ঢাকা মহানগরসহ দেশব্যাপী বিএনপির মিছিল বুধবার
সিলেটের সময় ডেস্ক :
ঢাকা মহানগরসহ দেশব্যাপী সব জেলা ও মহানগরে মুখে কালো কাপড় বেঁধে কালো ব্যানারসহ বুধবার মিছিল করবে বিএনপি। গুমের শিকার ব্যক্তিদের স্মরণে আন্তর্জাতিক দিবস উপলক্ষে এ কর্মসূচি পালন করবে দলটি।
মঙ্গলবার বিকালে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
রিজভী অভিযোগ করেন, ইতোমধ্যে প্রায় ৬ শতাধিক মানুষ গুমের শিকার হয়েছেন। এদের মধ্যে আছেন জনপ্রতিনিধি, তরুণ, যুবক, ছাত্র, সাংবাদিক ও অধিকার গ্রুপের লোকজন। গুম হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে প্রায় ১০০ জনের মতো মানুষের লাশ উদ্ধার হয়েছে এবং বহুদিন পর অনেককে গ্রেফতার দেখানো হয়। এদের মধ্যে কেউ কেউ দীর্ঘদিন পর ফেরত এসেছেন। এখনো অসংখ্য গুম হওয়া ব্যক্তির সন্ধান মেলেনি। এক্ষেত্রে প্রায় সবার দাবি, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়েই তাদের তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। গুম হওয়া অনেককেই নিজ বাসায় পরিবারের সদস্যদের সামনে থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে, অথবা আশপাশের পাড়া-প্রতিবেশী বা দোকানপাটে দাঁড়ানো লোকজন স্বচক্ষে দেখেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর লোকজনদেরই তুলে নিয়ে যেতে। গুমের মতো ঘটনা মানবতার শত্রুদের দিয়েই করা সম্ভব।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনা (প্রধানমন্ত্রী) রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করার জন্য ক্ষমতাসীন হওয়ার পর থেকে গুমের সংস্কৃতি চালু করেছে। এক্ষেত্রে তিনি আর কতদূর অগ্রসর হবেন সেটি নিয়ে গোটা জাতি শঙ্কিত। নিশিরাতের সরকারের গণতন্ত্রের প্রতি শ্রদ্ধাহীন স্পর্ধার পরিণতিই হচ্ছে জোরপূর্বক গুম।
রিজভী বলেন, আন্তর্জাতিক চাপ থাকলেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে দিয়ে অবৈধ সরকার গুমের মতো মনুষ্যত্বহীন কাজ এখনো অব্যাহত রেখেছে। যে সরকার নিজ জাতিসত্তার সীমানায় বিভাজনের বীজ বপন করে তারা যে নির্দয় মনোবৃত্তি নিয়ে চালিত হয়ে মনুষ্যত্বহীন কাজ করবে, এটাই স্বাভাবিক। ছাত্র-যুবকদের তুলে নিয়ে যাওয়ার পর অস্বীকার করাটা এখন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর রুটিনওয়ার্কে পরিণত হয়েছে। গুমের শিকার ব্যক্তিদের তাদের পরিবারের কাছে আজও ফিরিয়ে দেওয়া হয়নি। প্রধানমন্ত্রী ইন্সট্যান্ট কান্নায় পারদর্শী, কিন্তু গুম হওয়া স্বজনদের কান্না দেখে তার মন গলে না। গুম দিবসে গুম হওয়া ব্যক্তিদের অবিলম্বে তাদের পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে সারা দেশে আওয়ামী লীগ ও পুলিশ বাহিনীর হামলা, মামলা ও গ্রেফতারের চিত্র তুলে ধরে রিজভী বলেন, ২৮ জুলাই থেকে এ পর্যন্ত সারা দেশে দলীয় নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে ৩২৭টি, যেখানে আসামি ১৩ হাজার ৪৩০ জন। গ্রেফতার করা হয়েছে ১ হাজার ৬২০ জনকে।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা খায়রুল কবির খোকন, আব্দুস সালাম আজাদ, মীর সরফত আলী সপু, সেলিমুজ্জামান সেলিম, মুনীর হোসেন, আমিনুল ইসলাম প্রমুখ।