উপজেলা ভোটে যাওয়ার পক্ষে মত বাড়ছে বিএনপিতে

সিলেটের সময় ডেস্ক :

 

আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে বিএনপি দলীয়ভাবে অংশগ্রহণ করছে না, এটা প্রায় নিশ্চিত। তবে এই নির্বাচন নিয়ে দলের উচ্চ পর্যায়ে দুই ধরনের ভাবনা তৈরি হয়েছে।

একটি হলো দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের মতো উপজেলার ভোটও বর্জন করে ভোটার উপস্থিতি কমানো। এর মধ্য দিয়ে স্থানীয় সরকার নির্বাচনেও ভোট বর্জনের নজির স্থাপন করা।

 

দ্বিতীয় ভাবনা হলো, তৃণমূলের মনোভাব জানতে কিছুদিন পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে রাখা। আগ্রহী নেতাদের নির্বাচনে যেতে নিরুৎসাহ করা। এর পরও কেউ ভোটে অংশ নিতে চাইলে তাঁদের স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে বাধা না দেওয়া।

গত সোমবার আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের জরুরি সভায় সিদ্ধান্ত হয়, নৌকা প্রতীকে এবার আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেবে না।

 

তবে এটি সরকারের কৌশল মনে করছে বিএনপি। দলের শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের মতে, নির্দলীয় প্রতীকে নির্বাচন দিয়ে ভোটার উপস্থিতি বাড়াতে এই কৌশল নেওয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীতে ওলামা দলের এক অনুষ্ঠানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আব্দুল মঈন খান বলেন, ‘উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নিজেদের নৌকা নিজেরাই উঠিয়ে নিয়েছে। তারা বুঝতে পেরেছে, মানুষ নৌকাকে প্রত্যাখ্যান করেছে।

’বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া পাওয়া গেছে। দলের ভেতরে নির্বাচনে যাওয়ার পক্ষে মতও বাড়ছে।

দলের নির্ভরযোগ্য সূত্র বলছে, উপজেলা নির্বাচনের তফসিলের আগেই বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলামসহ গুরুত্বপূর্ণ কয়েকজন নেতা কারাগার থেকে মুক্তি পেতে পারেন। তাঁদের মুক্তির পর বিষয়টি আরো ব্যাপকভাবে আলোচনায় আসতে পারে।

সম্প্রতি বিএনপির স্থায়ী কমিটির এক বৈঠকে উপজেলা নির্বাচন নিয়ে অনির্ধারিত আলোচনা হলেও সেখানে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি।

 

আওয়ামী লীগ তাদের সিদ্ধান্ত জানানোর পর কয়েক দিনের মধ্যে স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এ নিয়ে আলোচনা হতে পারে বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে। তা ছাড়া এ বিষয়ে তৃণমূল নেতাদের মতামতও নেওয়া হতে পারে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় কালের কণ্ঠকে বলেন, উপজেলা নির্বাচনের বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনব্যবস্থার প্রতি মানুষের অনাস্থা তৈরি হয়েছে। মানুষ এখন আর ভোটকেন্দ্রে যায় না। এ অবস্থা থেকে বের হয়ে আসতে হলে আগে দলনিরপেক্ষ সরকারের অধীনে সংসদ নির্বাচন করতে হবে। নইলে নির্বাচন হবে, কিন্তু জনগণের অংশগ্রহণ থাকবে না।

দলের উচ্চ পর্যায়ের কয়েকজন নেতার বিশ্লেষণ, উপজেলা নির্বাচন নিয়ে আলোচনা শুরু হলেও স্থানীয় পর্যায় থেকে কেউ আগ্রহ দেখায়নি। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের পরপরই আবার নির্বাচনে অংশগ্রহণের বিষয়ে নেতাকর্মীরা আগ্রহ হারিয়েছেন। নেতাকর্মীদের এই মনোভাব অটুট থাকলে উপজেলা নির্বাচনও বর্জনের ডাক দেওয়া যেতে পারে। দলের নেতারা মনে করেন, পরিস্থিতি অনুকূলে থাকলে নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি কমিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে আরেকটি ‘গণঅনাস্থা’ জানানোর পরিকল্পনা নেওয়া যেতে পারে।

দলের গুরুত্বপূর্ণ দুইজন নেতার সঙ্গে আলাপকালে তাঁরা বলেন, বিএনপির ডাকে সাড়া দিয়ে জনগণ দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন বর্জন করেছে। দল হিসেবে এই অর্জনের পরপরই উপজেলা নির্বাচনে যাওয়ার প্রেক্ষাপট নেই। এতে দলীয় নেতাকর্মী, সমর্থক ও জনগণের কাছে ভুল বার্তা যাবে।

এ বিভাগের অন্যান্য