চতুর্থ ধাপেও ভোট ৬০ শতাংশের ঘরে

 আন্তর্জাতিক ডেস্ক ঃ 

ভারতের লোকসভা নির্বাচনের চতুর্থ ধাপে গতকাল সোমবার ৯টি রাজ্য ও একটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের মোট ৯৬টি আসনে ভোট হয়েছে। এদিন ভোটগ্রহণের হার ছিল ৬২.৩ শতাংশ। এদিন পশ্চিমবঙ্গ ও অন্ধ্র প্রদেশে সংঘর্ষের খবর পাওয়া গেছে।

গতকাল দক্ষিণ ভারতের অন্ধ্র প্রদেশের ২৫টি আসনের সব কয়টি ও তেলেঙ্গানার ১৭টির সব কয়টি, উত্তর প্রদেশের ৮০টির মধ্যে ১৩টি, মহারাষ্ট্রের ৪৮টি আসনের ১১টি, পশ্চিমবঙ্গের ৪২টি আসনের আটটি, বিহারের ৪০টির মধ্যে পাঁচটি, ঝাড়খণ্ডের ১৪টি আসনের মধ্যে চারটি, মধ্য প্রদেশের ২৯টির মধ্যে আটটি, ওড়িশার ২১টি আসনের চারটি এবং কেন্দ্রশাসিত জম্মু ও কাশ্মীরের পাঁচটি আসনের একটিতে ভোট হয়েছে।

এই ধাপের মধ্য দিয়ে দক্ষিণ ভারতের সব কয়টি লোকসভা আসনের ভোটগ্রহণ শেষ হলো। 

ভোট হওয়া রাজ্যগুলোর মধ্যে মধ্য প্রদেশ ও উত্তর প্রদেশে বিজেপির সরকার রয়েছে। মহারাষ্ট্র ও বিহারের জোট সরকারেও রয়েছে বিজেপি। ওড়িশায় ক্ষমতায় আছে বিজু জনতা দল (বিজেডি)।
বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোটের অংশ না হলেও ক্রমেই এই জোটের দিকে ঝুঁকছে বিজেডি। অন্যদিকে দক্ষিণ ভারতের অন্ধ্র প্রদেশে আঞ্চলিক দল যুবজন শ্রমিক রিথু (ওয়াইএসআর) কংগ্রেস পার্টি এবং তেলেঙ্গানায় জাতীয় কংগ্রেস দল ক্ষমতায় আছে। ঝাড়খণ্ডে ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা এবং পশ্চিমবঙ্গ শাসন করছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৃণমূল কংগ্রেস। দুটি দলই ইন্ডিয়া জোটের শরিক।
অন্যদিকে কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিলের পর থেকে গত কয়েক বছর ধরে জম্মু কাশ্মীর পরিচালনা করছে কেন্দ্রীয় সরকার। গতকাল ভোট হওয়া ৯৬টি আসনের মধ্যে ২০১৯ সালে ৫০টিতে জয় পেয়েছিল বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোট। কংগ্রেস ও এর শরিকরা পেয়েছিল মাত্র ১৩টি আসন। সেবার ওয়াইএসআর কংগ্রেস পার্টি ২২টি এবং তেলেঙ্গানাভিত্তিক ভারত রাষ্ট্র সমিতি (বিআরএস) ৯টি আসনে জয় পায়। আর আসাদউদ্দিন ওয়াইসির ইসলামী দল পায় দুটি আসন।

 

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও কংগ্রেসের রাহুল গান্ধীর বিতর্কিত মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে বিজেপি ও কংগ্রেস প্রধানকে নোটিশ পাঠানোর পর নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা নিয়ে বিরোধীদের প্রশ্নের প্রেক্ষাপটে গতকাল ভোট হলো।

চতুর্থ ধাপের ভোটে বিজেপি ও বিরোধী দলের বেশ কয়েকজন জ্যেষ্ঠ নেতা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। বিজেপির কেন্দ্রীয় মন্ত্রী গিরিরাজ সিং ও অজয় মিশ্র তাঁদের অন্যতম। বিরোধীদলীয় রাজনীতিকদের মধ্যে তৃণমূল কংগ্রেসের মহুয়া মৈত্র দুর্নীতির অভিযোগে স্থগিত হওয়া এমপি পদ ফিরে পাওয়ার আশায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এ ছাড়া সমাজবাদী পার্টির প্রধান অখিলেশ যাদব, কংগ্রেসের অধীর রঞ্জন চৌধুরী, তৃণমূল কংগ্রেসের শত্রুঘ্ন সিনহা ও ইউসুফ পাঠান, ন্যাশনাল কনফারেন্সের ওমর আব্দুল্লাহ, অল ইন্ডিয়া মজলিস-ই-ইত্তেহাদুল মুসলিমিনের প্রধান আসাদউদ্দিন ওয়াইসি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।গতকাল অন্ধ্র প্রদেশের তিনটি জেলায় ক্ষমতাসীন ওয়াইএসআর কংগ্রেস পার্টির সমর্থকদের সঙ্গে বিরোধী দল তেলেগু দেশম পার্টির (টিডিপি) সমর্থকদের সংঘর্ষ হয়েছে। এতে কয়েকজন হতাহত হয়েছে। সূত্র বলছে, ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীরা টিডিপির সমর্থকদের ভোটকেন্দ্রে যেতে বাধা দেওয়ায় এই সংঘর্ষ বাধে।পশ্চিমবঙ্গের কৃষ্ণনগরে তৃণমূল কংগ্রেসের সমর্থকদের সঙ্গে সংঘর্ষে সিপিএমের এক সমর্থক আহত হয়েছেন। এ ছাড়া বর্ধমান ও দুর্গাপুর আসনে সংঘর্ষ হয়েছে। এর আগে লোকসভা নির্বাচনের প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় ধাপে যথাক্রমে ৬৬.১, ৬৬.৭ ও ৬১ শতাংশ ভোট পড়ে। ২০১৯ সালের তুলনায় এবার ভোটের হার কম। চলতি লোকসভা নির্বাচনে ৩৬টি প্রদেশ ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের ৫৪৩টি আসনে নিবন্ধিত ভোটারের সংখ্যা ৯৬ কোটি ৯০ লাখ।

প্রথম চার ধাপে লোকসভার ৩৮০ জন এমপির ভাগ্য নির্ধারিত হয়েছে। এরই মধ্যে অন্ধ্র প্রদেশ, তেলেঙ্গানা, তামিলনাডু, কেরালা, মেঘালয়, আসাম, মণিপুর, কর্ণাটক, মিজোরাম, অরুণাচল প্রদেশ, নাগাল্যান্ড, উত্তরাখণ্ড, ছত্তিশগড়, গোয়া, গুজরাট, রাজস্থান, সিকিম, ত্রিপুরা এবং কেন্দ্রশাসিত আন্দামান নিকোবর, দাদরা নগর হাভেলি, দমন, দিউ, লাক্ষাদ্বীপ ও পুদুচেরির সব আসনে ভোটগ্রহণ শেষ হয়েছে। আগামী ২০ মে পঞ্চম ধাপ, ২৫ মে ষষ্ঠ ধাপ ও ১ জুন সর্বশেষ ধাপের ভোট হবে। আগামী ৪ জুন ফল প্রকাশ করা হবে।

সূত্র : এনডিটিভি

এ বিভাগের অন্যান্য