

সভাপতি সুলতান শরিফ বলেন, ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে ব্রিটেন আমাদের পাশে ছিল। আমরা তাদেরকে জানাতে চাই, ১৯৭১ সালে যে দেশ আমরা স্বাধীন করেছি, সেখানে পরাজিত শক্তি ও তাদের দোসররা এখনো সচল আছে। আর এর মূল কলকাঠি নাড়ছে লন্ডনে বসে সাজাপ্রাপ্ত আসামি তারেক রহমান। সাধারণ ছাত্রদের আন্দোলনকে পূঁজি করে দেশে ধ্বংসলীলা চালিয়েছে জামায়াত ও বিএনপি। মুখোমুখি দুই দলের এই অবস্থান কর্মসূচি কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলে দায়ভার কে নেবে? প্রবাসে বাংলাদেশীদের ভাবমূর্তি ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

আওয়ামী লীগ দাবী করেছে, তাদের কাছে যাবতীয় দালিলিক প্রমাণ আছে, তারা আবেদন করেছেন এবং পুলিশ তাদের সেই সমাবেশের অনুমতি দিয়েছে। আর তারা যদি কোন সহিংস ঘটনা ঘটায় এ দেশের আইন আছে, পুলিশ আছে, সাধারণ মানুষ আছেন তাদেরকে প্রতিহত করা হবে।

এই মুখোমুখি কর্মসূচি নিয়ে যুক্তরাজ্য বিএনপির সভাপতি এম এ মালেক টেলিফোনে জানান, আওয়ামী লীগ মিথ্যাচার করছে। বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থার উদ্যোগে আমাকে প্রধান অতিথি করে হাউজ অব কমন্সে স্মারকলিপি দেওয়ার জন্য অনুমতি নেওয়া হয়েছিল এবং এক সপ্তাহ ধরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার প্রচারণা চালানো হচ্ছে। সেখানে হঠাৎ করে আওয়ামী লীগ তাদের কর্মসূচি ঘোষণা করে। পরে অন্য আবেদনের ভিত্তিতে পুলিশ আমাদের প্রধানমন্ত্রীর বরাবরে স্মারকলিপি প্রদানের জন্য সেখানে আমাদের সমাবেশের অনুমতি দিয়েছেন। আপনি চাইলে আমি আপনাকে যাবতীয় প্রমাণ দিতে পারব, বা আপনি চাইলেও সেটি খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন।

তিনি আরও যোগ করে বলেন, আমরা কোন সরকার পরিবর্তনের আন্দোলন করছি না। সাম্য ও মানুষের অধিকার নিয়ে আন্দোলন করছি হাজার হাজার ছাত্রদের রক্তে আওয়ামী লীগের হাত রঞ্জিত আমরা সেই নৃশংসতার প্রতিবাদে প্রবাসী সাধারণ ছাত্র ও মানবাধিকার সংগঠনের পাশে দাঁড়িয়েছি। কোন সহিংসতার দায়ভার বিএনপি নেবে না। সাধারণ ছাত্ররা যদি আওয়ামী লীগকে প্রতিহত করে সেটা একান্তই সাধারণ ছাত্রদের বিষয়।

গত সপ্তাহে লন্ডনে ছাত্রলীগের এক সমাবেশে বিএনপির হামলার বিষয়ে এম এ মালেক বলেন, আপনি ভিডিও দেখেন সেখানে বিএনপির আমরা কোন নেতাকর্মী কেউ ছিল না । সাধারণ ছাত্ররা ছাত্রলীগকে সেখানে আক্রমণ করেছে।

মুখোমুখি দুই রাজনৈতিক দলের অবস্থান নিয়ে প্রবাসীদের মধ্যে এক চাপা আতংক বিরাজ করছে।

এ বিভাগের অন্যান্য