গাজা থেকে ছয় লাখ লোককে সরে যেতে বলেছে ইসরায়েল

আন্তর্জাতিক ডেস্ক ঃ

 

এক সপ্তাহ যুদ্ধবিরতির পর থেকে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় পূর্ণ মাত্রায় হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। দক্ষিণ গাজার খান ইউনিস এবং উত্তর গাজার জাবালিয়া ও শুজাইয়া এলাকায় স্থল অভিযান জোরদার করেছে তেল আবিব। নিরাপদ আশ্রয়ের অভাব সত্ত্বেও দক্ষিণ গাজা থেকে ছয় লাখ লোককে সরে যেতে বলেছে ইসরায়েল।

খাদ্য ও পানি সংকটে এক বেলা আহার জুটছে ফিলিস্তিনিদের।

যুদ্ধের তীব্রতা বাড়তে থাকায় অবরুদ্ধ উপত্যকাটিতে চরম মানবিক বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। 

হামাস বলেছে, গাজায় হামলা বন্ধ না হলে ইসরায়েলের সঙ্গে কোনো ধরনের আলোচনা হবে না। ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী গত মঙ্গলবার বলেছেন, যুদ্ধের পর গাজার নিরস্ত্রীকরণ প্রক্রিয়া নিজের নিয়ন্ত্রণে রাখা উচিত ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ)।

উত্তর-দক্ষিণে তুমুল লড়াই

দক্ষিণ গাজার প্রধান শহর খান ইউনিসে গতকাল বুধবার হামাসের সঙ্গে ইসরায়েলি বাহিনীর তীব্র লড়াই হয়েছে।

সেখানে কয়েক মিনিট পর পর বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। 

ফিলিস্তিনি যোদ্ধারা ট্যাংকবিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে ইসরায়েলের আর্টিলারি ট্যাংকে হামলা চালাচ্ছেন। অন্যদিকে ইসরায়েল বিভিন্ন আবাসিক এলাকায় হামলা চালাচ্ছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছে, ট্যাংক, সাঁজোয়া যান ও বুলডোজার নিয়ে খান ইউনিসে অভিযান চালিয়েছে ইসরায়েলি সেনারা।

 

গোলাবর্ষণ থেকে রক্ষা পেতে লোকজন নিরাপদ আশ্রয় নেওয়ার চেষ্টা করায় গতকাল সকালে খান ইউনিসের সড়কগুলো ছিল পুরোপুরি জনশূন্য।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, যুদ্ধবিরতির পর থেকে ইসরায়েলি হামলায় গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত এক হাজার ৪৪৮ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। এ নিয়ে মোট নিহতের সংখ্যা ১৬ হাজার ২৪৮ জনে দাঁড়িয়েছে, যাদের মধ্যে প্রায় সাত হাজারই শিশু।

খাদ্য ও পানি সংকট

মধ্য গাজার দেইর আল-বালাহ থেকে আলজাজিরার সাংবাদিক জানিয়েছেন, ইসরায়েলি হামলার মুখে রাফাহতে যাওয়ার উদ্দেশে অগণিত মানুষ দেইর আল-বালাহতে জড়ো হয়েছে। লোকজন পানি ও খাবারের জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে।

 

যুদ্ধবিরতির পর কোনো খাদ্য বিতরণ কেন্দ্র চালু হয়নি। হাসপাতালে সরঞ্জাম না থাকায় সেবা নিতে পারছে না লোকজন। স্বাস্থ্য পরিষেবা পুরোপুরি ভেঙে পড়েছে।

এদিকে হামাসের ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত খান ইউনিস, জাবালিয়া ও শুজাইয়ায় এখনো লোকজন অবস্থান করছে। তাই ইসরায়েলি অভিযানে এসব এলাকায় ব্যাপক হতাহতের আশঙ্কা করা হচ্ছে। এসব এলাকায় খাবার ও পানি ফুরিয়ে এসেছে।

পাঁচ সন্তানের মা নেভেন হাসান বলেন, ‘আমরা দিনে এক বেলা খাই। বেশির ভাগ সময় রুটির ছোট টুকরা এবং টিনজাত মটরশুঁটি খাই। আমার সন্তানরা অপরিষ্কার পানি পান করছে। তারা অসুস্থ হয়ে পড়েছে।’ সূত্র : বিবিসি, আলজাজিরা, এএফপি

এ বিভাগের অন্যান্য