কোথায় হারালেন মিস ওয়ার্ল্ড বাংলাদেশের চার সুন্দরী!
জান্নাতুল নাঈম এভ্রিল, নিশাত নাওয়ার সালওয়া, জেসিয়া ইসলাম ও রাফাহ নানজীবা তোরসা—চারজনই ‘মিস ওয়ার্ল্ড বাংলাদেশ’ থেকে শোবিজে এসেছেন। ক্যারিয়ারের শুরুতে সম্ভাবনার আলো জ্বেলেছিলেন চারজনই। কেউ সিনেমায়, কেউ বা নাটক বা মডেলিংয়ে নিজেদের মেলে ধরেছিলেন। কিন্তু অনেক দিন হলো সেভাবে আলোচনায় নেই তাঁরা।
ব্যবসা নিয়েই ভালো আছি (জান্নাতুল নাঈম এভ্রিল)
২০১৭ সালে ‘মিস ওয়ার্ল্ড বাংলাদেশ’-এ অংশ নিয়ে আলোচনায় এসেছিলেন। মুকুটও জিতেছিলেন সেরার। তবে বিবাহিত জানার পর তাঁর জায়গায় জেসিয়া ইসলামকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়।
দুবাই থেকে জানান, ‘এখানে ভালো আছি। শোবিজের প্রতি এই মুহূর্তে আগ্রহ নেই। আমার সঙ্গে অনেক নির্মাতার যোগাযোগ হয়। কাজের প্রস্তাবও দেন। আমি যে ধরনের কাজ করতে চাই, সে রকম কিছু পাই না, যার কারণে শোবিজের চিন্তা বাদ দিয়ে ব্যবসা নিয়েই আছি।’ ভবিষ্যতে অভিনয়ে ফিরবেন? এভ্রিল বলেন, ‘বলতে পারছি না। হয়তো ফিরব, তবে দুই-এক বছরের মধ্যে নয়।’
কাজ নিয়ে ভাবছি না (জেসিয়া ইসলাম)
এভ্রিলের মতো জেসিয়ার ক্যারিয়ারও শুরু ছোট পর্দায়। ‘জন্মদিন’, ‘কাগজের উড়োজাহাজ’, ‘ব্যাচেলর ডট কম’, ‘বর্ণ পরিচয়’সহ বেশ কয়েকটি নাটক-টেলিছবিতে অভিনয় করেছিলেন। ‘তোর জন্য’ শিরোনামের একটি গানেও মডেল হয়েছিলেন। গত বছর ‘এমআর ৯-ডু অর ডাই’ ছবি দিয়ে বড় পর্দায় অভিষেক হয় জেসিয়ার। অনন্য মামুনের মুক্তি প্রতীক্ষিত ‘দরদ’-এও অতিথি চরিত্রে দেখা যাবে। তবে এই মুহূর্তে হাতে কোনো কাজ নেই জেসিয়ার। গতকাল তিনি বলেন, ‘নভেম্বর মাসে একটি আন্তর্জাতিক রিয়ালিটি শোতে অংশ নেব। এখন সেটি নিয়েই কাজ করছি। আপাতত হাতে নতুন কাজের প্রস্তাব নেই। তা ছাড়া আমি আগ্রহবোধও করছি না।’
প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান জাজ মাল্টিমিডিয়ার ‘এমআর ৯-ডু অর ডাই’-এর দ্বিতীয় কিস্তিতে অভিনয় করবেন বলে জানা গিয়েছিল। তবে জেসিয়া এই মুহূর্তে সেটার খবর বলতে পারছেন না। বলেন, ‘কবে শুটিং, কারা থাকবেন সেটা প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান বলতে পারবে। আমি এখন রিয়ালিটি শোটি নিয়েই ভাবছি, অন্য কাজ নিয়ে নয়।’
পরিবার চায় না আমি অভিনয় করি (নিশাত নাওয়ার সালওয়া)
‘স্বপ্নে দেখা রাজকন্যা’ দিয়ে চলচ্চিত্রে পা রেখেছিলেন। ছবিটি মুক্তি না পেলেও তাঁর দ্বিতীয় ছবি ‘বুবুজান’ ও তৃতীয় ছবি ‘বীরত্ব’ এরই মধ্যে প্রেক্ষাগৃহে দেখেছে দর্শক। মুক্তির অপেক্ষায় প্রয়াত অভিনেত্রী সারাহ বেগম কবরীর ‘এই তুমি সেই তুমি’। সালওয়াকে নিয়ে যখন নির্মাতারা পরিকল্পনা করছেন, ঠিক তখনই তিনি উড়াল দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রে। পরিবার চায় না মেয়ে শোবিজে কাজ করুক, এটাই জানালেন সালওয়া। বলেন, ‘আমি পরিবারকে অনেক ভালোবাসি। প্রথম দিকে শোবিজে কাজ করা নিয়ে মা-বাবা কিছু বলেননি। এখন আর তাঁরা সায় দিচ্ছেন না। পড়াশোনা করার জন্য বিদেশে পাঠিয়েছেন। আমিও মা-বাবার মনে কষ্ট দিতে চাই না। তাঁদের সিদ্ধান্ত মেনে নিয়েছি। ভবিষ্যতে পড়াশোনা শেষে তাঁরা যদি চান তাহলে আবার অভিনয়ে ফিরব।’
সাংবাদিকদের বলব, যাঁরা মেধাবী তাঁদের তুলে ধরুন (রাফাহ নানজীবা তোরসা)
২০১০ সালে মার্কস অলরাউন্ডার রিয়ালিটি শোর ফার্স্ট রানার আপ হয়েছিলেন। তখনই চাইলে শোবিজে কাজ করতে পারতেন। তিনি প্রাধান্য দিয়েছেন পড়াশোনাকে। ২০১৯ সালে যখন মিস ওয়ার্ল্ড বাংলাদেশ নির্বাচিত হলেন তখনো একের পর এক কাজের প্রস্তাব পেয়েছিলেন। পড়াশোনাটা তখনো শেষ না হওয়ায় নিয়মিত হননি। এ বছর পড়াশোনার চ্যাপ্টারটা শেষ হয়েছে। তাই নতুন করে নিজেকে মেলে ধরার পরিকল্পনা করেছেন তোরসা। তোরসা বলেন, ‘অনেকের তুলনায় আমি কম কাজ করেছি। হয়তো দর্শক আমাকে আরো বেশি পর্দায় দেখতে চেয়েছে, আমি তাদের চাওয়া পূরণ করতে পারিনি। তবে একেবারে বসে ছিলাম, তা কিন্তু নয়। ২০১৯-২০২৩ সাল পর্যন্ত অনেক আন্তর্জাতিক শোতে অংশ নিয়েছি। দক্ষিণ কোরিয়া, নেপাল, দুবাই, ভারত, জাপান—অনেক দেশেই বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেছি। শুধু যে অভিনয় করলেই শোবিজে নিয়মিত ধরা হয় তা নয়, আমি তো মনে করি এভাবে কাজ করেও নিয়মিত থাকা যায়।’ কিছু দোষ নির্মাতাদের ওপরও চাপিয়েছেন তোরসা। বলেন, ‘দীর্ঘ ১৪ বছর শোবিজে আছি। প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকেও পুরস্কার পেয়েছি। আমাকে কম বেশি সবাই চেনেন। তাঁরা কেন আমাকে ডাকেন না! নিজে থেকে তো বলতে পারি না আমাকে নাটক-ছবিতে নেন। সাংবাদিকদের বলব, যাঁরা মেধাবী তাঁদের তুলে ধরুন। তাহলে প্রযোজক-পরিচালকদের চোখে পড়বে। নইলে মেধাবীরা গোপনে হারিয়ে যাবে।’