ভোক্তার আয়-ব্যয়ের হিসাবের সঙ্গে মিলছে না বাজারদর

সিলেটের সময় ডেস্ক :

 

 

সরকার চাল, ভোজ্য তেল, চিনি, খেজুরসহ কয়েকটি পণ্যের ওপর আমদানি শুল্ক কমিয়ে দেওয়ার পরও ডলারের বাড়তি মূল্যের কারণে দেশে ভোগ্য পণ্যের দাম কমছে না। গত এক বছরে কিছু কিছু পণ্যের দাম দুই গুণের বেশি বেড়েছে।

আমদানিকারকরা বলছেন, ১২০ থেকে ১২৫ শতাংশ মার্জিন দিয়েও তাঁরা পণ্য আমদানির জন্য ঋণপত্র খুলতে পারছেন না। আমদানি খরচ ২০ থেকে ৩০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে।

 

এর প্রভাব পড়েছে বাজারে। ফলে ভোক্তাদের আয়-ব্যয়ের হিসাবের সঙ্গে বাজারদর কোনোভাবেই মিলছে না।

২০২২ সালের ১ জুন এক মার্কিন ডলার বিক্রি হয়েছে ৮৯ টাকায়। আর ২০২৩ সালের ৪ জুলাই ডলারের দাম বেড়ে দাঁড়িয়েছিল ১০৮ টাকা ৮৫ পয়সা।

 

গত রমজানে ডলারের বিনিময়মূল্য ছিল ৯০ টাকা, এই রমজানে ১২০ টাকা। এক বছরে ৩০ টাকা বাড়তি ডলারের মূল্য ভোগ্য পণ্যের বাজারে ভোক্তাদের ওপর চাপ সৃষ্টি করছে।

গত রমজানে (২০২৩) চিকন চালের কেজি ছিল ৬০ থেকে ৬২ টাকা, এখন ৭৫ থেকে ৭৮ টাকা। গত বছর মোটা চালের কেজি ছিল ৪৫ টাকা, এখন ৫৫-৫৬ টাকা।

 

এক বছরের ব্যবধানে দাম বেড়েছে ২২ শতাংশ। চিনির দাম এক বছর আগে ছিল ১১৫ থেকে ১২০ টাকা, এখন হয়েছে ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা।  আদার দাম ৬০ শতাংশ বেড়ে এখন বিক্রি হচ্ছে ২৫০ থেকে ২৮০ টাকা দরে। দারচিনির কেজি ছিল ২৫০ টাকা, এখন ৩৯০ থেকে ৪৮৫ টাকা।

গত বছর ১৩০ থেকে ১৬০ টাকায় বিক্রি হওয়া রসুন এখন বিক্রি হচ্ছে ১৮০ থেকে ২২০ টাকা কেজি দরে।

মসুর ডাল ৩৬ শতাংশ দাম বেড়ে এখন বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকায়। সর্বোচ্চ ২৩৩ শতাংশ বেড়েছে পেঁয়াজের দাম। 

রোজার বাজার স্থিতিশীল রাখতে গত ৮ ফেব্রুয়ারি চাল, ভোজ্য তেল, চিনি ও খেজুরের ওপর আমদানি শুল্ক কমিয়ে দেয় সরকার। সয়াবিন তেল ও পাম তেল আমদানি পর্যায়ে ১৫ শতাংশ ভ্যাট কমিয়ে ১০ শতাংশ করা হয়েছে। খেজুরের আমদানি শুল্ক ১০ শতাংশ কমানো হয়। সিদ্ধ ও আতপ চালের আমদানি শুল্ক পুরোপুরি প্রত্যাহার করা হয়। পরিশোধিত সয়াবিন তেল ও পাম তেলের উৎপাদন ও ব্যবসা পর্যায়ের মূল্য সংযোজন কর (মূসক বা ভ্যাট) পুরোপুরি তুলে নেওয়া হয়েছে।

এত কিছুর পরও কেন দেশে ভোগ্য পণ্যের দাম কমছে না? বিষয়টি নিয়ে আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান বিএসএম গ্রুপের চেয়ারম্যান আবুল বশর চৌধুরী বলেন, ডলারের বিপরীতে টাকার অবমূল্যায়নের কারণে আমদানি ব্যয়ও বেড়েছে। তা ছাড়া ডলারের অস্থির মূল্যের কারণে অনেক আমদানিকারক আমদানি কমিয়ে দিয়েছেন। এসব কারণে পণ্যের দাম বেড়ে গেছে।

চাক্তাই খাতুনগঞ্জের সাধারণ আড়তদার ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সাবেক সভাপতি সোলায়মান বাদশা বলেন, এ বছর আড়তে মালপত্র এলেও যেসব পণ্য তিন মাস আগের, ডলারপ্রতি খরচ হয়েছে ১২০ টাকার ওপরে। তার মধ্যে শতভাগ মার্জিন ও পণ্যভেদে উচ্চ শুল্কায়ন দিয়ে পণ্য খালাস করতে হয়েছে। এর প্রভাব পড়েছে বাজারে।

খাতুনগঞ্জ ট্রেড অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ সগীর আহম্মদ কালের কণ্ঠকে বলেন, বিশ্বব্যাপী দাম কমলেও দেশে ডলার সংকট, লোহিত সাগরের উত্তেজনায় কিছু কিছু পণ্যের দাম বাড়ছে।

এ বিভাগের অন্যান্য