২৬ কোটি টাকার ঋণখেলাপি হাফিজ আহমেদ কারাগারে

সিলেটের সময় ডেস্ক :

 

ফাস্ট গ্রুপ প্রতিষ্ঠানের মালিক হাফিজ আহমেদকে কারাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ। বুধবার (৩ জানুয়ারি) এ তথ্য নিশ্চিত করেন রাজধানীর ধানমন্ডি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকতা (ওসি) পারভেজ ইসলাম।

তদন্তে পুলিশ জেনেছে, তার স্ত্রী সাইফুন্নাহার মাহেনোকে চেয়ারম্যান বানিয়ে গড়ে তুলেছেন ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ফাস্ট গ্রুপ। এরপর গ্রুপের সহযোগী প্রতিষ্ঠান হিসেবে সৃষ্টি করেছেন বিভিন্ন কম্পানি।

 

পুলিশ জানায়, তিনি মূলত আঠা ও রং পেন্সিল ব্যবসায়ী হাফিজ আহমেদ নতুন নতুন কম্পানি খুলেছেন বিভিন্ন ব্যাংক থেকে ঋণের নামে অর্থ আত্মসাতের জন্য। ফাস্ট কর্পোরেশন প্রাইভেট লিমিটেড নামে কম্পানি খুলে এনআরবিসি ব্যাংক থেকে নিয়েছেন ২৬ কোটি টাকার ঋণ। প্রথম দিকে কিস্তির টাকা পরিশোধ করলেও অল্পদিনেই বেরিয়ে আসে আসল রূপ। ব্যাংকের টাকা ফেরত দিতে গড়িমসি শুরু করেন।

টাকা আদায়ে ব্যাংক তার বিরুদ্ধে এনআই অ্যাক্টে মামলা করে। সেই মামলা বর্তমানে কারাগারে আছেন হাফিজ আহমেদ। 

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ১৯৯৩ সালে ফাস্ট গ্রুপ প্রতিষ্ঠা করেন হাফিজ আহমেদ। ওই গ্রুপের মূল ব্যবসায় ছিল বিভিন্ন ধরনের আঠা উৎপাদন ও বিপণন করা।

এরপর গড়ে তোলেন ফাস্ট কর্পোরেশন লিমিটেড। এই প্রতিষ্ঠানটি মূলত ‘ফেবার-ক্যাসেল’ ও ‘আর্টলাইন’ ব্র্যান্ডের রং পেনসিল, রাবার, বক্স ইত্যাদি ছবি আঁকার স্টেশনারি উপকরণ বিক্রি করে। ২০১৪ সালে এনআরবিসি ব্যাংকের প্রিন্সিপাল শাখা থেকে ওই কম্পানির নামে ঋণ নেন। সুদে আসলে হাফিজ আহমেদের কাছে ব্যাংকের পাওনা ২৬ কোটি টাকা। সাধারণ ঋণ, মেয়াদি ঋণ, সিসি ঋণ, এলটিআর, লিজ ফাইন্যান্স হিসেবে এই ঋণ নেওয়া হয়।
ঋণ গ্রহণের অল্প দিনের মধ্যেই পরিশোধ বন্ধ করে দেওয়ায় তিনি খেলাপি হয়ে যান। ব্যাংকের তদারকিতে পরবর্তীতে সময়মতো কিস্তি পরিশোধ করবেন এমন শর্তে ২০১৬ সালে পুনঃ তফসিল সুবিধা গ্রহণ করেন। এরপর আবার খেলাপি হয়ে যায়। 

ঋণের টাকা আদায়ে আইনি পদক্ষেপ হিসেবে তার বিরুদ্ধে এনআই অ্যাক্টে ৪টি মামলা করে এনআরবিসি ব্যাংক। ৩১ আগস্ট একটি চেক ডিস-অনার মামলার বিপরীতে সমুদয় পাওনা পরিশোধের নির্দেশ এবং ১ বছরের কারাদণ্ড দিয়ে তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন মহামান্য আদালত। সেই আদেশের প্রক্ষিতে ২৩ ডিসেম্বর হাফিজ আহমেদকে আটক করে ধানমন্ডি থানায় হস্তান্তর করে গোয়েন্দা পুলিশ। বর্তমানে তিনি কারগারে আছেন।

উল্লেখ্য, দেশের আরো ৮টি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ নিয়ে তা ফেরত দিচ্ছেন না হাফিজ আহমেদ।

এনআরবিসি ব্যাংক কর্মকর্তারা জানান, যারা ব্যাংকের টাকা নিয়ে ফেরত দিতে গড়িমসি করছেন তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিচ্ছে এনআরবিসি ব্যাংক। আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। ইতিমধ্যে ব্যাংকের দায়ের করা মামলায় ৩০ জন ঋণখেলাপির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত। দুজন কারাগারে আছেন। ঋণখেলাপিদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ অব্যাহত থাকবে।

এ বিভাগের অন্যান্য