কুমিল্লায় একাত্তর টিভির সাংবাদিকদের ওপর নৌকার কর্মীদের হামলার অভিযোগ

সিলেটের সময় ডেস্ক :

 

কুমিল্লা নগরীতে একাত্তর টেলিভিশনের স্থানীয় সাংবদিক ও ক্যামেরা পারসনের ওপর হামলা চালানোর অভিযোগ উঠেছে নৌকার প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকদের বিরুদ্ধে। হামলার শিকার সাংবাদিকরা জানিয়েছেন- সংবাদের লাইভে যুক্ত হওয়ার সময় এই হামলা চালানো হয়েছে। এ সময় সাংবাদিকের মোবাইল ফোন ও লাইভ ডিভাইস ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনা ঘটেছে।

আজ বুধবার (২০ ডিসেম্বর) বেলা ১১টার দিকে নগরীর শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত স্টেডিয়ামের ফটকে এ ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছেন একাত্তর টেলিভিশনে কুমিল্লায় কর্মরত নিজস্ব প্রতিবেদক কাজী এনামুল হক ফারুক।

 

হামলার শিকার ফারুক কুমিল্লা প্রেস ক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও কুমিল্লা টেলিভিশন সাংবাদিক ফোরামের সভাপতি। কুমিল্লা-৬ (আদর্শ সদর, সিটি করপোরেশন ও সেনানিবাস এলাকা) আসনের নৌকার প্রার্থী ও বর্তমান সংসদ সদস্য আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহারের অনুসারীরা এই হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ সাংবাদিক ফারুকের। আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি।

কাজী এনামুল হক ফারুক বলেন, অফিসের লাইভ প্রোগ্রাম ছিল।

আমি যুক্ত হওয়ার জন্য স্টেডিয়াম এলাকায় আসি। সেখানে কুমিল্লা-৬ সদর আসনের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ও বর্তমান সংসদ সদস্য আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহারের নির্দেশে তার নেতাকর্মীরা আমার ওপর হামলা করে। এ সময় তারা আমাদের ক্যামেরাপারসন সাইদুর রহমান সোহাগের ওপরও হামলা করে। হামলাকারীরা আমার মোবাইল ফোন ও লাইভ ডিভাইস নিয়ে গেছে।
 

ক্যামেরাপারসন সাইদুর রহমান সোহাগ বলেন, আমরা লাইভে যুক্ত হচ্ছিলাম। এ সময় সেখানে উপস্থিত থাকা এমপি সাহেবের নির্দেশে তাঁর নেতাকর্মীরা ফারুক ভাই ও আমার ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। তারা আমাকে এলোপাতাড়ি মেরেছে। আমার পুরো শরীরে ব্যথা করছে। ঘটনার পর সহকর্মীরা আমাকে কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে।

এ ঘটনায় সবাই আতঙ্কিত হয়ে পড়ে। 

হামলার শিকার সাংবাদিকরা জানান, গত ১৮ ডিসেম্বর প্রতীক বরাদ্দের পর এমপি বাহার তাঁর একটি উঠান বৈঠকে ‘বিএনপি-জামায়াতের কোনো কর্মীকে নির্বাচনে কোনো প্রার্থীর পক্ষে পাওয়া গেলে তাদের হাত-পা ভেঙে দেওয়ার নির্দেশ দেন’। একাত্তর টিভিতে প্রচারিত এমপি বাহারের এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে সমালোচনার সৃষ্টি হয়। এ অভিযোগে কুমিল্লা সদর আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ও এমপি আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহারকে একদিনে দুটি শোকজ করে নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটি। মঙ্গলবার (১৯ ডিসেম্বর) তাকে শোকজ করেন কুমিল্লা-৬ সংসদীয় আসনে নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটির চেয়ারম্যান ও যুগ্ম জেলা জজ মো. সিরাজ উদ্দিন ইকবাল। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে এই হামলা চালানো হয়েছে বলে দাবি হামলার শিকার সাংবাদিকদের।

এ প্রসঙ্গে জানতে রিটার্নিং কর্মকর্তা ও কুমিল্লার জেলা প্রশাসক খন্দকার মু.মুশফিকুর রহমানের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।

তবে এই বিষয়ে জানতে চাইলে কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও এমপি বাহারের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির যুগ্ম-আহ্বায়ক আতিক উল্লাহ খোকন বলেন, ঘটনার সময় আমি এমপি সাহেবসহ মঞ্চে ছিলাম। পরে শুনেছি সেখানে কার সঙ্গে যেন সাংবাদিকদের বাকবিতণ্ডা হয়েছে। আমরা বিষয়টি দেখছি। ঘটনাটি দ্রুত সময়ের মধ্যে সমাধান করা হবে। আর যদি সাংবাদিকের মোবাইল ফোন ও লাইভ ডিভাইস কেউ নিয়ে থাকে ম সেগুলোও ফেরত দেওয়া হবে।

তিনি বলেন, মূলত ঘটনাটি হলো এমপি সাহেবের বক্তব্যকে খণ্ডিত করে প্রচার করা হয়েছে। তিনি একটি কথা আগে ও পরে কী বলেছেন- সেটি দেখানো হয়নি। এটা তো সাংবাদিকতা হতে পারে  না। কারো বক্তব্য বিকৃত বা খণ্ডিতভাবে আপনি প্রচার করে নির্বাচনী পরিবেশ নষ্ট করতে পারেন না। এসব ঘটনায় মানুষের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে।

এ বিভাগের অন্যান্য