মাধবপুরে পুলিশে মামলার ভয় দেখিয়ে টাকা আদায়

সিলেটের সময় ডেস্ক :

 

হবিগঞ্জের মাধবপুরে এক সেলুন কর্মচারীকে রাস্তা থেকে জোরপূর্বক ধরে থানায় এনে মাদক মামলায় ফাঁসানোর ভয় দেখিয়ে ৫০ হাজার টাকা আদায়ের অভিযোগ ওঠেছে এক এসআই এর বিরুদ্ধে।

এ ঘটনার প্রতিকার চেয়ে পুলিশ সুপারের কাছে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী লস্কর আলী।তিনি ঢাকায় সেলুন কর্মচারী হিসাবে কাজ করেন।কিছুদিন আগে স্ত্রীর সিজারিয়ান অপারেশন করানোর প্রয়োজনে বাড়ি এসেছেন। অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ২৫ নভেম্বর রাত সাড়ে ১১ টায় মাধবপুর উপজেলার জগদীশপুর ইউনিয়নের দক্ষিন বেজুড়ার লস্কর আলী নামে এক ব্যক্তি নতুন বাড়ি থেকে পুরাতন বাড়িতে যাওয়ার সময় পথিমধ্যে তার বন্ধু একই গ্রামের শাহীন মিয়ার সাথে দেখা হয়।দুই বন্ধুর আলাপের মধ্যেই হঠাৎ মাধবপুর থানার একটি পুলিশ ভ্যান এসে থামে।

ভ্যান থেকে নেমে এসআই আবু রায়হান দেশের অবস্থা ভালো নয় জানিয়ে এতো রাতে তারা রাস্তায় কি করছে জানতে চান।এসময় লস্কর আলী জানান, নিজের গ্রামে বন্ধুর সাথে কথা বলার সাথে দেশের অবস্থার সম্পর্ক কি? ক্ষিপ্ত হয়ে এসআই আবু রায়হান অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ শুরু করেন।এসময় সাথে থাকা ভ্যানচালক কনস্টেবল মোঃ আলমগীর দুজনের দেহ তল্লাশী শুরু করে পকেটে থাকা সাড়ে ২১ হাজার টাকা কেড়ে নিয়ে এসআই আবু রায়হানের হাতে দেন।এসআই রায়হান লস্কর আলী ও শাহীন মিয়াকে জোরপূর্বক টেনেহিঁচড়ে ভ্যানে তুলে থানায় নিয়ে যান।

তাদের মোবাইল কেড়ে নেন।থানায় নেওয়ার পর হেরোইন ও গাঁজার মামলায় কোর্টে চালান করার ভয় দেখিয়ে ৫ লাখ টাকা দাবি করেন রায়হান।চাহিদামতো টাকা দিলে তাদের ‘নরমাল’ মামলায় পুলিশ ফরোয়ার্ডিং দিয়ে কোর্টে চালান দেওয়ার আশ্বাস দেন রায়হান। এতো টাকা দেওয়ার ক্ষমতা তাদের নেই জানালে শেষ পর্যন্ত ৫০ হাজার টাকায় নামেন এসআই আবু রায়হান।পরদিন (২৬ নভেম্বর) সকালে লস্কর আলীর ভাই শওকত মিয়া একই গ্রামের বাসিন্দা অলিদ মিয়াকে ঘটনা জানালে অলিদ মিয়া এসআই রায়হানের সাথে কথা বলে ৫০ হাজার টাকা দিতে হবে বলে জানান।উপায়ান্তর না দেখে ধারদেনা করে ৫০ হাজার টাকা অলিদ মিয়ার হাতে তুলে দেন লস্কর আলীর ভাই শওকত মিয়া।

ওইদিন (২৬ নভেম্বর) লস্কর আলী ও শাহীন মিয়াকে ১৫১ ধারায় কোর্টে চালান করে পুলিশ।ওইদিনই জামিন হয় তাদের। জামিন পাওয়ার পরদিন (২৭ নভেম্বর) ঘটনা উল্লেখ করে এসআই রায়হানের এমন কর্মকান্ডের প্রতিকার চেয়ে হবিগঞ্জের পুলিশ সুপারের কাছে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী লস্কর আলী।

অলিদ মিয়া জানান,’ লস্কর আলীকে থানা থেকে ছাড়িয়ে আনার বিষয়ে কারো সাথে আমার কোনো কথা হয়নি।এরকম কিছুই আমি জানি না।’এ ব্যাপারে মাধবপুর থানার এসআই আবু রায়হান জানান, ‘আমি লস্কর আলী ও অপর একজনকে বেজুড়া থেকে থানায় এনেছি ঠিকই।তবে মামলার ভয় দেখিয়ে টাকা আদায়ের অভিযোগ সঠিক নয়। ওসি রকিবুল ইসলাম খান জানান, ‘ এ রকম কিছু আমার জানা নেই তবে কেউ যদি কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ দিয়ে থাকে তাহলে কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনে তদন্ত করে দেখবেন।’ ফোন রিসিভ না করায় হবিগঞ্জের পুলিশ সুপার এস এম মুরাদ আলীর বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

এ বিভাগের অন্যান্য